দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে এমনটাই বলেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
Published : 19 Apr 2025, 12:23 PM
হাজারো মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তায় মিয়ানমারের জান্তা ও তাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত প্রধান একটি বিরোধী গোষ্ঠী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
মিয়ানমারের বিবদমান দুই পক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক শেষে শুক্রবার তিনি এ কথা জানান।
২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কবলে পড়া মিয়ানমারে গত মাসের শেষ দিকে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভয়াবহ এক ভূমিকম্প আঘাত হানে।
এ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কেবল সরকারি হিসাবেই ৩ হাজার ৬০০ মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে; মান্দালয়, ইয়াংগন, সাগাইং, নেপিদোর অনেক এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে, দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সঙ্কট।
ত্রাণ কার্যক্রম বাড়াতে চলমান সংঘাতের মাত্রা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার বৃহস্পতিবার থেকে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইরত ছায়া ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন।
“যুদ্ধবিরতি থাকবে এবং কেউ কোনো অপ্রয়োজনীয় উস্কানি দেবে না, নাহলে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) ও এনইউজি-র সঙ্গে আমার প্রাথমিক আলোচনা খুবই সফল হয়েছে,” ব্যাংককে সাংবাদিকদের বলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
এসএসি নামেই মিয়ানমারে সরকার চালাচ্ছে সামরিক বাহিনী।
গৃহযুদ্ধে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, মিয়ানমারের অর্থনৈতিক অবস্থাও তথৈবচ। তার মধ্যে মার্চের ওই ভূমিকম্প। ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তায় এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে মিয়ানমারের জান্তা ও এনইউজি।
তবে এ যুদ্ধবিরতির মধ্যেও জান্তা কিছু এলাকায় বিমান হামলা ও অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে ভাষ্য জাতিসংঘ ও যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী কিছু সংস্থার।
এনইউজির সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে আনোয়ার বলেন, আসিয়ান মিয়ানমারের জান্তা ও বিরোধীদের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাবে ও যেসব এলাকায় দরকার, সেসব এলাকায় মানবিক সহায়তা পাঠানো হবে, তা সে এলাকা যার নিয়ন্ত্রণেই থাকুক না কেন।
“আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে আসিয়ান যে মিয়ানমারের পরিস্থিতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, তা আমরা বুঝি। তবে এর মাধ্যমে মিন অং হ্লাইং-এর নেতৃত্বাধীন সামরিক জান্তা যেন বৈধতা পেয়ে না যায়, তাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,” রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন এনইউজির এক মুখপাত্র।
আসিয়ানের এমন পদক্ষেপে থাইল্যান্ডের অকুণ্ঠ সমর্থন আছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিকোরন্দেজ বালানকুরা।
তিনি বলেন, মানবিক সহায়তা কার্যক্রম জোরদারে সংঘাত বন্ধ করা প্রয়োজন।
“মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এটি আসিয়ানের প্রথম ইতিবাচক পদক্ষেপ,” শুক্রবার সাংবাদিকদের এমনটাই বলেন বালানকুরা।