চাঁদের দূরবর্তী পিঠে এটি চীনের দ্বিতীয় সফল মিশন। চাঁদের অপরদিকের এই পাশটিতে আর কোনো দেশ পৌঁছতে পারেনি।
Published : 02 Jun 2024, 12:52 PM
চাঁদের পেছনের দিকের পৃষ্ঠে চীনের একটি মানুষবিহীন মহাকাশযান রোববার সফলভাবে অবতরণ করেছে।
চাঁদের যে পিঠ পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে তার বিপরীত পাশের অন্ধকার গোলার্ধ থেকে শিলা ও মাটির নমুনা প্রথমবারের মতো পৃথিবীতে নিয়ে আসাই এই ঐতিহাসিক মিশনের অংশ বলে জানিয়েছে চীনের মহাকাশ সংস্থা।
চাঁদে মহাকাশযানের এ অবতরণ বিশ্বে চীনের মহাকাশ শক্তির মর্যাদাকে সমুন্নত করেছে বলে মত রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ আগামী এক দশকের মধ্যে চাঁদে দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশচারী মিশন ও ঘাঁটি গড়ে টিকে থাকতে সেখানকার খনিজগুলোকে কাজে লাগানোর আশা করছে।
চীনের জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন জানিয়েছে, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নিজস্ব লঞ্চার দিয়ে সজ্জিত চ্যাংই-৬ বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ২৩ মিনিটে (২২২৩ জিএমটি) চাঁদের মহাকাশমুখী পার্শ্বের দক্ষিণ মেরু-এইটকেন বেসিন নামের বিশাল খাদে অবতরণ করে।
এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, “এই মিশনে বহু ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্ভাবন ব্যবহার করা হয়েছে, এতে উচ্চ ঝুঁকির পাশাপাশি কঠিন সব সমস্যাও রয়েছে। চ্যাংইতে যে যন্ত্রপাতিগুলো আছে সেগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করবে ও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান মিশন পরিচালনা করবে।”
চাঁদের দূরবর্তী পিঠে এটি চীনের দ্বিতীয় সফল মিশন। চাঁদের অপরদিকের এই পাশটিতে আর কোনো দেশ পৌঁছতে পারেনি। গভীর ও অন্ধকার সব খাদ দিয়ে ভরা চাঁদের এই পাশটি চিরকাল পৃথিবীর বিপরীত দিকে মুখ করে আছে, এ কারণে এখান থেকে যোগাযোগ ও এখানে রোবটিক অবতরণ অভিযান চালানো আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং।
৩ মে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ হাইনানের ওয়ানচাং কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে চ্যাংই-৬ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। প্রায় এক সপ্তাহ পর এটি চাঁদে কাছাকাছি পৌঁছে এর কক্ষপথে অবস্থান নেয় এবং অবতরণের প্রস্তুতি শুরু করে।
চ্যাংই-৬ এর অবতরণ যান দুই দিনে চাঁদের পিঠ থেকে দুই কেজি উপাদান সংগ্রহ করে সেগুলো পৃথিবীতে নিয়ে আসবে। চাঁদের কক্ষপথে থাকা আরেকটি মহাকাশযান সেখান থেকে রওনা হয়ে ২৫ জুন নাগাদ চীনের আন্তর্মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই নিয়ে চলতি বছর তৃতীয় মহাকাশযান চাঁদের পিঠে অবতরণ করল। জানুয়ারিতে জাপানের স্লিম ল্যান্ডার ও পরের মাসে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি ল্যান্ডার সেখানে অবতরণ করেছিল। পৃথিবীর নিকটতম এই প্রতিবেশীতে আর যে দু’টি দেশ চন্দ্রযান পাঠিয়েছে তারা হল সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারত। তবে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশচারীরাই এ পর্যন্ত চাঁদের পিঠে অবতরণ করেছে।