তারা জানান, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা বা কোনো শীর্ষ কর্মকর্তাকে গুপ্তহত্যার লক্ষ্য ইসরায়েলের আছে বলে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
Published : 13 Oct 2024, 03:36 PM
ইরানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর সময় কোন কোন লক্ষ্যে আঘাত হানা হবে তার আওতা ইসরায়েল সীমিত করেছে বলে বিশ্বাস মার্কিন কর্মকর্তাদের।
এসব লক্ষ্যস্থলের মধ্যে ইরানের সামরিক ও জ্বালানি খাত ছিল বলে ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা জানান, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা বা কোনো শীর্ষ কর্মকর্তাকে গুপ্তহত্যার লক্ষ্য ইসরায়েলের আছে বলে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে কীভাবে এবং এখন এসব হামলা চালানো হবে, সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইসরায়েল এখনও নেয়নি বলে শনিবার দাবি করেছেন তারা।
ইরান ১ অক্টোবর ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েল এ হামলার কী প্রতিক্রিয়া করে তা দেখতে পুরো মধ্যপ্রাচ্য রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করে আছে। ইরান জানিয়েছে, লেবাননে ইসরায়েলের আক্রমণ এবং তাদের মিত্র হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়াকে তেহরানে ও হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে বৈরুতে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তারা।
ইরানের হামলায় ইসরায়েলের তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েল কখন প্রতিক্রিয়া জানাবে যুক্তরাষ্ট্র তা জানে না। কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আদেশ দেওয়া মাত্রই ইরানে হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে আছে।
কখন হামলা চালাবে ইসরায়েল তার সুনির্দিষ্ট টাইমলাইন তাদের সঙ্গে শেয়ার করেনি বলে মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন। তবে ইসরায়েরি কর্মকর্তারা কোনো একটি সময়ের বিষয়ে একমত হয়েছেন কিনা এটিও পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছেন তারা।
ওই কর্মকর্তারা জানান, প্রতিশোধমূলক হামলার বিষয়ে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও তথ্য শেয়ার করলেও অভিযানের গোপনীয়তা রক্ষায় তারা বিস্তারিত অনেক কিছু জানায়নি।
ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় তাৎক্ষণিভাবে ইরান কোনো পাল্টা হামলা চালালে তা থেকে নিজেদের মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থান ও স্থাপনাগুলো রক্ষায় প্রস্তুত হয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ইসরায়েলের ইরান অভিযানে তারা সরাসরি সামরিক সমর্থন জানাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন শুক্রবার রাতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তবে গ্যালান্ট মূল বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন কি না, তা পরিষ্কার হয়নি।
ইরানে প্রতিশোধমূল হামলা নিয়ে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হওয়ার পর অস্টিনকে ফোন দেন গ্যালান্ট। কিন্তু মন্ত্রিসভার বৈঠকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যস্থলগুলো নিয়ে যেসব আলোচনা হয়েছে গ্যালান্ট সেগুলো শেয়ার করেননি।
মার্কিন কর্মকর্তারা ধারাবাহিকভাবে ইসরায়েলের সরকারের প্রতি তাদের জবাব ‘সমানুপাতিক’ রাখার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তারা তেল, গ্যাস ও পারমাণবিক স্থাপনা এড়িয়ে শুধু সামরিক লক্ষ্যে আঘাত সীমাবদ্ধ রাখার জন্য বলছেন।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু টেলিফোনে কথা বললেও তারা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বাইডেন নেতানিয়াহুকে গাজা ও লেবাননের মানবিক পরিস্থিতির দিকে মনোযোগ দেওয়ার জন্য জোরালো আহ্বান এবং যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন। লেবাননের পর ইরানে আরেকটি যুদ্ধক্ষেত্রের জোরালো হুমকির বিষয়েও তিনি নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: