এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
Published : 09 May 2024, 01:51 PM
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় পরিষদ নির্বাচনে ফল ঘোষণার পর দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুপক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার বিকালে ও রাতে উপজেলার নশাসন ইউনিয়নের ডগ্রী বাজার ও মাদবর কান্দিতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান নড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবির হোসেন।
আহতদের মধ্যে নশাসন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদার (৬০), মাহবুব ফকির (৩৫) এবং নুরুজ্জামান হাওলাদারকে (৪৫) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া আব্দুর রহমান ঢালী (২৫), লুৎফা বেগম (৫৫) এবং মাহিম মাদবর (১০) জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসাপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার নড়িয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে এম ইসমাইল হক চেয়ারম্যান পদে মোটরসাইকেল প্রতীকে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ঘোড়া প্রতীকের মামুন সিকদার।
বিকালে নশাসন ইউনিয়নের উদয়তারা ভোটকেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে মোটরসাইকেল প্রতীক ১৩০ ভোট বেশি পায়। এ ছাড়া নশাসন ইউনিয়নের তিনটি কেন্দ্রে মোটরসাইকেল প্রতীক জয়ী হয়।
ভোট বেশি পাওয়ায় ইসমাইল হকের সমর্থক নশাসন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আমীন রতন ও তার লোকজন আনন্দ মিছিল নিয়ে ডগ্রী বাজারে যান।
পরে বিকাল ও রাতে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মামুন সিকদারের সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদার ও তার লোকজনের সঙ্গে ইসমাইল হকের সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দুপক্ষ দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।
এতে ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ারসহ দুপক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। এ ছাড়া ১০ থেকে ১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ফের সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহতরা জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ারসহ মাহবুব এবং নুরুজ্জামানকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
বিজয়ী নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমাইল হকের সমর্থক আনোয়ার হোসেন বলেন, “ইসমাইল হক বিজয়ী হওয়ায় আমরা আনন্দ মিছিল নিয়ে ডগ্রী বাজারে যাই। সেখানে দেলোয়ার চেয়ারম্যানের লোকজন মিছিলে বাধা দেয় এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
“রাতে নূরুল আমীন রতনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে আমাদের পক্ষের বেশ কয়েকজনের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায় তারা।”
পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুন সিকদার বলেন, “ইসমাইল হকের সমর্থকরা একটি মিছিল বের করে। পরে তারা ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ারের বাড়ি ভাঙচুর করে। এ ছাড়া তারা দেলোয়ারসহ তিন থেকে চারজনকে পিটিয়ে আহত করেছে।”
পুলিশ পরিদর্শক আবির হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থল থেকে নয়জনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনও মামলা হয়নি।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।