ইইউ নির্বাচন: ভুল তথ্য বিরোধী প্রচারণা চালাবে গুগল

সমাজের হুমকি মোকাবেলায় কাজ করে গুগলের ‘জিগস’ বিভাগ। ইইউ’র পাঁচটি দেশে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অ্যানিমেটেড বিজ্ঞাপনের একটি সিরিজ প্রচার করবে তারা।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2024, 06:06 AM
Updated : 17 Feb 2024, 06:06 AM

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর পাঁচটি দেশে ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে গুগল।

ইইউ পার্লামেন্ট নির্বাচন ও অনলাইন কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর সব নতুন নিয়মকে সামনে রেখে রয়টার্সকে ক্যাম্পেইনটির কথা বলেছে এ সার্চ জায়ান্ট।

জুন মাসে ইইউ নাগরিকরা এ অঞ্চলে নীতি ও আইন প্রণয়নের জন্য নতুন একটি পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেবেন। আর অনলাইনে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে; আইন প্রণেতারা এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

রুশপন্থী প্রচার ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক একত্রিত করেছে বলে সোমবার রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছে ফ্রান্স, পোল্যান্ড ও জার্মানি।

এ ছাড়া, এ সপ্তাহ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে ইউরোপের ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’। এ কারণে, শীর্ষ সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সার্চ ইঞ্জিনকে অবৈধ কনটেন্ট ও জননিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবেলা করার জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।

সমাজের হুমকি মোকাবেলায় কাজ করে গুগলের অভ্যন্তরীণ ‘জিগস’ বিভাগ। মার্চ মাস থেকে, ইইউ’র পাঁচটি দেশ, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও পোল্যান্ডে, টিকটক ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মে অ্যানিমেটেড বিজ্ঞাপনের একটি সিরিজ প্রচার করবে তারা।

জার্মানি ও মধ্য ইউরোপে কোম্পানির পূর্বের ক্যাম্পেইনের ওপরে ভিত্তি করে জিগস বলেছে, এ অঞ্চলে তাদের স্থানীয় দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন প্রকল্পটি ইইউ’র সবচেয়ে বেশি ভোটার থাকা দেশগুলোর নাগরিকদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

এসব বিজ্ঞাপনে ‘প্রিবাঙ্কিং’ কৌশল থাকবে, যা ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজ ও ব্রিস্টলের গবেষকদের সঙ্গে মিলে তৈরি করা হয়েছে। এর কাজ হলো, দর্শকরা দেখার আগেই কোনো ভুল তথ্য বা হেরফের আছে এমন কনটেন্ট শনাক্ত করা।

ইউটিউবে এ বিজ্ঞাপনগুলো দেখলে দর্শকদের কিছু এমসিকিউ বা ‘বহু নির্বাচনী’ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। তারা ভুল তথ্য সম্পর্কে কী কী জানেন তা বোঝার জন্যই প্রশ্নগুলো তৈরি করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

“আমরা এ সকল ‘পোলারাইজড (বিভক্ত হয়ে) বিতর্কে’ অনেক সময় ব্যয় করেছি। আমাদের গণতন্ত্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, ও দিন দিন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।,” বলেছেন জিগস বিভাগের গবেষণা প্রধান বেথ গোল্ডবার্গ।

“অন্তত আমার দেখা, প্রিবাঙ্কিং হলো একমাত্র কৌশল যা রাজনীতির মাঠে সমানভাবে কাজ করে।”

ভুল তথ্য নিয়ন্ত্রণের অন্যান্য ব্যবস্থা (যেমন ফ্যাক্ট চেকিং) পোলারাইজেশন বা বিভক্ত হয়ে যাওয়াকে আরও উসকে দিতে পারে। কারণ তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পরেই এসব পন্থা কাজে আসে বলে যোগ করেছেন গোল্ডবার্গ।

গত মাসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিস (ইইএএস)-এর  পরিচালিত এক তদন্তে, বিদেশী মাধ্যমের ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অন্তত সাড়ে সাতশটি ঘটনা উঠে এসেছে।

জিগস-এর বিজ্ঞাপনগুলো ইইউ’র ২৪টি দেশের ভাষায় অনুবাদ করার কথা জানিয়েছে গুগল।

ক্যাম্পেইনটি কমপক্ষে এক মাস চলার কথা রয়েছে। পাশাপাশি, বিস্তার ও কার্যকারিতার ওপরে ভিত্তি করে সময় বাড়ানোরও সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে এ প্রচারের ফলাফল ও সমীক্ষার প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হতে পারে বলে এক প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।