বার্কলেইস হল দ্বিতীয় ব্রোকারেজ কোম্পানি যেটি অ্যাপলের শেয়ারকে “সেল” হিসাবে লেবেল করেছে। এর মানে হচ্ছে, অ্যাপলের শেয়ার বিক্রির সুপারিশ করা।
Published : 03 Jan 2024, 05:52 PM
যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী ব্যাংক অ্যাপল শেয়ারকে ‘ডাউনগ্রেড’ করায় এক ধাক্কায় কোম্পানি হিসাবে অ্যাপলের বাজারমূল্য থেকে ঝড়ে গেছে প্রায় ১২ হাজার কোটি ডলার।
ব্রিটেইনভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যাংক বার্কলেইস মঙ্গলবারে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানিটির অবস্থান নামিয়ে দিয়েছে। এর কারণ হিসাবে বার্কলেইস বলছে, আইফোন থেকে শুরু করে ম্যাকসহ অ্যাপল পণ্যের চাহিদা ২০২৪ সালে দুর্বল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বার্কলেইসের ওই মূল্যায়নের পরপরই অ্যাপলের শেয়ার মূল্য প্রায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ কমে সাত সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থায় এসেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
প্রায় তিন ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানিটির বাজার মূল্য এতে কমে এসেছে প্রায় ১২০ বিলিয়ন ডলার।
বার্কলেইস হল দ্বিতীয় ব্রোকারেজ কোম্পানি যেটি অ্যাপলের শেয়ারকে “সেল” হিসাবে লেবেল করেছে। এর মানে হচ্ছে, অ্যাপলের শেয়ার বিক্রির সুপারিশ করা। এর পাশাপাশি দুই বছরে সবচেয়ে বেশি ‘বিয়ারিস’ সুপারিশ রয়েছে বলে উঠে এসেছে বাজার বিশ্লেষক কোম্পানি এলএসইজি-এর তথ্যে। কোনো শেয়ারে ‘বিয়ারিস’ সুপারিশ করার মানে হচ্ছে ওই শেয়ার পড়তির দিকে আছে বলে মতামত দেওয়া।
অ্যাপলের মূল্য ‘এসঅ্যান্ডপি ৫০০’ কোম্পানিগুলোর মোট মূল্যের প্রায় ৭ শতাংশ। সহজ ভাষায় এসঅ্যান্ডপি ৫০০ মানে হচ্ছে মার্কিন শেয়ার বাজারে নিবন্ধিত সবচেয়ে বড় ৫০০টি কোম্পানির তালিকা।
অ্যাপলের শেয়ারমূল্য পতনের ফলে মঙ্গলবার তাদের সমন্বিত সূচকের মূল্য কমেছে প্রায় দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এর আগে ২০২৩ সাল জুড়ে অ্যাপলের শেয়ার মূল্য বেড়েছে ৫০ শতাংশ। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এসে প্রায় রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছিল কোম্পানিটি।
গত বছরের শুরু থেকেই চাহিদা মন্দার সঙ্গে লড়ছে অ্যাপল, এবং ছুটির প্রান্তিকে ওয়াল স্ট্রিটের অনুমানের চেয়ে বিক্রি কমার পূর্বাভাস রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স। পাশাপাশি, স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী হুয়াওয়ের প্রত্যাবর্তনের পরে চীনেও অ্যাপলের অবস্থা অনেকটাই নাজুক।
“আইফোন ১৫ বেশ দুর্বল ছিল, এবং আমরা বিশ্বাস করি আইফোন ১৬ একই দিকে যাবে।” – চীনের বাজারে অ্যাপলের দুর্বলতা ও উন্নত বাজারে চাহিদা কমার দিকে ইঙ্গিত করে একটি ক্লায়েন্ট নোটে লিখেছেন বারকলেস-এর বিশ্লেষক টিম লং।
অ্যাপলের পরিষেবা ব্যবসার ঝুঁকি বাড়ছে বলেও সতর্ক করেছে ব্রোকারেজটি। অ্যাপ স্টোরের অনুশীলনের ফলে ব্যবসাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নজরে রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অ্যাপলের হার্ডওয়্যার ব্যবসারকেও ছাপিয়ে গিয়েছে পরিষেবা থেকে আসা আয় এবং কোম্পানির মোট আয়ের প্রায় এক চতুর্থাংশই আসছে এখান থেকে।
মঙ্গলবারের এ দরপতনে ১৮৫ দশমিক ৬৪ ডলারে শেয়ার বাজারে দিন শেষ করেছে কোম্পানিটি।
বার্কলেইস অ্যাপলের স্টকটি ‘নিউট্রাল’ থেকে নামিয়ে এনেছে ‘আন্ডারওয়েট’-এ।
বিশ্লেষকরা গড়ে ২০০ ডলারের মূল্য ধরে এই আইফোন নির্মাতা কোম্পানিকে ‘বাই’ রেটিং বা কেনার পরামর্শ দেয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।