নীতিমালা লঙ্ঘন করলে পোস্ট এডিট করা বা মুছে দেওয়ার সুযোগ পাবেন ব্যবহারকারী। ইনস্টাগ্রামের সিদ্ধান্ত সঠিক মনে না হলে তার বিরুদ্ধে আপিলও করতে পারবেন।
Published : 11 Dec 2022, 04:08 PM
নির্দিষ্ট কোনো পোস্ট অন্য ব্যবহারকারীদের দেখানো বন্ধ রাখা হয়েছে কি না, ইনফ্লুয়েন্সার ও কনটেন্ট নির্মাতাসহ সাধারণ ব্যবহারকারীদের সে বিষয়ে জানান দিতে নতুন ফিচার এনেছে ইনস্টাগ্রাম।
আগে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর কোনো পোস্ট ‘শ্যাডো ব্যান’ করা হলে বা অন্যান্য ব্যবহারকারীদের নজর থেকে আড়ালে রাখা হলে সে বিষয়ে ব্যবহারকারীকে জানান দিত না প্ল্যাটফর্মটি। তবে, ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘শ্যাডো ব্যান’ শব্দগুচ্ছটি ব্যবহারও করে না।
বিবিসি জানিয়েছে, নিজের অজান্তে প্ল্যাটফর্মের কোনো নিয়ম ভাঙার কারণে পোস্ট ‘শ্যাডো ব্যান’-এর শিকার হয়েছে কি না বা অ্যাকাউন্টের ওপর শাস্তির খড়্গ নেমে এসেছে কি না, নতুন টুলটির সুবাদে সে বিষয়ে জানতে পারবেন ব্যবহারকারী।
নতুন টুলের ঘোষণায় সময় ইনস্টাগ্রাম প্রধান অ্যাডাম মোসেরি বলেছেন, প্ল্যাটফর্মের ‘স্বচ্ছতা’ নিশ্চিত করতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ইনস্টাগ্রাম।
“আপনি যদি এমন কিছু পোস্ট করেন, যা আমাদের নীতিমালা লঙ্ঘন করছে… আপনি এমন পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন যে আপনার কনটেন্ট অন্যদের দেখানো হবে না,” ভিডিও বার্তায় বলেন মোসেরি।
নীতিমালা লঙ্ঘন করলে পোস্ট এডিট করা বা মুছে দেওয়ার সুযোগ পাবেন ব্যবহারকারী। ইনস্টাগ্রামের সিদ্ধান্ত সঠিক মনে না হলে তার বিরুদ্ধে আপিলও করতে পারবেন ওই ব্যবহারকারী।
অ্যাকাউন্টের ওপর প্ল্যাটফর্ম কোনো শাস্তিমূলক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে কি না, সে বিষয়ে জানতে প্রথমে নিজের প্রোফাইল থেকে মেনুতে যেতে হবে। তারপর ‘সেটিংস’ থেকে ‘অ্যাকাউন্ট’-এ ক্লিক করে ‘অ্যাকাউন্ট স্ট্যাটাস’ দেখতে হবে।
বিতর্ক
নর্থামব্রিয়া ইউনিভার্সিটির কনটেন্ট মডারেশন গবেষক ড. ক্যারোলিনা আর বিবিসিকে বলেছেন, অনেক আগে থেকে ইনস্টাগ্রামের সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনাগুলোর একটি ‘শ্যাডো ব্যানিং’। ব্যবহারকারীর অজান্তেই ‘হিডেন’ হয়ে যেত তাদের পোস্ট।
“প্ল্যাটফর্মটি শ্যাডো ব্যানিং প্রসঙ্গে আমাদের কিছুই জানাতো না। এমন কিছু যে ঘটে সে বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে অস্বীকার করে আসছে ইনস্টাগ্রাম।”
ইনস্টাগ্রামের জন্য নিজেও কনটেন্ট বানান ড. আর। পোল ড্যান্সিংয়ের ভিডিও বানিয়ে তিনি নিজেও ইনস্টাগ্রামে ‘শ্যাডো ব্যান’ এর শিকার হয়েছেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন।
“২০১৯ সালে পোল ড্যান্সিংয়ের ওই ভিডিওর জন্য ইনস্টাগ্রাম ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছিল আমার কাছে। তারা বলেছিল, ভুল করে হ্যাশট্যাগগুলো ব্লক করে দেওয়া হয়েছিল… যা কার্যত শ্যাডো ব্যানিং ছিল,” বিবিসিকে বলেন তিনি।
‘শ্যাডো ব্যান’-এর শিকার হয়ে নিজের অজান্তে টানা এক বছর ধরে নিজের সঙ্গেই কথা বলেছেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন রেডিটের এক ব্যবহারকারী।
তবে, এ কৌশলের ইতিবাচক দিকও আছে। এ কৌশল অবলম্বন করে ক্ষতিকর কনটেন্টের প্রচার রুখে দিতে পারে সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো; ভুয়া তথ্যের প্রচারও মোকাবেলা করা যায় সহজে।
“আমি মনে করি, নির্মাতারা শ্যাডো ব্যানিং নিয়ে খুবই শঙ্কিত। তাই ইনস্টাগ্রামের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়াটাই উচিত ছিল,” বিবিসিকে বলেছেন ড. আর।
অন্যদিকে কনটেন্টে মডারেশন প্রক্রিয়ায় রক্ত-মাংসের মানুষের হস্তক্ষেপ কমে আসায় ‘শ্যাডো ব্যানিং’ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি দাবি করেছেন, গবেষক হিসেবে ইনস্টাগ্রামে নিষেধাজ্ঞার শিকার অনেকের সঙ্গে তিনি কথাও বলেছেন। তাদের অনেকে ইনস্টাগ্রামের কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।
“আমি মনে করি এটা কিছুটা লোক দেখানো আর কিছুটা পারফর্মেন্স পরিবর্তন। যতই ভালো শোনাক, মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়া আমাদের কোনো অগ্রগতি হবে না,” বিবিসিকে বলেছেন তিনি।