আইফোন উৎপাদনে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের চায় চীন

অবসরে থাকলেও সৈনিকরা সবসময়েই কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন ছিলেন এবং ‘প্রয়োজনের সময় হাজির হওয়া উচিত’ তাদের।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2022, 09:34 AM
Updated : 18 Nov 2022, 09:34 AM

হেনান প্রদেশের চ্যাংচৌ শহরে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম আইফোন কারখানার উৎপাদন বাড়াতে অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের সহযোগিতা চেয়েছে চীন সরকার। 

সম্প্রতি এক খোলা চিঠিতে অবসারপ্রাপ্ত সৈনিকদের আইফোন উৎপাদনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে একই শহরে অবস্থিত পিপলস লিবারেশন আর্মির ‘ভেটেরান অ্যাফেয়ার্স বুরো’। 

বিবিসি জানিয়েছে, কোভিড মহামারীর স্থানীয় সংক্রমণে হোচঁট খেয়েছে ফক্সকনের উৎপাদন প্রক্রিয়া। অ্যাপলের জন্য নিজস্ব কারখানায় চুক্তিভিত্তিক আইফোন উৎপাদন করে কোম্পানিটি।

এ পরিস্থিতিতে মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাটে এক খোলা চিঠি প্রকাশ করেছে দেশটির ‘ভেটেরান অ্যাফেয়ার্স বুরো’। চিঠিতে সংস্থাটি বলেছে, অবসরে থাকলেও সৈনিকরা সবসময়েই কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন ছিলেন এবং ‘প্রয়োজনের সময় হাজির হওয়া উচিত’ তাদের।

অবসারপ্রাপ্ত সৈনিকদের ‘সরকারের ডাকে সাড়া দিতে’ এবং ‘পুনরায় উৎপাদন চালু করার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে’ বলেছে বুরো।

ফক্সকন তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান হলেও এর উৎপাদন কারখানাগুলোর একটা বড় অংশের অবস্থান চীনে। ১ কোটি বাসিন্দার শহর চ্যাংচৌয়ে ফক্সকন কর্মীর সংখ্যা দুই লাখের বেশি। বিশ্বব্যাপী আইফোন উৎপাদনের ৭০ শতাংশ আসে চ্যাংচৌ কারখানা থেকে। 

বছরের শুরু থেকেই চীনের কঠোর জিরো কোভিড নীতিমালার কারণে বেশ কয়েকটি কারখানায় অস্থায়ীভাবে উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে ফক্সকন। 

উৎপাদন অব্যাহত রাখতে এ বছরের শুরু থেকেই একটি ‘কোভিড বাবল’-এ রাখা হয়েছে চ্যাংচৌয়ের কারখানা। 

কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়লে কর্মীদের কারখানার ভেতরেই অবস্থিত একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে। তবে, এতে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

অক্টোবর মাসে একাধিক নতুন সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছিল কারখানার ভেতরে। একই সঙ্গে চ্যাংচৌ শহরের নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকার ওপর লকডাউন আরোপ করেছিল নগর কর্তৃপক্ষ। তবে, সংক্রমণের সঠিক সংখ্যা এখনও প্রকাশ করেনি ফক্সকন বা চীনা কর্তৃপক্ষ।

অক্টোবর মাসে কোভিড সংক্রমণে বিশৃঙ্খলা সৃৃষ্টি হয়েছিল কারখানার কর্মীদের মধ্যে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিওতে কারখানার বেড়া টপকে পালাতে দেখা গেছে ফক্সকন কর্মীদের।

গণপরিবহনের অনুপস্থিতিতে পালিয়ে আসা কর্মীদের অনেককেই বাড়ি ফেরার জন্য মাইলের পর মাইল হাঁটতে হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। 

তারপরই হোঁচট খায় ফক্সকনের উৎপাদন। গবেষণা সংস্থা ট্রেন্ডফোর্সের তথ্য বলছে, পুরো কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়ার দুই-তৃতীয়াংশ কার্যকর আছে। 

অন্যদিকে, কারখানায় অন্তত ১০ হাজার বাড়তি কর্মী দরকার বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস।

চ্যাংচৌ শহরের সবচেয়ে বড় চাকরিদাতা এবং সবচেয়ে বড় রপ্তানীকারক কোম্পানি ফক্সকন। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত তিন হাজার ছয়শ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানী করেছে কোম্পানিটি।

বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ফক্সকন এবং অ্যাপলের মন্তব্য জানার চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পায়নি বিবিসি।