ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার উত্তরাংশের অনেক এলাকায় ইন্টারনেট ও ফোন পরিষেবা ফের বন্ধ হয়ে গেছে।
Published : 30 Oct 2023, 11:47 AM
গাজার উত্তরাংশের বাসিন্দা ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, সোমবার প্রথম কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েল তীব্র গোলা ও বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা ট্যাংকের ছত্রছায়ায় ভূখণ্ডটিতে স্থল অভিযান জোরদার করার মধ্যেই এসব হামলা চালানো হয়।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমানগুলো গাজা নগরীর শিফা ও আল কুদস হাসপাতালের নিকটবর্তী এলাকাগুলোতে হামলা চালিয়েছে আর দক্ষিণে খান ইউনুস শহরের পূর্বদিকের সীমান্ত এলাকায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।
সোমবার দুপুর ও ভোররাতের এসব হামলা নিয়ে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস বা ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী কোনো মন্তব্য করেনি, রয়টার্সও ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলো নিশ্চিত করতে পারেনি।
শুক্রবার ইসরায়েল সরকার সেনাদের গাজার পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে ভূখণ্ডটিতে অনুপ্রবেশ করে স্থল অভিযান বিস্তৃত করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর দুই দিন পর রোববার ফিলিস্তিনি ছিটমহলটির পশ্চিম উপকূল দিয়ে যুদ্ধ ট্যাংক প্রবেশ করার ছবি প্রকাশ করে ইসরায়েল। এতে গাজা নগরীকে ইসরায়েলি বাহিনী সবদিক থেকে ঘিরে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গাজার উত্তরাংশে তীব্র গোলা ও বিমান হামলা চালায় তারা।
অনলাইনে পোস্ট করা কিছু ছবিতে ইসরায়েলি সেনারা গাজার অনেক ভেতরে একটি ইসরায়েলি পতাকা দোলাচ্ছেন, এমন ধারণা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে।
ইরান-সমর্থিত ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের তিন সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধের স্বঘোষিত ‘দ্বিতীয় পর্ব’ অনেকটাই চোখের আড়ালে রাখা হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনারা বিদ্যুৎবিহীন গাজায় রাতের আঁধারে অগ্রসর হচ্ছে এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা অকার্যকর থাকায় ফিলিস্তিনিরাও বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন।
রোববার ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার উত্তরাংশের অনেক এলাকায় ইন্টারনেট ও ফোন পরিষেবা ফের বন্ধ হয়ে গেছে বলে টেলিকম কোম্পানি পালটেল জানিয়েছে। এসব এলাকায় হামাসের কমান্ড সেন্টার আছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
একইসঙ্গে বিদ্যুৎ, ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা না থাকায় ইসরায়েলের হামলার পর হতাহতদের উদ্ধার অভিযানে বিঘ্ন ঘটছে।
রোববার ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট জানায়, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের সতর্ক করে অবিলম্বে আল-কুদস হাসপাতাল খালি করে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। গাজা নগরীর এই হাসপাতালটিতে প্রায় ১৪০০০ ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়ে আছে। এরপর গভীর রাতে এই হাসপাতালের আশপাশে ইসরায়েল ব্যাপক হামলা চালিয়েছে বলে খবর আসে।
ইসরায়েল অভিযোগ করে বলেছে, হামাস গাজার হাসপাতালগুলোতে তাদের তাদের কমান্ড সেন্টার ও অন্যান্য সামরিক অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ হাজার মানুষ গাজার শিফা হাসপাতালে আশ্রয় নিয়ে আছে; তারা এই হাসপাতালকে দেওয়া ইসরায়েলের হুমকি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে আছে।
৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালানোর পর থেকে গাজায় কঠোর অবরোধ আরোপ করে তীব্র বোমা ও গোলা হামলা চালাচ্ছে ইহুদি রাষ্ট্রটি। এসব হামলায় সাত হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানে লক্ষ্য পূরণ হবে কি?