স্যাটেলাইটের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি, উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত নয় রকেট। তবুও ইন্টারনেটবিহীন দুর্গম অঞ্চলগুলোতে ‘দ্রুত গতির কম খরচের ব্রডব্যান্ড’ সেবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে অ্যামাজন।
Published : 14 Oct 2022, 04:20 PM
অ্যামাজন স্যাটেলাইট নির্ভর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার প্রকল্প ‘প্রোজেক্ট কাইপার’-এর প্রথম দুটো প্রোটোটাইপ স্যাটেলাইট মহাকাশে যাবে ২০২৩ সালের প্রথম ভাগে।
প্রোজেক্ট কাইপারের মাধ্যমে সরাসরি স্পেসএক্সের স্টারলিংক এবং ওয়ানওয়েবের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড সেবার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিকল্পনা করেছে অ্যামাজন।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ প্রোজেক্ট কাইপারের প্রথম স্যাটেলাইটগুলো মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা থাকলেও সে অবস্থান থেকে সরে এসেছে এ কোম্পানি। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানোর সময়সূচিই কেবল পেছায়নি, রকেটও পাল্টে ফেলেছে অ্যামাজন।
প্রকল্পের প্রথম দুই প্রোটোটাইপ স্যাটেলাইট কাইপারস্যাট-১ এবং কাইপারস্যাট-২ আগামী বছরের প্রথমভাগেই মহাকাশে পাঠানো হবে বলে বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যামাজন জানিয়েছে।
স্যাটেলাইটগুলো মহাকাশে বয়ে নিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রকেট নির্মাতা কোম্পানি ‘ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স (ইউএলএ)’এর ভালকান সেন্টর রকেট।
প্রথম পরিকল্পনায় স্যাটেলাইটগুলোর মহাকাশে যাওয়ার কথা ছিল ‘এবিএল স্পেস সিস্টেমস’-এর রকেটে চড়ে।
অ্যামাজন বলছে, মহাকাশে প্রোটোটাইপ স্যাটেলাইগুলোর মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যে ডেটা সংগ্রহ করা হবে, তা বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট সিস্টেমের নকশা, উৎক্ষেপণ এবং পরিচালনার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে সহায়ক হবে।
অপরিক্ষীত প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর করছে অ্যামাজন
অ্যামাজন আগ্রহ নিয়ে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সময়সূচি ঘোষণা করলেও ভার্জ জানিয়েছে, এখনও স্যাটেলাইট দুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এ বছরের শেষ নাগাদ নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে অ্যামাজন।
আর ইউএলএর ভালকান সেন্টর রকেটও উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত নয়। বুধবারেই এক বিবৃতিতে ইউএলএ জানিয়েছে, রকেটের নির্মাণকাজ শেষ হবে নভেম্বর মাসে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হবে ডিসেম্বরে। রকেটের কাঠামোতে এখনও ইঞ্জিন বসায়নি তারা।
ভার্জ জানিয়েছে, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নির্ভরযোগ্যতা এখনও প্রমাণ করতে পারেনি ভালকান সেন্টর রকেট; অথচ এর প্রথম ফ্লাইটেই পরীক্ষামূলক স্যাটেলাইট বহনের পরিকল্পনা করেছে অ্যামাজন ও ইউএলএ।
ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিক শেষ হওয়ার আগেই অন্তত দুইবার ভালকান সেন্টর রকেটের কার্যক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে ইউএলএকে।
চাপে আছে অ্যামাজন নিজেও। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) লাইসেন্স ধরে রাখতে চাইলে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রোজেক্ট কাইপারের অর্ধেক স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠাতে হবে।
সব মিলিয়ে তিন হাজার ২৩৬টি স্যাটেলাইট পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে অ্যামাজন। তিন বছর বা তার কম সময়ের মধ্যে এর অর্ধেকও মহাকাশে পাঠানো কঠিন হবে বলে মন্তব্য ভার্জের।
এর মধ্যে ৩৮টি স্যাটেলাইট ভালকান রকেটে মহাকাশে পাঠাতে চায় অ্যামাজন। অন্যান্য স্যাটেলাইটগুলোকে বহন করবে জেফ বেজোসের কোম্পানি ব্লু অরিজিন এবং আরিয়ানস্পেসের রকেট।
স্যাটেলাইটগুলো মহাকাশে পৌঁছালেই ইন্টারনেট সংযোগবিহীন দুর্গম অঞ্চলগুলোতে ‘দ্রুত গতির কম খরচের ব্রডব্যান্ড’ সেবা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে অ্যামাজন।