“অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কখনও ইন্টারনেট বন্ধ করবে না। এবং আগামী সরকারগুলো যাতে ইন্টারনেট বন্ধ করতে না পারে সেজন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
Published : 07 Apr 2025, 09:08 PM
ভবিষ্যতে কোনো সরকার যেন ইন্টারনেট বন্ধ করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করার আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
সোমবার বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথমদিন শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নে এক্ষেত্রে চারটি সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সেখানে আমরা চারটা সুস্পষ্ট অবস্থান আমরা জানিয়েছি, ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে আমরা কী পদক্ষেপ নিয়েছি।
“প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ইন্টারনেট যেন বন্ধ না করা হয়। এবং আমরা দেখেছি যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ে যে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছিল, আমাদের ফ্রিল্যান্সাররা, ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এবং একইসঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাংকিংয়ের ক্রেডিট রেটিংয়ে অবনমন হয়েছে।”
তিনি বলেন, “সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কখনও ইন্টারনেট বন্ধ করবে না। এবং আগামী সরকারগুলো যাতে ইন্টারনেট বন্ধ করতে না পারে সেজন্য আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে চারটা আমরা উল্লেখ করেছি।”
প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে ইন্টারনেটকে ‘নাগরিক অধিকার’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা তুলে ধরে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “এই সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে যে আমরা সাইবার সেইফটি অর্ডিন্যান্সটা পাস করব, সেখানে আমরা ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছি। যেটা আমাদের বিনিয়োগকারীদের একটা বড় ধরনের দাবি ছিল।”
ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিউর (এসওপি) ছিল, দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসাবে সেটা বাতিল করে দেওয়ার কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার এ বিশেষ সহকারী।
তিনি বলেন, তৃতীয় পদক্ষেপ হল- স্টারলিংকের নিবন্ধনকে কেন্দ্র করে সরকার যে নন–জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) গাইডলাইন করেছে, সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট বন্ধ করার মত কোনো বিধান রাখা হয়নি।
টেলিযোগাযোগ আইন থেকেও সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করতে পারার বিধান বাদ দেওয়ার কথা তুলে ধরে ফয়েজ আহমদ বলেন, “২০০১ সালের টেলিযোগাযোগ আইনের যে ধারায় ইন্টারনেট বা গেটওয়ে বন্ধ করা যায়, সেটা সংশোধন করে আমরা এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি, যেখানে ভবিষ্যতে কোনো সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করতে পারবে না।
“ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের যে উদ্বেগ, সেটাকে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।”
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন কতদূর?
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনের সম্পূর্ণ খসড়া মে মাসের মধ্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ফয়েজ আহমদ বলেন, “ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নিয়ে একটা প্রশ্ন ছিল ওদের। আমরা এটা স্পষ্ট করেছি যে, যেসব ব্যবসায়ীর কাছে খসড়াটা পৌঁছেনি, আমরা এপ্রিলের মধ্যে তাদের কাছে পৌঁছে দেব।
“আপনারা জানেন, এটা গত দুই সপ্তাহ অনলাইনে ছিল এবং বাছাইকৃত কিছু ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কাছে পাঠিয়েছি। অ্যামেরিকান চেম্বার অব কমার্সে (অ্যামচেম) এবং আর্থিক আইনজীবীদের কাছ থেকে মতামত পাওয়া গেছে।”
তাদের মতামত নিয়ে আইনটি হালনাগাদ করার কথা তুলে ধরে বিশেষ সহকারী বলেন, “এপ্রিলের শেষে আবার এটা অনলাইনে দেওয়া হবে।
“তাদের কাছে (তরুণ উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী) প্রাথমিক একটা অঙ্গীকার আমরা করেছি যে, মে মাসের মধ্যে খসড়টা সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে।”