গবেষণার জন্য ২০২০ সালের মার্চে আইএসএসে মিসো তৈরির উপাদান বিশেষ করে রান্না করা সয়াবিন, চাল ও লবণের একটি প্যাকেজ পাঠান গবেষকরা।
Published : 07 Apr 2025, 05:02 PM
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএসে প্রথমবারের মতো মিসো বানিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, জাপানিজ এই উপাদানের স্বাদ ভাল হলেও খেতে আলাদা।
নতুন এ গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র ও ডেনমার্কের গবেষকরা বলেছেন, আইএসএসে সুস্বাদু মিসো বানাতে পেরেছেন তারা। তবে এর স্বাদ ও গন্ধ পৃথিবীতে বানানো মিসোর চেয়ে আলাদা।
স্বাদের পরীক্ষায় মিসো এখনও ভাল স্কোর পেয়েছে। সুস্বাদু ও নোনতার মতো খাবারের বৈশিষ্ট্য থাকার ফলে পৃথিবীতে বানানো মিসোর মতোই এটিকে রেটিং দিয়েছেন গবেষকরা।
তবে আইএসএসে বানানো এ মিসোর স্বাদ স্বাভাবিকের চেয়ে খেতে বাদামের মতো ও ‘রোস্টেড’ বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট।
গবেষণা দলটি বলছে, তাদের গবেষণার এসব ফলাফল ‘মহাকাশের এক ধরনের প্রাকৃতিক পরিবেশেরই’ প্রতিফলন।
গবেষণার জন্য ২০২০ সালের মার্চে আইএসএসে মিসো তৈরির উপাদান বিশেষ করে রান্না করা সয়াবিন, চাল ও লবণের একটি প্যাকেজ পাঠান গবেষকরা। ৩০ দিনের জন্য সেখানে মিসোর মিশ্রণকে ফার্মেন্ট করতে দিয়েছিলেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের কেমব্রিজ ও ডেনমার্কের কোপেনহেগেনেও মিসোর মিশ্রণের ফার্মেন্ট করতে শুরু করেন গবেষকরা। আর এ প্রতিটি অবস্থার পরিবেশগত পরিস্থিতি তারা পর্যবেক্ষণ করেছেন।
এক মাস পরে আইএসএসে তৈরি মিসোকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনেন ও পৃথিবীতে বানানো মিশ্রণের সঙ্গে এটিকে বিশ্লেষণ করেন গবেষকরা।
এ গবেষণার সহ প্রধান গবেষক ও ‘টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অফ ডেনমার্ক’-এর অধ্যাপক জোশুয়া ডি ইভান্স বলেছেন, “পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে মহাকাশের পরিবেশের কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে, বিশেষ করে মাইক্রোগ্র্যাভিটি ও বাড়তি বিকিরণের মতো বিষয়, যা বিভিন্ন অণুজীবের বেড়ে ওঠা ও বিপাকে সাহায্য করে এবং এভাবে ফার্মেন্ট প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে এটি।
“আমরা মহাকাশের এমন অবস্থার নানা প্রভাব খতিয়ে দেখতে চেয়েছি।”
আইএসএসে বানানো মিসোর স্বাদ ভাজা বাদামের স্বাদের মতো, আর এতে কেবল স্বাদের পার্থক্যই ছিল না, বরং মিসোর অণুজীব গঠনেও পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা।
গবেষণা দলটি বলছে, “সার্বিকভাবে মহাকাশ বানানো আমাদের মিসো এক ধরনের মিসোই”। তবে এ গবেষণা থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, “কোনো কিছু ফার্মেন্টে ভূমিকা রাখতে পারে মহাকাশের এ নির্দিষ্ট পরিবেশ।”
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘আইসায়েন্স’-এ।