জানুয়ারিতে ফ্যাক্ট চেকিং কমানো, অভিবাসন ও লিঙ্গ পরিচয়ের মতো বিতর্কিত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করে মেটা।
Published : 23 Apr 2025, 09:40 PM
কোম্পানির নীতিমালা সংশোধনের জন্য মেটার ওভারসাইড বা তদারকি বোর্ডের তোপের মুখে পড়েছেন ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রাম প্রধান।
জানুয়ারিতে কোম্পানিটির নীতিমালা সংস্কারের জন্য বিশেষ করে ফ্যাক্ট চেকিং কমানো, অভিবাসন ও জেন্ডার পরিচয়ের মতো বিতর্কিত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার ওপর বিধিনিষেধ শিথিল করায় ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিককে বুধবার মেটার ওভারসাইট বোর্ডের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
স্বাধীনভাবে পরিচালিত হলেও মেটার অর্থায়নে চলে ওভারসাইড বোর্ডটি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর ঠিক আগে কার্যকর করা প্লাটফর্মটির বিভিন্ন পরিবর্তনের “সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব” মূল্যায়ন করতে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্টটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে বোর্ডটি বলেছে, মেটা “তাড়াহুড়া করে তাদের নিয়মিত প্রক্রিয়া থেকে সরে এসে কোম্পানিটি আগে যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, সে বিষয়ে জনসাধারণের কাছে কোনও তথ্য প্রকাশ না করেই” এসব পরিবর্তন বাস্তবায়ন করেছে তারা।
রয়টার্স লিখেছে, এ ঘোষণার ফলে মেটা প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের সঙ্গে বোর্ডটি সম্ভাব্য সংঘর্ষের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ, এ বছর ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে ও তার কোম্পানির বিভিন্ন পরিষেবাতে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, ভুল তথ্য ও সহিংসতায় প্ররোচনার মতো ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে এক দশকের বেশি সময় ধরে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন উদ্যোগকে বিদায় করতে কাজ করছেন তিনি।
মেটা এক বিবৃতিতে বলেছে, বোর্ডের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় তারা, যেখানে “আমাদের প্ল্যাটফর্মে মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রচারের স্বার্থে কনটেন্ট ছেড়ে দেওয়া বা পুনরুদ্ধারের কথা বলেছে বোর্ড।”
তবে বিবৃতিতে প্লাটফর্মে কনটেন্ট মুছে ফেলার জন্য বোর্ডের অন্যান্য সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনও কথা বলেনি মেটা।
জানুয়ারিতে নিজেদের ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রাম বাতিল’সহ ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও থ্রেডস-এ ইলন মাস্কের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এর মতো ‘কমিউনিটি নোট’ চালু করে টেক জায়ান্টটি, যেখানে পোস্টের নির্ভুলতা সম্পর্কে মন্তব্যের বিষয়টি থাকবে ব্যবহারকারীদের ওপর।
এই নীতি পরিবর্তনের ঘোষণায় জাকারবার্গ বলেছিলেন, তৃতীয় পক্ষের মডারেটররা ‘রাজনৈতিকভাবে খুব বেশি পক্ষপাতী’ এবং ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য আমাদের গোড়ায় ফিরে যাওয়ার সময় এসেছে’।
মেটা সমকামীদের মানসিকভাবে অসুস্থ ও নারীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক হিসাবে বিবেচিত বিভিন্ন শব্দের ওপর নিষেধাজ্ঞাও সরিয়ে দিয়েছে। কোম্পানিটি বলেছে, তারা কেবল সন্ত্রাসবাদ, শিশু যৌন শোষণ ও জালিয়াতির মতো কনটেন্ট শনাক্তের লক্ষ্যে কাজ করবে।
এদিকে, মেটার তৃতীয় পক্ষের ‘ফ্যাক্ট-চেকিং’ বাতিল ও কনটেন্ট মডারেশন শিথিলের সিদ্ধান্তকে ‘হিমশীতল’ আখ্যা দিয়েছে বিশেষজ্ঞ ও অধিকারকর্মীরা। একইসঙ্গে এটি অনলাইন নিরাপত্তার জন্য ‘ভয়াবহ পরিণতি’ হতে পারে বলেছেন তারা।
মেটার ফ্যাক্ট-চেকিং প্রোগ্রামের অন্যতম অংশীদার ছিল রয়টার্স। মেটা বলেছে, ৬০ দিনের মধ্যে বোর্ডের এসব সুপারিশের প্রতি সাড়া দেবে তারা।