Published : 10 May 2024, 01:48 AM
টেকসই স্বাস্থ্য উন্নয়নে সমন্বিতভাবে ‘হেলথ প্রমোশন’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তোপখানা রোডে বিএমএ ভবনে প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) আয়োজিত ‘টেকসই স্বাস্থ্য উন্নয়নে হেলথ প্রমোশন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ কর্মশালায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশই ঘটে অসংক্রামক রোগে। তামাকপণ্যের ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, কায়িক পরিশ্রমের অভাব, বায়ু দূষণ অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির প্রধান কারণ।
কর্মশালায় প্রজ্ঞার হেড অব প্রোগ্রামস হাসান শাহরিয়ার বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশই যায় ওষুধে।
এ জন্য হেলথ প্রমোশনের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্ব্য সংস্থার মতে হেলথ প্রমোশন এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে মানুষ নিজের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যের নির্ধারকের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে এবং নিজ স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।
“এ জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা, খাবারে অতিরিক্ত চর্বি, লবণ ও চিনি পরিহার করা এবং তামাক ও অ্যালকোহল বর্জন করার মাধ্যমে কাজে উদ্বুদ্ধ করার পরিবেশ সৃষ্টির নামই হেলথ প্রমোশন। এর মাধ্যমে এড়ানো সম্ভব হার্ট আ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগ।”
হেলথ প্রমোশনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হলে চিকিৎসা খাতে ব্যয় হ্রাসের পাশাপাশি জনগণের অসুস্থতা ও মৃত্যু কমবে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর চাপ কমে আসবে বলে তার বিশ্বাস।
এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণে একটি সমন্বিত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় কর্মশালায়।
সেখানে বলা হয়, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ১১টি দেশ এরই মধ্যে হেলথ প্রমোশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি হ্রাসে সাফল্য দেখিয়েছি।
কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, “স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ থেকে বছরে প্রায় ৩০০ কোটি আদায় হয়, যা স্বাস্থ্য উন্নয়নে খরচ করার কথা থাকলেও আমরা পারছি না। একটি স্বাধীন হেলথ প্রমোশন প্রতিষ্ঠান গঠন করে এ অর্থ স্বাস্থ্য উন্নয়নে ব্যয় করা গেলে জনগণ এবং সরকার উভয়ই লাভবান হবে।”
কর্মশালায় স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ড. এনামুল হক, ওয়ার্ক ফর অ্যা বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) এর আহ্বায়ক মতুর্জা হায়দার লিটন, সহ-আহ্বায়ক নাদিরা কিরণ ও মিজান চৌধুরী এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।