বেশিরভাগ আইফোন এখনও চীনে তৈরি করে অ্যাপল, যেখানে ৫৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এসব শুল্ক আরোপ অব্যাহত থাকলে সামনে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে অ্যাপলকে।
Published : 06 Apr 2025, 04:20 PM
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ব্যাপকহারে আমদানী শুল্ক বাড়িয়েছেন। আরোপের কারণে অ্যাপল পণ্যের দাম নাটকীয়ভাবে বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্টের আরোপিত শুল্কের কারণে পরবর্তী আইফোনের দাম ২ হাজার ৩০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
ট্রাম্পের এ নতুন শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরনের ভোক্তাপণ্যের দাম বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার মধ্যে অনেক পণ্য চীনের মতো দেশ থেকে তৈরি ও আমদানি করে বিভিন্ন কোম্পানি, যারা এ শুল্ক আরোপের কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুল্কের কারণে বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদন ব্যয় ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এই ব্যয় কোম্পানিগুলো ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে কি না সে বিষয়টিও স্পষ্ট নয়।
বেশিরভাগ প্রযুক্তি কোম্পানি এখনও শুল্কের প্রভাব সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেনি, যার কারণে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা এখনও অস্পষ্ট রয়ে গেছে।
বেশিরভাগ আইফোন এখনও চীনে তৈরি করে অ্যাপল, যেখানে ৫৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এসব শুল্ক আরোপ অব্যাহত থাকলে সামনে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে অ্যাপলকে। যেমন– অতিরিক্ত খরচ বহন করা বা গ্রাহকদের ওপর তা চাপিয়ে দেওয়ার মতোন বিষয়।
বৃহস্পতিবার আইফোন নির্মাতা কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৯.৩ শতাংশ কমে যায়, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে অ্যাপলের জন্য ছিল অন্যতম খারাপ দিন।
বছরে ২২ কোটিরও বেশি আইফোন বিক্রি করে অ্যাপল; কোম্পানিটির আইফোন বিক্রির সবচেয়ে বড় বাজারের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপ।
সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের আইফোন ১৬ মডেলটি যুক্তরাষ্ট্রে সাতশ ৯৯ ডলারে বিক্রি করে অ্যাপল। তবে ‘রোজেনব্ল্যাট সিকিউরিটিজ’-এর বিশ্লেষকদের অনুমান বলছে, এ আইফোনের দাম এক হাজার একশ ১৪২ ডলার পর্যন্ত হতে পারে, অর্থাৎ আইফোনের দাম ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
৬.৯ ইঞ্চি ডিসপ্লে ও ১ টেরাবাইট স্টোরেজ’সহ অ্যাপলের দামি আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স এর খুচরা মূল্য বর্তমানে এক হাজার পাঁচশ ৯৯ ডলার। এর দাম যদি ৪৩ শতাংশ বাড়ে তবে গ্রাহকদের আইফোনটি কিনতে প্রায় দুই হাজার তিনশ ডলার গুনতে হবে।
ইন্ডিপেনডেন্ট লিখেছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে বিভিন্ন কোম্পানিকে যুক্তরাষ্ট্র বা মেক্সিকোর মতো আশপাশের দেশগুলোতে উৎপাদন ফিরিয়ে আনতে বিস্তৃত পরিসরে চীনা আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। তবে সেই সময় অ্যাপলের বেশ কয়েকটি পণ্যের জন্য ছাড় বা ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন ট্রাম্প। এবার এখনও কোনো ছাড় দেননি তিনি।
‘রোজেনব্ল্যাট সিকিউরিটিজ’-এর বিশ্লেষক বার্টন ক্রকেট বলেছেন, “চীনের ওপর শুল্ক আরোপের বিষয়টি এখন আমাদের প্রত্যাশার সম্পূর্ণ বিপরীতে ঘটছে, যেখানে আমেরিকান আইকনিক কোম্পানি অ্যাপল গতবারের মতোই অসম্মানিত হবে।”
অ্যাপলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ফিচার নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে চালু হওয়া আইফোন ১৬ই এর দাম পাঁচশ ৯৯ ডলার। ৪৩ শতাংশ বাড়লে এই ফোনের দাম হতে পারে আটশ ৫৬ ডলার। এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে পারে অ্যাপলের অন্যান্য ডিভাইসের দামও।
এ বিষয়ে ইন্ডিপেনডেন্টের মন্তব্যের অনুরোধের সাড়া দেয়নি অ্যাপল।