তাদের বাহিনীগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লক্ষ্যের ওপর হামলা চালিয়েছে, এমন অভিযোগ মস্কো প্রত্যাখ্যান করেছে।
Published : 12 Sep 2022, 09:59 AM
ইউক্রেইনীয় বাহিনীর আক্রমণে পিছু হটার পর রাশিয়া প্রতিশোধ নিতে বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেইন।
শনিবার যুদ্ধের অন্যতম প্রধান একটি ফ্রন্টলাইন থেকে পিছু হটতে হয়েছে রাশিয়াকে, ছেড়ে দিতে হয়েছে উত্তরপূর্ব খারকিভ অঞ্চলে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্গ ইজিয়ুমকে।
ইউক্রেইনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেসব লক্ষ্যে প্রতিশোধমূলক হামলাগুলো চালানো হয়েছে তারমধ্যে খারকিভের একটি পানি শোধনাগার ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে আর এর ফলে ব্যাপক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
রোববার রাতে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি টুইটারে লিখেছেন, “কোনো সামরিক স্থাপনায় নয়, এর লক্ষ্য হল লোকজনকে আলো ও তাপ থেকে বঞ্চিত করা।”
ইউক্রেইনে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ব্রিজেট বিঙ্কও হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
এক টুইটে তিনি লিখেছেন, “পূর্বে ইউক্রেইনের শহর ও গ্রাম মুক্ত করার ক্ষেত্রে রাশিয়ার আপাত প্রতিক্রিয়া হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো।”
তাদের বাহিনীগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লক্ষ্যের ওপর হামলা চালিয়েছে, এমন অভিযোগ মস্কো প্রত্যাখ্যান করেছে; জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার হামলার ফলে খারকিভ ও দোনেৎস্ক অঞ্চল পুরোপুরি এবং জাপোরিজিয়া,নিপ্রোপেত্রোভস্ক ও সুমাই অঞ্চল আংশিক বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে।
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় খারকিভ ও দোনেৎস্কের প্রায় ৯০ লাখ মানুষ সমস্যায় পড়ে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোইলাক বলেছেন, ইউক্রেইনের অন্যতম বৃহত্তম বিদ্যুৎ কেন্দ্র খারকিভের সিএইচপিপি-৫ এ হামলা হয়েছে।
টুইটারে তিনি লিখেছেন, “যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাদের নিজেদের বাহিনী পালিয়ে যাওয়ার পর এটি একটি ‘কাপুরুষোচিত’ প্রতিক্রিয়া।”
জেলেনস্কির দপ্তরের উপপ্রধান কিরিলো তিমোশেঙ্কো টেলিগ্রাম অ্যাপে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন জ্বলার একটি ছবি পোস্ট করেছেন কিন্তু কিছু অঞ্চলে বিদ্যুৎ ফিরেছে বলে জানিয়েছেন।
ইউক্রেইন সেনাবাহিনী এ মাসের শুরু থেকে গত ১০ দিনে দেশটির তিন হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা শত্রুর দখলমুক্ত করেছে বলে রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ভ্যালেরি জালুজনি।
রুশ বাহিনীর হাত থেকে খারকিভের উত্তরাঞ্চলের অনেকটাই দখলমুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ এবং পূর্ব দিকেও সেনারা অগ্রসর হচ্ছে বলে রোববার জানান জেনারেল জালুজনি।
রয়টার্স জানায়, একদিন আগেই ইজিয়ুম নগরীতে বড় ধরনের পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছে রুশ বাহিনীকে। ইউক্রেইনীয় বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে সেখানে হাজার হাজার রুশ সেনা তাদের গোলাবারুদ এবং সামরিক সরঞ্জাম পেছনে ফেলেই পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
দেশের উত্তরপূর্বের খারকিভ প্রদেশের অনেকাংশ দখলমুক্ত করায় সেনাদের প্রশংসা করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এ ঘটনাকে তিনি ছয়মাসের যুদ্ধে তার বাহিনীর সম্ভাব্য সাফল্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেছেন, যদি কিইভ আরো শক্তিশালী অস্ত্র পায় তবে এই শীতে ভূমি দখলমুক্ত করার গতি আরো বাড়বে।
আরও পড়ুন: