ইউক্রেইনের বিদ্যুৎ গ্রিডে আক্রমণ ড্রোন হামলার জবাব: পুতিন

প্রতিবেশী দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করার পর ২৫০তম দিবসে ইউক্রেইনজুড়ে বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2022, 08:33 AM
Updated : 1 Nov 2022, 08:33 AM

রাশিয়া ইউক্রেইনের বিভিন্ন অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছে এবং কৃষ্ণ সাগরের বন্দর দিয়ে শস্য রপ্তানি চুক্তিতে অংশগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেছে ক্রাইমিয়ায় মস্কোর নৌবহরে ড্রোন হামলার জবাবে, বলেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

কৃষ্ণসাগরীয় নৌবহরে ওই হামলার জন্য ইউক্রেইনকে দায়ী করে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, জাতিসংঘের উদ্যোগে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী ইউক্রেইনের শস্যবাহী জাহাজগুলো কৃষ্ণসাগরের যে করিডোর ধরে যাতায়াত করে, কিইভের হামলাকারী ড্রোনগুলো সে পথই ব্যবহার করেছে।  

কিইভ ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি, শস্য রপ্তানি চুক্তি অনুযায়ী ঘোষিত কৃষ্ণ সাগরের নিরাপত্তা করিডোরকে সামরিক কাজে ব্যবহারের অভিযোগও অস্বীকার করেছে তারা, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

জাতিসংঘ বলেছে, শনিবার রাশিয়া যখন ক্রাইমিয়ায় তাদের নৌযানে হামলার কথা জানায়, তখন কোনো শস্যবাহী জাহাজ কৃষ্ণ সাগরের ওই করিডোর ব্যবহার করেনি।

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেইনে তাদের কথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে। ওই অভিযান শুরু হওয়ার পর ২৫০তম দিবসে (সোমবার) ইউক্রেইনজুড়ে বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভেও একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়, এরপর কালো ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে যায় বল জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।    

ফেইসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউক্রেইনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানিয়েছে, সোমবার রুশ বাহিনী ইউক্রেইনের অন্তত ছয়টি অঞ্চলের অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে।

ইউক্রেইনের কর্মকর্তারা বলেছেন, এবারের রুশ হামলায় জলবিদ্যুৎ বাঁধসহ বৈদ্যুতিক নানান স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাপ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনাও নষ্ট হয়ে পড়েছে। 

উত্তরপূর্বের খারকিভ অঞ্চলের গভর্নর ওলে সিনেহুবভ টেলিগ্রামে বলেছেন, ইউক্রেইনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দাসহ পুরো অঞ্চলের এক লাখ ৪০ হাজারের মতো মানুষ এখন বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন।

ইউক্রেইনের সেনাবাহিনী বলছে, তারা রাশিয়ার ছোড়া ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৪৪টিই গুলি করে ভূপাতিত করতে সমর্থ হয়েছে।

কিন্তু তারপরও এ হামলায় কিইভের ৮০ শতাংশ এলাকায় পানি সরবরাহে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ইউক্রেইন পুলিশ জানিয়েছে, রাশিয়ার সর্বশেষ এ হামলায় ১৩ জন আহত হয়েছে।

এরমধ্যেই আরও হামলার ইঙ্গিত দিয়ে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেছেন, “আমরা যা পারি, তার সব শেষ হয়নি।”

গত তিন সপ্তাহ ধরে রাশিয়া ইউক্রেইনের বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনায় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও ইরানের তৈরি ‘আত্মঘাতী ড্রোন’ দিয়ে হামলা চালাচ্ছে। লক্ষ্যে উড়ে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম সস্তা এসব ‘আত্মঘাতী ড্রোন’কে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে ‘কামিজাকে ড্রোন’ বলা হচ্ছে।

ইউক্রেইনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মেইহল বলেছেন, সোমবার রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেইনের ১০টি অঞ্চলের ১৮টি লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে, এসব ‘টার্গেটের’ বেশিরভাগই ছিল বৈদ্যুতিক অবকাঠামো। 

আরও পড়ুন:

Also Read: কৃষ্ণ সাগরের করিডোর দিয়ে জাহাজ চলাচল অগ্রহণযোগ্য: রাশিয়া