উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ইউক্রেইন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রতি ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানিয়ে মস্কোর সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
Published : 19 Jun 2024, 03:18 PM
উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের উপস্থিতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে।
পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া থাইদং নদী তীরবর্তী কিম ইল সং স্কয়ারে বুধবার পুতিনকে এক ঘণ্টা ধরে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এ সময় চত্বরটিতে সেনাবাহিনীর অশ্বরোহী সেনাদের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক জনতা উপস্থিত ছিল। শিশুরা বেলুন হাতে পুতিনকে স্বাগত জানায়, সেখানে চত্বরের মূল ভবনজুড়ে দুই দেশের পতাকার মাঝে শোভা পাচ্ছিল দুই নেতারা বিশাল দু’টি ছবি।
এখানে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর দুই নেতা শীর্ষ বৈঠকে মুখোমুখি হতে প্রেসিডেন্টের বাসভবন কুমুসুচান প্রাসাদে যান।
রাশিয়ার গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত ভিডিওর বরাত দিয়ে এসব কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পুতিন পিয়ংইয়ং পৌঁছান। এ সময় কিম বিমানবন্দরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে জড়িয়ে ধরে স্বাগত জানান। এখান থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে যাওয়ার সময় পুতিনের রাশিয়া নির্মিত অরাস লিমুজিনে বসে দুই নেতা নিজেদের ‘গভীর ভাবনাগুলো’ বিনিময় করেন বলে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ইউক্রেইন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রতি ‘পূর্ণ সমর্থন’ জানিয়েছেন এবং মস্কোর সঙ্গে শক্তিশালী কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
“রাশিয়ার নীতির জন্য আপনার ধারাবাহিক ও অটল সমর্থনকে আমরা অত্যন্ত প্রশংসা করি,” আলোচনার শুরুতে পুতিন এমনটি বলেছেন বলে তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আরআইএ।
পুতিন বলেছেন, মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
কিম বলেছেন, উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সম্পর্ক একটি ‘নতুন উচ্চ সমৃদ্ধির’ যুগে প্রবেশ করছে।
তিনি বলেন, “এখন বিশ্বের পরিস্থিতি ক্রমেই আরও জটিল হচ্ছে ও দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। এই রকম একটি পরিস্থিতিতে আমরা রাশিয়া, রাশিয়ার নেতৃত্বের সঙ্গে কৌশলগত যোগাযোগ আরও দৃঢ় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
“উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার সরকার, সেনাবাহিনী ও জনগণের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করছে, যারা সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা স্বার্থ ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষায় ইউক্রেইনে একটি বিশেষ সামরিক অভিযান চালাচ্ছে।”
২৪ বছরের মধ্যে পুতিন এই প্রথম উত্তর কোরিয়া সফরে গেলেন। উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়া, উভয়েই কূটনৈতিকভাবে বাকি বিশ্ব থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে, এ পরিস্থিতিতে পুতিনের এই সফরে দুই দেশের কয়েক দশকের সম্পর্ক নতুন আকার পেতে পারে।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের জন্য পুতিনের এই সফর গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। কারণ, রাজনৈতিকভাবে বাকি বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ায় ২০১৯ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর পর থেকে এ পর্যন্ত কোনও বিশ্ব নেতা ভ্রমণ করেননি।