আইএমএফের ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড় করতে অন্য দাতাদের সঙ্গেও একই চুক্তিতে যাওয়ার চেষ্টা করছে শ্রীলঙ্কা।
Published : 14 Oct 2023, 01:28 PM
অর্থনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে থাকা শ্রীলঙ্কা ৪২০ কোটি ডলারের ঋণ পুনর্গঠনে চীনের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বেইলআউট প্যাকেজের পরবর্তী কিস্তি ছাড় করতে অন্যান্য দাতাদের সঙ্গেও একই ধরনের চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে দ্বীপ দেশটি।
কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খাবার সংকটের পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের মে মাসে নিজেদের ঋণ খেলাপি ঘোষণা করে দেশটির সরকার। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতি আর দ্রব্যমূলের উর্ধ্বগতির কারণে দেশজুড়ে বিক্ষোভে সরকারের পতন হয়। অবস্থার উত্তরণে তখন থেকে আইএমএফের ঋণ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল নতুন সরকার।
এক বিবৃতিতে শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, “আমাদের দেশের ঋণ পরিস্থিতির সমাধানে সহায়তার জন্য চীনের এক্সিম ব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে চলমান চেষ্টায় এই চুক্তি মূল ভূমিকা পালন করবে।”
বিবিসি জানিয়েছে, চুক্তির শর্তের ব্যাপারে বিস্তারিত প্রকাশ করেনি শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয়।
শ্রীলঙ্কার মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ৬৯০ কোটি ডলার, যার ৫২ শতাংশই চীনের কাছ থেকে নেওয়া। আইএমএফ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজ পাওয়ার শর্ত হিসেবে এসব দাতাদের সঙ্গে ঋণ পুনর্গঠনের চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে শ্রীলঙ্কার সরকারকে। আর দেশটির সবথেকে বড় ঋণদাতা দেশ চীনের সঙ্গে সেই চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হল।
আইএমএফের এ ঋণ প্যাকেজের পরবর্তী কিস্তির ৩৩ কোটি ডলার আটকে আছে গত মাস থেকে। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাটির সঙ্গে সেসময় ঋণের শর্তাবলী নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় শ্রীলঙ্কার সরকার।
এ সপ্তাহে মরক্কোর মারাকেচ শহরে আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংকের বার্ষিক বৈঠক হবে। তখন অন্যান্য ঋণদাতাদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারবে বলে আশা করছে দেশটির সরকার। তবে ঋণ দাতাদের সঙ্গে সেই সমঝোতায় আসার ক্ষেত্রে জটিলতার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
কলম্বোভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অ্যাডভোকাটার ধননাথ ফার্নান্দোর মতে, চীন ঋণের বিশেষ শর্তাবলী নিয়ে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সমঝোতায় গেছে। চীন অগ্রাধিকারমূলক এই সুবিধা পেলে অন্য পাওনাদারের ঋণের বোঝা বহন করতে হতে পারে।
ভারত, জাপান ও ফ্রান্স বলছে, এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার চুক্তির বিষয়টি তারা জানে না। আর ঋণ পুনর্গঠনে চীনের মত একই শর্তের কথা তারাও বলেছে।
বিস্তারিত না জানিয়ে চীন এই ধরনের গোপন চুক্তি করে। তবে শ্রীলঙ্কা বলছে, সব দাতাদের সমানভাবে মূল্যায়ন করা হবে। দাতাদের বকেয়া ঋণ ৩০ শতাংশ কমানোর অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।
এ বছরের শুরুতে আইএমএফ থেকে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণের বিষয়টি নিশ্চিত করে কলম্বো। আর গত বছর ৬০ কোটি ডলার ঋণ দিতে রাজি হয় বিশ্ব ব্যাংক।