এর ফলে নাসার সঙ্গে বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণার দ্বার উন্মোচিত হল।
Published : 08 Apr 2025, 09:11 PM
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা- নাসার সঙ্গে যৌথভাবে মহাকাশ অভিযানে সামিল হতে ৫৪তম দেশ হিসেবে নাসা আরটেমিস অ্যাকর্ডের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার।
মঙ্গলবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের ফাঁকে এই সমঝোতা চুক্তি সই হয়।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “আমি একটু পেছন থেকে আসি। আরটেমিস ভবিষ্যত জেনারেশন, যারা স্পেস এক্সপ্লোর করবে। তারা পৃথিবীতেই হয়ত থাকবে না। বিভিন্ন গ্রহে তারা বসবাস করবে। তো এই ফিউচার আউটলুকটা বেইজ করে আরটেমিস অ্যাকর্ড বলে একটা কম্বাইন্ড এফোর্ট চালু হয়েছিল।
“যেখানে অনেকগুলো দেশ অলরেডি সিগনেচার করেছে, তারা অলরেডি মার্কেটে। আমরা ৫৪তম দেশ হিসেবে জয়েন করলাম বা ৫৩টা দেশ একসাথে নাসার সাথে এক্সপ্লোরেশন নিয়ে কাজ করছে। তো আমি এই যে অ্যাকর্ডটাতে সাইন করলাম, সাইন করে জয়েন করলাম, তাতে কী লাভ হল–যদি এই প্রশ্নটা করেন, তাহলে আমাদের লাভটা দেখতে ২০-২৫-৩০ বছর ফিউচারে যেতে হবে।”
বিডা আয়োজিত বিনিয়োগ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মঙ্গলবাল বিকালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক ব্রিফিংয়ে কথা বলছিলেন আশিক চৌধুরী।
বিনিয়োগ সম্মেলনের অংশ হিসেবে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটি দল চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কোরীয় রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (কেইপিজেড) এবং মীরসরাইয়ের জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন প্রথম দিন। দ্বিতীয় দিন আরেকটি দল ঘুরে দেখেছেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড)।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের চাওয়া কী বা তাদের কোনো প্রশ্ন ও শঙ্কা রয়েছে কী-না এমন প্রশ্নে বিডা প্রধান বলেন, “আমি বলব প্রাইমারিলি দুইটা ক্যাটাগরিতে ইনভেস্টররা কোশ্চেন করছেন এখন। প্রথমটা হচ্ছে যে আসলে বাংলাদেশে যদি তারা ব্যবসা করতে চান, তাহলে সরকার ওনাদেরকে কি ধরনের সুবিধা দিতে পারেন। শুধু সুবিধা বলতে আমি ফিসকাল আর নন ফিসকাল সুবিধার কথা বলছি না, বাট আমি বলছি যে বাংলাদেশে যদি ওনারা ল্যান্ড করতে চান, ইউজুয়ালি যেটা হয় যে অনেক রেড টেপ পার হতে হয়। তো রেড টেপগুলা পার হওয়ার ব্যাপারে সরকার উনাদেরকে কীভাবে সাহায্য করতে পারে।
“আর দ্বিতীয় প্রশ্ন উনারা যেটা করছেন, সেটার জন্য আমরা ওদেরকে উইন্ডো দিচ্ছি, সেটা হচ্ছে- এক্সিস্টিং যারা ব্যবসায়ী আছেন, তারা কী কী ধরনের চ্যালেঞ্জ এই মুহূর্তে ফেইস করছেন এবং সেটা মিটিগেট করার জন্য আসলে উনাদের কী কী ধরনের স্ট্র্যাটেজি হাতে নেওয়া উচিত। তো সেটার ব্যাপারে উনারা আসলে শুধু আমাদের সাথে ডিসকাস করছেন তা নয়, অন্যদের সাথে ডিসকাস করছেন।”
এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “কালকে (বুধবার) আমরা এবং পরশু (বৃহস্পতিবার) আমাদের দোতলায় (সম্মেলন কেন্দ্রে) অনেকগুলো মিটিং রুম সেটআপ করা হচ্ছে। আমাদের বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রণালয় এখানে থাকবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুরু করে এনভারনমেন্ট মিনিস্ট্রি থেকে শুরু করে এনার্জি।
“ইনফ্যাক্ট পলিটিক্যাল পার্টিরাও থাকবেন। আমরা এটাও বলেছি, ইনভেস্টর যারা বাংলাদেশে ইনভেস্ট করতে চান, তাদের যা যা প্রশ্ন থাকে তাদের রেলেভেন্ট প্রশ্নটা তারা রেলেভেন্ট ইনস্টিটিউশনকে জিজ্ঞেস করবেন। এজেন্সিকে জিজ্ঞেস করবেন। সেটাই আমাদের এক্সপেক্টেশন।”
এই সম্মেলনকে ‘নেটওয়ার্কিং সামিট’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম যে উনারা সবার সাথে কথা বলুক। সবার কাছ থেকে ইনফরমেশন গ্যাদার করুক এবং ওভারটাইম ওনাদের ডিউ ডিলিজেন্সটা যাতে হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাপারে। যাতে এটাকে নিয়ে উনারা ফেরত গিয়ে একটা একটা ফুল ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ নিয়ে ফেরত যেতে পারেন এবং হোপফুলি উনারা যদি একটা ভালো ভিউ নিয়ে ফেরত যান, তাহলে উনারা আমাদের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করবেন।”
তবে ‘এক্সেস টু ইউটিলিটিস ম্যানুফ্যাকচারারদের জন্য বড় ইস্যু’ স্বীকার করে তিনি জাতীয় জ্বালানি কৌশল তৈরির কথা তুলে ধরেন।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে কাজের আহ্বান করা হয়েছে তুলে ধরে তার ভাষ্য, “আমরা বলেছি যে আমাদের আসলে একটা ন্যাশনাল এনার্জি স্ট্র্যাটেজি থাকা দরকার। আমাদের যে কি প্ল্যান আমরা আসলে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছর আমাদের যে গ্যাসের ঘাটতি আছে, সেটাকে আমরা কিভাবে সেই ঘাটতিটা থেকে সরে আসব।”