পোল্যান্ডে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে দু’জন নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও এর নেটো মিত্ররা ঘটনাটির তদন্ত করে দেখছে, কিন্তু রাশিয়া থেকে ছোড়া কোনো ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সম্ভবত এমনটি হয়নি, প্রাথমিক তথ্যে এমন ধারণাই পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি২০ সম্মেলনে জন্য জড়ো হওয়া বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে পোল্যান্ডের বিস্ফোরণ নিয়ে বুধবার এক জরুরি বৈঠকের পর বাইডেন একথা বলেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মঙ্গলবার ইউক্রেইন সীমান্তের কাছে নেটো সামরিক জোটভুক্ত পোল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রাম সেবোদুফে ক্ষেপণাস্ত্র পড়ে দুই জন নিহত হওয়ার পর উত্তেজনা তৈরি হয়, ইউক্রেইন যুদ্ধ দেশটির সীমান্ত পেরিয়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দেয়।
ইউক্রেইন ও পোল্যান্ডের কর্তৃপক্ষগুলো বলেছিল, যে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছে সেটি রাশিয়ার তৈরি।
রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছে, এখনই এটা বলা ঠিক হবে কিনা এমন প্রশ্নে বাইডেন বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রটির গতিপথ অন্যকিছুর ধারণা দিচ্ছে।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “প্রাথমিক যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা এর বিপরীত। আমরা তদন্ত শেষ না করা পর্যন্ত এটি আমি বলতে চাই না কিন্তু এটি সম্ভবতব রাশিয়া থেকে ছোড়া হয়নি, তবে আমরা দেখছি।”
কিছু করার আগে যুক্তরাষ্ট্র ও নেটো দেশগুলো এর পূর্ণ তদন্ত করবে, যোগ করেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, বাইডেনের এ বিবৃতিতে অনেকগুলো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এরমধ্যে এ বিস্ফোরণে রাশিয়ার সম্ভবত কোনো দোষ নেই, বাইডেন এমনটি বুঝিয়েছেন কিনা তাও আছে। হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে বাইডেনের মন্তব্যের কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।
বাইডেন ইউক্রেইনে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা জোরদার করার নিন্দা করেছেন। সর্বশেষ হামলাকে ‘পুরোপুরি বিবেকবর্জিত’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বালিতে জরুরি বৈঠকটি বাইডেনই ডেকেছেন।
বাইডেন বলেছেন, “ইউক্রেইনের সীমান্তের কাছে পোল্যান্ডের গ্রামীণ অঞ্চলে ঘটা ওই বিস্ফোরণের বিষয়ে পোল্যান্ডের তদন্তে সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছি আমরা, প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তদন্তে তা নিশ্চিতভাবে বের হয়ে আসবে। তারপর আমরা সমষ্টিগভাবে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবো।”
পরে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, বাইডেন পোল্যান্ডের তদন্তের প্রক্রিয়াকে সমর্থন করলেও এর সিদ্ধান্তকে নাও করতে পারেন।
বালির বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), জার্মানি, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, জাপান, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের নেতারা বাইডেনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন।
শুধু জাপান বাদে এ দেশগুলোর সবাই নেটোর সদস্য, এ প্রতিরক্ষা জোটে পোল্যান্ডও আছে।
পোল্যান্ডের ওই বিস্ফোরণের জন্য মস্কো দায়ী, এমন কোনো সিদ্ধান্ত হলে তা ‘আর্টিকেল ফাইভ’ নামে পরিচিত নেটোর সম্মিলিত প্রতিরক্ষার নীতিকে সামনে নিয়ে আসতে পারে, এই নীতিতে পশ্চিমা এ জোটের যে কোনো সদস্যের ওপর আক্রমণকে সবার ওপর আক্রমণ বলে গণ্য করা হয়; আর তা হলে নেটোর সম্ভাব্য সামরিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।
আরও পড়ুন: