দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলা ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে গিয়েছিলেন। কঙ্গোতে ফিরে এখন তিনি এম-২৩ বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত গোমায় অবস্থান করছেন বলে খবর বেরিয়েছে।
Published : 20 Apr 2025, 08:22 PM
সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলার দল পিপলস পার্টি অব দ্য রিকনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (পিপিআরডি) সব ধরনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র।
কাবিলার সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম-২৩ এর যোগসাজশ রয়েছে, এই অভিযোগে তার দলের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
চলতি বছর এম-২৩ গোষ্ঠী কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের বিশাল এলাকা নিজেদের কব্জায় নিয়েছে।
দুই বছর আফ্রিকায় কাটিয়ে কাবিলা কঙ্গোতে ফিরেছেন এমন খবর চাউর হওয়ার পর পিপিআরডি-র ওপর এ নিষেধাজ্ঞা এল, বলছে বিবিসি।
কাবিলা এখন গোমায় অবস্থান করছেন বলে অনেকে বলাবলি করছেন। সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে এ বছরের জানুয়ারিতেই এম-২৩ বিদ্রোহীরা গোমা দখলে নেয়।
শনিবার কঙ্গোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এম-২৩ যে কঙ্গোর ভূখণ্ড দখলে নিয়েছে তা নিয়ে কাবিলার দলের ‘ধোঁয়াশামূলক মনোভাবের’ কারণে পিপিআরডির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কাবিলা গোমায় ফিরেছেন, যেখানে ‘শত্রুরা’ তারে সুরক্ষা দিচ্ছে, বলা হয়েছে এতে।
পিপিআরডির সেক্রেটারি ফার্ডিনান্ড কাম্বেরে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাদের দল নিষিদ্ধের ঘোষণা কঙ্গোর আইন ও সংবিধানের ‘সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’।
এর আগে শুক্রবার দেশটির সরকার ৫৩ বছর বয়সী কাবিলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে তার সব সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দেয়।
কাবিলা এর আগে তার সঙ্গে এম-২৩ বিদ্রোহীদের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তবে কঙ্গোর সরকারের এখনকার পদক্ষেপ, বা তিনি আদৌ গোমায় ফিরেছেন কিনা সে বিষয়ে তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে মন্তব্য চাইলে এম-২৩ এর মুখপাত্র কাবিলার গোমায় থাকার কথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটাই করেননি। বলেছেন, “তার এখানে থাকায় আমি কোনো সমস্যা দেখি না।”
জোসেফ কাবিলার বাবা লরেন্টও কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পরপরই তার ছেলে ক্ষমতায় বসে। সেসময় জোসেফ কাবিলার বয়স ছিল মাত্র ২৯।
এরপর টানা ১৮ বছর আফ্রিকার দেশটি শাসন করেন জোসেফ কাবিলা; ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হলেও তিনি পদ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। যার প্রতিক্রিয়ায় কঙ্গোজুড়ে দেখা যায় রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ।
২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর কাবিলা সরকারিভাবে জয়ী ফেলিক্স শিসেকেদির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। বিতর্কিত ওই নির্বাচনে আসলে মার্টিন ফায়ুলু বিজয়ী হয়েছিলেন বলে অনেকে দাবি করেন।
ফায়ুলু পরে অভিযোগ করে বলেন, তাকে ক্ষমতা থেকে বাইরে রাখতেই কাবিলা ও শিসেকেদির মধ্যে গোপন চুক্তি হয়, এবং তার ভিত্তিতেই শিসেকেদি প্রেসিডেন্ট হন।
কাবিলা ও শিসেকেদি দুজনই এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
পরে কঙ্গোর সাবেক-বর্তমান এই দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় এবং ২০২০ সালে দুজনের নেতৃত্বাধীন দলের জোট আনুষ্ঠানিক ভেঙে যায়।
এরপর `উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে’ কাবিলা ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যান।
লিংক হবে-
কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম শহর দখলের দাবি বিদ্রোহী জোটের
কঙ্গোতে সংঘর্ষে ৫ দিনেই অন্তত ৭০০ নিহত: জাতিসংঘ
গোমায় রুয়ান্ডাপন্থি বাহিনী ও কঙ্গো সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১৭
কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে ঢুকল এম২৩ বিদ্রোহীরা