আইএস একসময় উত্তর-পূর্ব সিরিয়া থেকে শুরু করে ইরাকের উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত ৮৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে নিয়েছিল, এবং প্রায় ৮০ লাখ মানুষের ওপর তাদের নৃশংস শাসন চাপিয়ে দিয়েছিল।
Published : 15 Mar 2025, 03:00 PM
ইরাক ও সিরিয়ায় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জ্যেষ্ঠ নেতা আবদাল্লাহ মাক্কি মুসলিহ আল-রিফাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানিও এ খবর নিশ্চিত করেছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
অনেকের কাছে আবু খাদিজা নামে পরিচিত আইএস নেতা আল-রিফা যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী ও ইরাকি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের এক অভিযানে নিহত হয়েছে, বলেছেন সুদানি।
আল-রিফাকে ‘ইরাক ও পুরো বিশ্বের জন্যই অন্যতম বিপজ্জনক সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া একটি ভিডিওতে ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলীয় আল-আনবার প্রদেশে বৃহস্পতিবারের হামলার দৃশ্য দেখানো হয়েছে।
আল-রিফা আইএসের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থার প্রধান ছিলেন এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির বিশ্বজুড়ে চালানো অভিযান, পরিকল্পনা ও রসদ-সরঞ্জামের দায়িত্বে ছিলেন; তিনি সংগঠনের অর্থ ব্যবস্থাপনার কাজও সামলাতেন, বলেছে সেন্টকম।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, “ইরাকি সরকার ও কুর্দি আঞ্চলিক সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে তার (আল-রিফা) ঘৃণিত জীবন শেষ করা হয়েছে, সঙ্গে নিহত হয়েছে আরও এক আইএস সদস্য। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে শান্তি।”
আল-রিফা ও অন্য যে আইএস সদস্যকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, তাদের দুজনের দেহেই অবিস্ফোরিত আত্মঘাতী বোমা ও একাধিক পাওয়া গেছে, জানিয়েছে সেন্টকম।
এর আগে একটি অভিযান থেকে সংগ্রহ করা ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলিয়েই আল-রিফার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। ওই অভিযানে আল-রিফা ‘অল্পের জন্য’ পালিয়ে যান।
“আবু খাদিজা ছিলেন গোটা আইএসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আমাদের দেশ, মিত্র ও অংশীদারদের জন্য হুমকিস্বরূপ এমন সন্ত্রাসীদের হত্যা ও তাদের সংঠন ধ্বংসের কাজ অব্যাহত রাখব আমরা,” বলেছেন সেন্টকমের কমান্ডার জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলা।
আইএস একসময় উত্তর-পূর্ব সিরিয়া থেকে শুরু করে ইরাকের উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত ৮৮ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে নিয়েছিল, এবং প্রায় ৮০ লাখ মানুষের ওপর তাদের নৃশংস শাসন চাপিয়ে দিয়েছিল।
ইরাক ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আইএস-এর পরাজয় ঘোষণা করে। জঙ্গি এ গোষ্ঠীটি ২০১৯ সালে ইরাকে তাদের দখলে থাকা সর্বশেষ ভূখন্ড থেকেও উৎখাত হয়।
এরপরও মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে আইএসের সশস্ত্র সদস্য ও স্লিপার সেল সক্রিয় রয়েছে; গোষ্ঠীটিকে প্রায়ই ইরাকের সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষিপ্ত হামলা চালাতেও দেখা যায়।