ইরাকে রাজনীতি ছাড়ছেন শিয়া নেতা মুক্তাদা আল-সদর

ইরাকে সরকার গঠন নিয়ে দীর্ঘ সংকটের কেন্দ্রে থাকা এই নেতা টুইটারে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি তার সব সংগঠনও বন্ধ ঘোষণা করেছেন।

রয়টার্স
Published : 29 August 2022, 03:52 PM
Updated : 29 August 2022, 03:52 PM

ইরাকের প্রভাবশালী শিয়া মুসলিম নেতা মুক্তাদা আল-সদর রাজনীতি ছেড়ে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

সরকার গঠন নিয়ে দীর্ঘ সংকটের কেন্দ্রে থাকা এই নেতা সোমবার টুইটারে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি তার সব দলীয় কার্যালয় এবং সংগঠন বন্ধ ঘোষণা করেছেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় সদরের ক্ষুব্ধ অনুসারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এতে বছরের পর বছর ধরে ঘোর রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত ইরাকে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে ইরাকের সেনাবাহিনী রাজধানীজুড়ে সন্ধ্যা ৭ টা থেকে কারফিউ জারির ঘোষণা দিয়েছে এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠক স্থগিত করেছেন।

মুক্তাদা আল-সদর ও তার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল উভয়েরই সরকার গঠনের চেষ্টা বিফলে যাওয়ায় গতবছর জুড়ে ইরাকে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজ করেছে।

সদরের শত শত সমর্থক কয়েক সপ্তাহ ধরে পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান নিয়ে আছে এবং দুবার পার্লামান্টে ঢুকে রাজনৈতিক অচলাবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভও করেছে।

সোমবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদের গ্রিন জোনের ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরের বেষ্টনি এবং প্রবেশদ্বার ভেঙে ভেতরে ঢুকছে। অনেককে প্রাসাদের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতেও দেখা গেছে।

মুক্তাদা আল সদরের রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা অবশ্য এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৩ এবং ২০১৪ সালেও তিনি একইরকম ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে এবারে তার ঘোষণা অস্থিরতা আরও অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।

মুক্তাদা আল-সদর এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আর এখন আমি রাজনীতি থেকে পুরোপুরি অবসরে যাওয়া এবং আমার সব সংগঠন বন্ধের ঘোষণা দিচ্ছি।” তবে আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে বলে জানান তিনি।

গতবছর অক্টোবরের সাধারণ নির্বাচনে মুক্তাদা আল সদরের রাজনৈতিক জোট বেশিরভাগ আসনে জয়লাভ করেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে ইরানপন্থি শিয়া প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের জেরে সদরের এমপি’রা পদত্যাগ করলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

৪৮ বছর বয়স্ক সদর ইরাকের রাজনীতি এবং জনজীবনে গত দুইদশক ধরে প্রভাবশালী একজন বক্তিত্ব। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী ইরাকে আগ্রাসন চালানোর পর সদরের নেতৃত্বাধীন শক্তিশালী মিলিশিয়া বাহিনী মেহদি আর্মি মার্কিন ও ইরাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালিয়েছিল।