ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের মত পার্থক্য ট্রাম্পের পাশে মাক্রোঁর উপস্থিতিতে আরও পরিষ্কারভাবে সামনে এসেছে।
Published : 25 Feb 2025, 03:55 PM
ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম ইউরোপীয় নেতা হিসেবে ওয়াশিংটন সফর করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ।
সোমবার হোয়াইট হাউজের ওভাল দপ্তরে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেইন নিয়ে দুই নেতার মধ্যে বহু ক্ষেত্রে পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
ইউক্রেইন যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেইনের দ্রুত যুদ্ধবিরতি করাতে চাইছেন ট্রাম্প। এই নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের মত পার্থক্য ট্রাম্পের পাশে মাক্রোঁর উপস্থিতিতে আরও পরিষ্কারভাবে সামনে এসেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, দুই নেতার মধ্যে আলাপের দিনটিতে ট্রাম্প ও মাক্রোঁ অনেক বছরের মিত্রতার ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু ইউক্রেইন যুদ্ধের তৃতীয় বর্ষপূর্তির দিনটিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মাক্রোঁ ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমতের বিষয়টি পরিষ্কার করে দেন।
ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘একনায়ক’ বলে উল্লেখ করতে রাজি হননি। কিন্তু গত সপ্তাহে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘একনায়ক’ বলেছিলেন।
মাক্রোঁ বলেন, ইউক্রেইনের লড়াইয়ে রাশিয়াই ‘আগ্রাসী’ ছিল এটা পরিষ্কার। ট্রাম্প এ বিষয়ে গত সপ্তাহে দোদুল্যমান অবস্থান প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মাক্রোঁ বলেন, “প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তি লংঘন করেছেন।”
ট্রাম্প যত দ্রুত সম্ভব একটি যুদ্ধবিরতির জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইউক্রেইন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির আয়োজন করার চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, যুদ্ধবিরতি নিয়ে একটি চুক্তি হয়ে যাওয়ার পর তিনি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে মস্কো যেতে পারেন।
অপরদিকে মাক্রোঁ আরও সুচিন্তিত পন্থা নিয়ে এগোনোর আহ্বান জানান। একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি ও তারপর নিরাপত্তা গ্যারান্টিসহ একটি শান্তিচুক্তি করার পরামর্শ দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে মাক্রোঁ বলেন, “আমরা শান্তি চাই, তিনিও শান্তি চান। আমরা দ্রুত শান্তি চাই, কিন্তু আমরা কোনো দুর্বল চুক্তি চাই না।”
কোনো শান্তি চুক্তি হলে সেটিকে অবশ্যই ‘যাচাই, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন’ করে নিতে হবে বলে জোর দিয়ে বলেন তিনি।
তবে দুই নেতা শেষ পর্যন্ত একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছোনো গেলে ইউক্রেইনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে একমত হন।
এর আগে ওভাল দপ্তরে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে মাক্রোঁ বলেছিলেন, “তারা (শান্তিরক্ষীরা) যুদ্ধক্ষেত্রের প্রান্ত বরাবর থাকবেন না। তারা কোনো লড়াইয়ের অংশও হবে না। শান্তির প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে, এটি নিশ্চিত করতেই তারা সেখানে থাকবেন।”
ট্রাম্প জানান, পুতিনের মতো তিনিও এই ধারণা গ্রহণ করেছেন।
“হ্যাঁ, তিনি এটি গ্রহণ করবেন। আমি তাকে বিশেষভাবে এই প্রশ্নটি জিজ্ঞেস করেছিলাম। এ নিয়ে তার কোনো সমস্যা নেই,” শান্তিরক্ষী বাহিনী নিয়ে পুতিনের অবস্থান বিষয়ে বলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের সঙ্গে তার আলোচনাকে আরও সম্মিলিত প্রচেষ্টার পক্ষে একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বলে উল্লেখ করেছেন মাক্রোঁ।
আরও পড়ুন:
ইউক্রেইন যুদ্ধ: 'নিরপেক্ষ' অবস্থান নিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ