পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ বেড়ে যাওয়া নিয়ে উত্তেজনার আবহে বেইজিং এই সতর্কবার্তা দিল।
Published : 10 Apr 2025, 08:52 PM
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের তীব্রতায় উত্তেজনা বাড়তে থাকার মধ্যে দেশটি ভ্রমণে চীন তাদের নাগরিকদেরকে সতর্ক করার পাশাপাশি পড়াশুনা করতে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদেরকেও নিরাপত্তার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে।
ভ্রমণ নির্দেশিকায় চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলেছে, “চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের অবনতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতিতে চীনা পর্যটকদেরকে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ঝুঁকি পরিপূর্ণভাবে মূল্যায়ন করা ও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
চীনের শিক্ষামন্ত্রণালয়ও যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়ার বিষয়ে চীনা শিক্ষার্থীদেরকে সতর্ক করে দিয়ে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাবিষয়ক বিনিমিয় ও সহযোগিতা কর্মসূচির ওপর সাম্প্রতিক একটি বিলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওহাইওর ডব্লিউসিএমএইচ টিভি’র প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই বিলে চীনের শিক্ষামূলক কিংবা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা কিংবা অংশীদারিত্ব চুক্তি নবায়ন করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যদি সেই প্রতিষ্ঠানগুলো আগে থেকেই উল্লেখযোগ্য নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে না থাকে।
তাছাড়া, চীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনও সংগঠন থেকে কোনও ধরনের উপহার, অবদান কিংবা অনুদান নেওয়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিলে।
চীনের শিক্ষামন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “সব শিক্ষার্থীরই উচিত ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট ওইসব রাজ্যে পড়তে যাওয়ার পরিকল্পনা করার সময় ভালভাবে নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি বিচার-বিবেচনা করে দেখা এবং পূর্বসতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে আরও বেশি সজাগ হওয়া।”
পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ বেড়েছে। বুধবার চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের জবাবে মার্কিন আমদানি পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় চীন।
চীন আগেই ট্রাম্পের শুল্ক তীরের কাছে মাথা নত না করে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এরপর থেকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ কেবলই তীব্র হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকেই চীনের পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরে তা আরও ৩৪ শতাংশ বাড়ান ট্রাম্প। পাল্টা মার্কিন পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দেয় চীন। পরে ট্রাম্প আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক বাড়ান চীনা পণ্যের উপর।
মোট শুল্ক বেড়ে হয় ১০৪ শতাংশ। ট্রাম্প ৫০ শতাংশ শুল্ক বাড়াতেই চীন ফের পাল্টা ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপায়। পরিস্থিতি দাঁড়ায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্ক বনাম চীনের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক।
দু’দেশের এই শুল্ক সংঘাতের মধ্যেই ট্রাম্প বুধবার চীনে শুল্ক আরও বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছেন। অন্যান্য দেশগুলোতে ট্রাম্প উচ্চহারের শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে আপাতত স্বস্তি দিলেও চীনের ক্ষেত্রে তা করেননি।