টি-টোয়েন্টি
ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব একটা না খেলার পরও, তাকে জাতীয় দলে নেওয়া নিয়ে সমালোচনা করা ব্যক্তিদের পাল্টা জবাবও দিয়েছেন পাকিস্তানের এই পেসার।
Published : 05 May 2024, 01:48 AM
মোহাম্মদ আমিরের স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনার প্রায় দেড় দশক হতে চলল। তবে এখনও তার কলুষিত অতীত নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয় অনেক। এতে ভীষণ হতাশ তিনি। সম্প্রতি অবসর ভেঙে পাকিস্তান জাতীয় দলে ফেরা এই পেসারের অনুরোধ, বারবার যেন আর টেনে না আনা হয় ফিক্সিংয়ের ঘটনা।
২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা এবং কয়েক মাসের কারাদণ্ড ভোগ করার পর ২০১৬ সালে জাতীয় দলে ফেরেন আমির। তাকে ফেরানোয় তখনও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কম সমালোচনা হয়নি।
পরের বছর পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি। তবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ‘টিম ম্যানেজমেন্টের মানসিক নির্যাতন’ ও প্রচণ্ড চাপকে কারণ দেখিয়ে আচমকাই তিনি বিদায় বলে দেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে।
আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার লক্ষ্যে গত মার্চে অবসর থেকে ফেরার ঘোষণা দেন আমির। পরের মাসে ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে ফেরানো হয় তাকে। তার ফেরার সঙ্গে ফিরে আসে ফিক্সিংয়ে জড়ানো ক্রিকেটারদের নিয়ে পুরোনো বিতর্কও।
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক বোর্ড প্রধান রামিজ রাজা বলেন, ফিক্সিংয়ে জড়ানো ক্রিকেটারদের কখনই জাতীয় দলে ফেরানো উচিত নয়। নিজের ছেলে এমন কাণ্ড করলে তাকেও ত্যাজ্য করতেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
করাচিতে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে অতীত টেনে না আনতে সবার প্রতি আহ্বান জানান ৩২ বছর বয়সী আমির।
“সেই বড় ভুলের জন্য আমি শাস্তি ভোগ করেছি। যদি আমার ক্যারিয়ারের দিকে তাকান, আমি ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিলাম এবং ২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত অবসরে ছিলাম, তাই আমি ৯টি বছর হারিয়েছি, তবে সবকিছুকে আমি আল্লাহর ইচ্ছা হিসাবে মেনে নিয়েছি এবং সামনে এগিয়ে চলেছি।”
নিউ জিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে আমিরের পাশাপাশি অবসর ভেঙে পাকিস্তান দলে ফেরেন অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিমও। ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব একটা না খেলিয়ে তাদের সরাসরি জাতীয় দলে নেওয়া নিয়েও সমালোচনা হয় অনেক। পাকিস্তানের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) অবশ্য ভালো করেছেন তারা। আমির তাই সমালোচনাকীদের কাছে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়লেন।
“ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলার পরও আমাকে ও ইমাদকে জাতীয় দলে নির্বাচন করা নিয়ে কিছু লোক অনেক সমালোচনা করেছে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করি, পাকিস্তানের প্রধান ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট কোনটা? পিএসএল। আর আমরা দুজন পিএসএলে খেলেছি এবং পারফর্ম করার পাশাপাশি অন্যান্য লিগেও নিয়মিত খেলছি। তাহলে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের জন্য আমাদের দলে নির্বাচন করতে দোষ কোথায়?”
বাঁহাতি পেসার আমির মনে করেন, নির্বাচকরা যদি তাদের দুজনকে টেস্ট বা ওয়ানডের জন্য দলে নিত তাহলে বড় ভুল হতো।
“আমি নিজে সবসময় বলেছি, জাতীয় দলে বিবেচনার জন্য খেলোয়াড়দের অবশ্যই ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এবং অন্যান্য টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু আমাদের দুজনের ক্ষেত্রে, আমরা শুধুমাত্র টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলছি এবং আমাদের ফর্ম এবং ফিটনেস সবাই দেখুক।”
পাকিস্তানের হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৬ টেস্ট, ৬১ ওয়ানডে ও ৫৪ টি-টোয়েন্টি খেলা আমির জানালেন, গত বছর পাকিস্তানের তখনকার টিম ডিরেক্টর ও সাবেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ তাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, তিনি অবসর ভেঙে ফেরার কথা বিবেচনা করবেন কি-না।
“তিনি (হাফিজ) বলেছিলেন, আমি এখনও পাকিস্তানের হয়ে খেলতে পারি। তবে আমি তাকে বলেছিলাম, ক্রিকেট বোর্ড এবং দলের অনিশ্চয়তার কারণে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে চাই।”