চুক্তি অনুসারে ‘বাণিজ্যিক ও সরকারী চাহিদা’র বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নাসা বিভিন্ন কোম্পানিকে গবেষণা ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দেবে।
Published : 20 Jun 2023, 02:15 PM
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ভবিষ্যতে পরিকল্পনার সঙ্গে মেলে এমন প্রযুক্তিগত বিকাশের কথা বিবেচনায় নিয়ে সাতটি বাণিজ্যিক রকেট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে মহাকাশ গবেষণায় মার্কিন সংস্থা নাসা।
নাসার এই চুক্তির নাম ‘স্পেস অ্যাক্ট’। এর লক্ষ্য, মহাকাশে স্টেশন তৈরি থেকে শুরু করে মহাকাশযাত্রা ও রোবটিক্সের মতো বিষয়াদির উন্নয়ন।
এই চুক্তিতে কোনো আর্থিক লেনদেন হবে না। আনুষ্ঠানিক সহযোগিতার এই চুক্তিতে ভবিষ্যৎ ‘বাণিজ্যিক ও সরকারী চাহিদা’র বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নাসা বিভিন্ন কোম্পানিকে গবেষণা ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দেবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকক্রাঞ্চ।
“আমরা দেখেছি কীভাবে এমন অংশীদারিত্ব থেকে বেসরকারি খাত ও নাসা উভয় পক্ষই উপকৃত হয়।” – নাসার বাণিজ্যিক মহাকাশযাত্রা বিভাগের পরিচালক ফিল ম্যাকঅ্যালিস্টার বলেন।
“এতে কোম্পানিগুলো নাসার বিশাল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সহায়তা নিতে পারে। আর ভবিষ্যত চুক্তির অংশ হিসেবে সংস্থাটি কোম্পানিগুলোর গ্রাহক হতে পারে।”
এইসব গবেষণার লক্ষ্য, পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথনির্ভর অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া। আর্টেমিস মিশনকে নিয়ে নাসার পুরো মনোযোগ থাকলেও বাণিজ্য ও গবেষণার ক্ষেত্র হিসাবে নিম্ন কক্ষপথকে নাসা ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্র’ হিসেবে বিবেচনা করছে।
আইএসএস-এর কার্যক্রম শেষ হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসার পাশাপাশি রকেট উৎক্ষেপণেও খরচ কমছে। এটা পরিষ্কার যে মহাকাশের অন্যান্য জায়গার চেয়ে নিম্ন কক্ষপথের কার্যক্রম প্রতিযোগিতামূলক হবে।
চুক্তি অনুসারে এই সাত কোম্পানি আগামী কয়েক বছরে যে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবে তার মধ্যে রয়েছে–
ব্লু অরিজিন: কক্ষপথে উচ্চমাত্রায় মার্কিন প্রবেশাধিকারের লক্ষ্যে বাণিজ্যিক মহাকাশ পরিবহন ব্যবস্থা তৈরি।
নর্থ্রপ গ্রুম্যান: কক্ষপথে স্বয়ংক্রিয় রোবটিক গবেষণা ও উৎপাদনের লক্ষ্যে একটি ‘টেকসই প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি।
সিয়েরা স্পেস: মহাকাশ পরিবহন ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর পাশাপাশি প্রসারণযোগ্য ও উপযোগী ‘স্পেস ফ্যাসিলিটি’ তৈরি।
স্পেসএক্স: স্টারশিপকে পরিবহন ব্যবস্থা ও মহাকাশের ‘গন্তব্য’ উভয় হিসেবেই গড়ে তোলা। উদাহরণ হিসেবে মহাকাশ স্টেশনের কথা বলা যায়।
স্পেশাল অ্যারোস্পেস সার্ভিসেস: কক্ষপথ বিষয়ক পরিষেবা, মহাকাশযান সমন্বয়ে গতিশীলতা ও এর অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাগুলো পর্যবেক্ষণ।
থিংকঅরবিটাল: মহাকাশযানের নিজেকেই ‘অ্যাসেম্বল’ করার সক্ষমতা, গবেষণা ও বসবাসের উদ্দেশ্যে একক ‘লঞ্চ অরবিটাল প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি।
ভাস্ট: ‘হ্যাভন ১’ মহাকাশ স্টেশনকে ‘বাণিজ্যিক গন্তব্য’ বানানো, গবেষণা ও যাত্রীবাহী বাণিজ্যিক মিশনের জন্য মহাকাশে ‘মাইক্রোগ্র্যাভিটি’র পরিবেশ তৈরি করা।
নাসার কাছ থেকে শীঘ্রই বড় কোনো ঘোষণা প্রত্যাশা না করাই ভালো বলে প্রতিবেদনে লিখেছে টেকক্রাঞ্চ। সর্বশেষ ২০১৪ সালে এমন বেশ কয়েকটি চুক্তি করেছিল সংস্থাটি। তবে সেগুলো এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। প্রযুক্তি সাইটটির মতে, এটি অনেকটা ‘সহায়তা লাগলে আমরা আছি’ ধরনের বিষয়।
“তবে, এগুলো শুনতে ভালোই লাগে।”