মার্কিন সরকার বলছে, ঝাও সাজা ভোগ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবেন, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। আরব আমিরাতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তিও নেই।
Published : 28 Nov 2023, 01:28 PM
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানি বাইন্যান্সের সাবেক সিইও চ্যাংপেং ঝাও’কে আপাতত যুক্তরাষ্ট্রেই অবস্থান করতে হবে – এমনই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন মামলার বিচারক।
সোমবারের এ সিদ্ধান্তের আগে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ পাচার বিরোধী আইনের অধীনে আদালতে অপরাধের দায় স্বীকার করেন ঝাও। এর ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে তার অপরাধের সাজা ঘোষণা করবে আদালত।
রয়টার্স বলছে, ওই রায়ের আগেই সিয়াটলের আদালত সিদ্ধান্ত নেবে ফেব্রুয়ারির রায়ের আগ পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন, না কি সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিজ পরিবারের সঙ্গে ‘দেখা করে আসার’ ফিরে সুযোগ পাবেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানি বাইন্যান্সের লেনদেনে অর্থ পাচার বিরোধী অনুশীলন জেনেশুনে এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগে গত সপ্তাহে কোম্পানির সিইও পদ থেকে সরে দাঁড়ান সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কানাডার দ্বৈত নাগরিক ঝাও।
আরও পড়ুন
সাজার আগেই যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার আকুতি ঝাও’র
অর্থ পাচারের দায় নিয়ে সরে দাঁড়ালেন বাইন্যান্স প্রধান চ্যাংপেং ঝাও
এরইমধ্যে একজন বিচারক ঝাওকে সাড়ে ১৭ কোটি ডলারের জামিন মঞ্জুর করেছেন। কিন্তু ওই জামিনের বিরোধিতা করে আবেদন করেছে সরকার পক্ষ। সে আবেদনের নিষ্পত্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত আপাতত দেশ ছাড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না ঝাও।
সিয়াটলের ডিস্ট্রিক্ট বিচারক রিচার্ড জোনস বলেন, তিনি পর্যালোচনা করে দেখবেন যে মেজিস্ট্রেট বিচারকের দেওয়া জামিনের ওই শর্তে পরিবর্তন এনে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে রাখা যায় কি না।
যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক জালিয়াতি বিরোধী আইন অমান্য করার ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪৩০ কোটি ডলারের বেশি আর্থিক জরিমানা দিতে রাজি হয়েছে বাইন্যান্স।
গত সপ্তাহে বাইন্যান্স বলেছে, তারা কোম্পানিকে ‘আরও নিরাপদ’ করার লক্ষ্যে যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে। সোমবার এ প্রসঙ্গে রয়টার্স ঝাও’র আইনজীবিদের মন্তব্য জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
“আমি ভুল করেছি। আমাকে অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হবে। এটাই আমার নিজের, আমাদের কমিউনিটি ও বাইন্যান্সের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।” --গত সপ্তাহে নিজের ভুল স্বীকার করে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করেন ঝাও।
আদালতে জমা দেওয়া নথিতে বাদিপক্ষের আইনজীবিরা উল্লেখ করেন, এ অপরাধের জন্য ঝাও’র কারাদণ্ড হতে পারে ১৮ মাস পর্যন্ত। গত সপ্তাহে বিচার বিভাগের এক মুখপাত্র বলেন, তাকে কতদিন কারাদণ্ড দেওয়া যায়, তা নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবেন মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবিরা। রায় ঘোষণার পর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঝাও।
তবে, মার্কিন সরকার বলছে, ঝাও সাজা ভোগ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবেন কি না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ, আরব আমিরাতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তিও নেই।
তবে, ঝাও’র আইনজীবিরা যুক্তি দেখিয়েছেন, ঝাও এই ‘বড় জরিমানার’ জামিন নিতে বাধ্য ছিলেন না। বরং তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসেছেন।