এখানে দেখানো উভয় পদ্ধতিই ওয়্যারলেস উপায়ে ডেটা ট্রান্সফার করবে। অর্থাৎ, ভালো ও ঝামেলামুক্ত ডেটা ট্রান্সফারের জন্য একটি শক্তিশালী ওয়াই-ফাই সংযোগের প্রয়োজন হবে।
Published : 13 Apr 2024, 05:41 PM
একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন বদলে আরেকটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন হাতে নেওয়া এক জিনিস, তবে অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইফোন নেওয়া সম্পূর্ণ আলাদা। তাই, কেউ যদি অ্যান্ড্রয়েড ফোন বদলে আইফোন নিয়ে থাকেন, বা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করে থাকেন, সে সময়ের অন্যতম বড় প্রশ্ন হয়ে ওঠে, কীভাবে অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইফোনে ডেটা ট্রান্সফার বা ডেটা স্থানান্তর করা যায়?
উপায় অবশ্যই আছে। আর কতটা ডেটা ট্রান্সফার করা হচ্ছে তার ওপরে নির্ভর করে প্রক্রিয়াটি শেষ করতে কয়েক মিনিট থেকে ঘণ্টা পর্যন্ত লাগতে পারে। তবে, সময় যতই লাগুক, ধাপগুলো একই থাকবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইফোনে ডেটা ট্রান্সফারের সহজ দুটি উপায়।
প্রক্রিয়াটি শুরু করার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরী বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি সাইট জেডডিনেট।
১. ডিভাইসে যেন অন্তত ৭৫ শতাংশ বা তার বেশি চার্জ থাকে। যত বেশি চার্জ থাকবে তত ভালো, যদিও এটি নির্ভর করে কতটা ডেটা ট্রান্সফার হবে তার ওপরে।
২. একটি ভাল ওয়াই-ফাই সংযোগ থাকতে হবে। এখানে দেখানো উভয় পদ্ধতিই ওয়্যারলেস উপায়ে ডেটা ট্রান্সফার করবে। অর্থাৎ, ভালো ও ঝামেলামুক্ত ডেটা ট্রান্সফারের জন্য একটি শক্তিশালী ওয়াই-ফাই সংযোগের প্রয়োজন হবে।
৩. কী পরিমাণ ডেটা ট্রান্সফার হবে সেটি আবার দেখা। আইফোনে সব ডেটার জন্য পর্যাপ্ত স্টোরেজ থাকতে পারে, বা না-ও থাকতে পারে। যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের পুরনো ফাইলগুলো আবার চেক করে দেখা দরকার। সেখান থেকে অপ্রয়োজনীয় বা একইরকম ফাইল অনেকগুলো রয়েছে এমন জিনিস ডিলিট করে ফেলা উচিত। এ ছাড়া, কোনো ফাইল গুরুত্বপূর্ণ, যা ফোনেই রাখতে হবে, আবার এমন ফাইন যেগুলো আলাদা হার্ডড্রাইভে রাখলেও চলবে সেসব ফাইলও গুছিয়ে ফেলা উচিত।
প্রথম পদ্ধতি: ‘মুভ টু আইওএস’-এর মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সফার
সবচেয়ে সহজ উপায়টি সম্ভবত অ্যাপলের নিজস্ব পরিষেবা ‘মুভ টু আইওএস’। সাধারণত এটি আইফোনে আগে থেকেই লোড করা থাকে, তাই ব্যবহারকারীকে কেবল অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে গুগল প্লে স্টোরের মাধ্যমে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে।
তবে, পরিষেবাটি কাজ করার জন্য ব্যবহারকারীকে সেটআপ অ্যাসিস্ট্যান্ট-এ থাকতে হবে। প্রথমবার নতুন আইফোন চালু করার সময় এটি স্টার্টআপ পেইজ হিসাবে সামনে আসে, যেখানে বিভিন্ন ভাষার “হ্যালো” ঘুরতে থাকে। কেউ যদি এরইমধ্যে আইফোন সেট আপ করে ফেলেন ও হোম স্ক্রিন অ্যাক্সেস করতে পারেন, সেক্ষেত্রে মুভ টু আইওএস ব্যবহার করতে হলে ফ্যাক্টরি রিসেট করতে হবে। নাহলে এটি ব্যবহার করা যাবে না।
আইফোন থেকে শুরু করুন
আইওএস সেট আপ অ্যাসিস্ট্যান্টের প্রাথমিক ধাপগুলো পার করুন, ওয়াই-ফাই কানেকশন, পাসওয়ার্ড, অ্যাপলের টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন্স এসব ধাপ পার করে একটি ‘অ্যাপস অ্যান্ড ডেটা’ স্ক্রিন দেখা যাবে।
এই স্ক্রিনে ‘মুভ ডেটা ফ্রম অ্যান্ড্রয়েড’ বাছাই করুন। এরপরে ‘কন্টিনিউ’ অপশনে ট্যাপ করুন।
অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে অ্যাপটি চালু করুন
অ্যাপলের প্রাইভেসি পলিসিতে সম্মত হয়ে, অ্যাপটিকে ফোনের সব ফাইল ও লোকেশন অ্যাক্সেস করার অপশন চালু করলে, যখন ‘ফাইন্ড ইয়োর কোড’ নামের স্ক্রিনটি সামনে আসবে তখন ‘কন্টিনিউ’ অপশনে ট্যাপ করুন।
আইফোনের স্ক্রিনে একটি কোড আসবে
অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই কোডটি লিখুন। এটি পেয়ারিং প্রক্রিয়া শুরু করবে, তারপরে কোন ফাইলগুলো স্থানান্তর করতে চান তা নির্বাচন করা যাবে৷
তালিকায় মেসেজেস, কন্টাক্টস, ক্যালেন্ডার ইনফো, গুগল অ্যাকাউন্ট, ফটো ও ভিডিও, এবং ইউজার সেটিংস থাকবে।
অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন ডিভাইস ধরা যাবে না
ডেটা ট্রান্সফার চলাকালীন ফোনগুলোকে ধরা যাবে না। কী পরিমাণ ডেটা স্থানান্তর করা হচ্ছে তার ওপরে নির্ভর করে ৩০ মিনিট বা তার বেশি সময় লাগতে পারে এ প্রক্রিয়াটি শেষ হতে।
ক্লাউডের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সফার করতে জিমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। এ পদ্ধতিটি তখনি উপযুক্ত যখন কেউ প্রথম উপায়ে অতিরিক্ত কোনো ফাইল সরাতে ভুলে যান বা এরই মধ্যে যদি আইফোন সেট আপ করা হয়ে যায় ও ‘মুভ টু আইওএস’ অ্যাপটি ব্যবহার করার সুযোগ না থাকে।
অ্যান্ড্রয়েডের সেটিংস অ্যাপ খুলুন
সেটিংস থেকে ‘গুগল’ ট্যাবটি খুঁজে ‘ব্যাকআপ’ অপশনে ট্যাপ করুন। এরপর ডিভাইসজুড়ে যে বিভাগগুলোর ডেটা ভাগ করে নিতে চান সেগুলোর টগল চালু করে দিন। ‘ব্যাকআপ ডিটেইলস’ তালিকা থেকে ‘গুগল অ্যাকাউন্ট ডেটা’ অপশন চালু করে কী কী কপি করা হচ্ছে সেটি দ্বিতীয়বার চেক করে নেওয়া যাবে। ব্যাকআপ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
আইফোনের সঙ্গে গুগল অ্যাকাউন্ট সিঙ্ক করুন
আইফোনের সেটিংস খুলুন। ‘মেইল’ অপশনে যান। ‘অ্যাকাউন্টস’ অপশন খুঁজে ‘অ্যাড অ্যাকাউন্টে’ ট্যাপ করুন। এরপরে আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টের তথ্য দিন।
এবারে, গুগল অ্যাকাউন্টের সব ডেটা আইফোনের সঙ্গে সিঙ্ক হওয়া উচিত, ও স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ডেটা ট্রান্সফার শুরু করা উচিত।
গুগল অ্যাকাউন্টের আরেকটি অপশন
একটি গুগল ড্রাইভ ফোল্ডারে ফাইল আপলোড করতে পারেন ও সেখান থেকে ফাইলগুলো আইফোনের ডাউনলোড করতে পারেন৷ শুধু মনে রাখবেন, একটি স্ট্যান্ডার্ড, বিনামূল্যের গুগল অ্যাকাউন্টে ১৫জিবি স্টোরেজ থাকে৷ এর বেশি ক্লাউড স্টোরেজের জন্য অর্থ প্রদান করতে হবে।