দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম কোনও রাজ্যে কট্টর-ডান এএফডি সবচেয়ে বড় দল হয়েছে। তবে তাদেরকে সমর্থন না দিতে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর।
Published : 02 Sep 2024, 10:40 PM
পূর্ব জার্মানির টুরিঙ্গিয়া রাজ্যে রোববারের নির্বাচনে বড় ধরনের জয় পেয়ে এক নম্বর দল হয়েছে কট্টর-ডানপন্থি অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি)।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম জার্মানির কোনও রাজ্যে কট্টর-ডানপন্থিরা সবচেয়ে বড় দল হল। তবে তাদেরকে রুখে দাঁড়াতে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।
সোমবার এএফডিকে সমর্থন না দেওয়া এবং তাদেরকে সরকার গঠন করতে না দেওয়ার জন্য অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানান শলৎস। এএফডি’র বিরুদ্ধে সুরক্ষাকবচ গড়ার ডাক দেন তিনি।
নির্বাচনের ফলকে ‘তিক্ত’ এবং ‘উদ্বেগজনক’ আখ্যা দিয়ে শলৎস বলেন, “ডানপন্থি উগ্রবাদীদেরকে ছাড়াই এখন সব গণতন্ত্রপন্থি দলকে একটি স্থিতিশীল সরকার গড়ার ডাক দেওয়া হচ্ছে।”
নির্বাচনে এএফডি কেবল যে, টুরিঙ্গিয়া রাজ্যে এক নম্বর দল হয়েছে তাই নয়, স্যাক্সনি রাজ্যে তারা দুই নম্বর দলও হয়েছে। টুরিঙ্গিয়াতে দলটি পেয়েছে ৩৩ শতাংশ ভোট। আর স্য়াক্সনিতে তারা পেয়েছে ৩০ শতাংশ ভোট।
রোববার সন্ধ্যায় ফল প্রকাশের পরই এএফডি-র নেতা টিনো কুপালা বলেছেন, ''একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে। ভোটদাতারা নীতির পরিবর্তন চাইছে। তারা আমাদেরকে টুরিঙ্গিয়াতে শাসন করার রায় দিয়েছে।''
এএফডি’র কো-লিডার অ্যালিসও বলেছেন, টুরিঙ্গিয়া এবং স্যাক্সনি দুই রাজ্যর মানুষই তার দলকে শাসন করার “খুবই স্পষ্ট রায় দিয়েছে।”
এএফডি-র প্রধান দাবি হচ্ছে, ''আভিবাসন নীতি বদলাতে হবে এবং শরণার্থীদের জার্মানি থেকে বের করে দিতে হবে।'' তাই রাজ্য নির্বাচনে এএফডি’র দুটো রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়ার পূর্বাভাসে অভিবাসীরা ছিল উদ্বিগ্ন।
যদিও এখন নির্বাচনে সাফল্য পাওয়ার পরও এএফডি-কে বিরোধীপক্ষ হয়ে থাকতে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, বাকি দলগুলো এরই মধ্যে বলতে শুরু করেছে, তারা এএফডি-র সঙ্গে হাত মেলাবে না।
তবে হাল ছাড়তে রাজি নয় এএফডি। টুরিঙ্গিয়াতে দলটির চেয়ারম্যান বিয়র্ন হখে বলেছেন, ''আমরা টুরিঙ্গিয়ায় এক নম্বর দল। আমরা অন্যদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করব।''
দুই রাজ্যে এএফডি যদি সরকারে যেতে নাও পারে তারপরও তাদের যথেষ্ট প্রভাব থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। দুই রাজ্যেই যে সব সিদ্ধান্ত দুই তৃতীয়াংশ ভোটে নিতে হবে, সেগুলো প্রভাবিত করার ক্ষমতা দলটির থাকবে।
সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসাবে এএফডি রাজ্যের পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এ পদের ক্ষমতা অনেক বেশি। প্রেসিডেন্টই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান নিয়োগ করেন এবং তাকে বরখাস্তও করতে পারেন।
তিনি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও সরিয়ে দেয়ার ক্ষমতাও রাখেন। তিনি কোনও পাস হওয়া বিল সই করতে অস্বীকারও করতে পারেন।
সূত্র: বিবিসি।