ভূমিকম্পের নোটো উপদ্বীপ অঞ্চলে কার্যক্রম বন্ধ করেছে শিন-এতসু ও গ্লোবাল ওয়েফার্স। কারণ সেখানকার মাটিতে অবস্থিত ক্রিস্টালের ওপরই কোম্পানির যাবতীয় কাজ নির্ভর করে।
Published : 03 Jan 2024, 04:24 PM
নতুন বছরের প্রথম দিনে শক্তিশালী ভূমিকম্পের মুখে পড়েছে জাপান। ফলে, দেশটির নোটো অঞ্চলের বিভিন্ন সেমিকন্ডাক্টর কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
তাইওয়ানভিত্তিক বিশ্লেষক কোম্পানি ‘ট্রেন্ডফোর্স’ বলছে, জাপানে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক এ ভূমিকম্পে নোটো অঞ্চলে থাকা কারখানাগুলোর কাজ সাময়িক বন্ধ করা হলেও সে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব। ভূমিকম্পপ্রবণ দেশটিতে এর আগেও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিভিন্ন কারখানার কাজে ব্যাঘাত ঘটতে দেখা গেছে। তবে, এবারের ভূমিকম্পের প্রভাবকে ‘নিয়ন্ত্রণযোগ্য’ বলে আখ্যা দিয়েছে বিশ্লেষক কোম্পানিটি।
সোমবার জাপানের নোটো উপদ্বীপে অবস্থিত ইশিকাওয়া প্রদেশে সাড়ে সাত মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। স্থানীয় সময়ের হিসাবে, এর সূত্রপাত ঘটে পয়লা জানুয়ারি বিকেলে। এখন পর্যন্ত ৫৭ জন নিহত হয়েছেন এ ঘটনায়। আর এখনও হতাহতদের উদ্ধারকাজ চলছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সংবাদ সাইট নিওউইন।
চিপের যন্ত্রাংশ যেমন ‘মাইক্রো লিড-ফ্রেম চিপ ক্যারিয়ার’ বা ‘এমএলসিসি’র নির্মাতা ‘তাইয়ো ইউডেন’, ‘সিলিকন ওয়েফার’ উৎপাদক কোম্পানি শিন-এতসু, গ্লোবাল ওয়েফার্স, তোশিবা ও টিপিএসসিও’সহ বেশ কিছু কোম্পানির নিজস্ব কারখানা রয়েছে ওই এলাকায়।
ভূমিকম্পের পরপরই ওই এলাকায় কার্যক্রম বন্ধ করেছে শিন-এতসু ও গ্লোবাল ওয়েফার্স। কারণ সেখানকার মাটিতে অবস্থিত ক্রিস্টালের ওপরই কোম্পানির যাবতীয় কাজ নির্ভর করে। আর ভূমিকম্পে এলাকার মাটির অবস্থান আকস্মিক পরিবর্তনের কারণে নিজেদের কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কোম্পানিগুলো।
তবে ট্রেন্ডফোর্স বলছে, কোম্পানিগুলোর সিংহভাগ কাজ জাপানের ফুকুশিমা অঞ্চলে। তাই, নোটোতে আঘাত হানা ভূমিকম্পে সেইসব কোম্পানির কাজে তেমন প্রভাব পড়েনি।
একইভাবে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য জাপানের উওজু, টোনামি ও আরাই শহরের কারখানাগুলো বন্ধ করেছে চিপ নির্মাতা কোম্পানি ‘টিপিএসসিও’। একইভাবে কাগা শহরের কারখানা পর্যবেক্ষণে রেখেছে তোশিবা।
দেশটির আরেক প্রযুক্তি কোম্পানি ‘তাইয়ো ইউডেন’ বলছে, তাদের নিগাতা শহরে কারখানা সাত মাত্রা পর্যন্ত ভূমিকম্প সহ্য করতে সক্ষম। ফলে, সে কারখানা ক্ষতির মুখে পড়েনি।
ট্রেন্ডফোর্স বলছে, তাদের বিশ্বাস ভূমিকম্পের প্রভাবে কোম্পানিগুলোর যে ক্ষতি হয়েছে তা তারা কাটিয়ে উঠতে পারবে। তবে, এখন অফ সিজন হওয়ায় ক্ষতিপূরণে কোম্পানিগুলোর সময় পাবে।
ট্রেন্ডফোর্স ধারণা প্রকাশ করেছে, জাপানের সব কোম্পানিই এ ভূমিকম্পের প্রভাব সামাল দিতে পারবে। সাইটটি আরও বলছে, সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের মন্দা ও চলমান অফ-পিক সিজনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে এ ধাক্কা কাটানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় পাবে কোম্পানিগুলো।
ট্রেন্ডফোর্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাপানের বেশিরভাগ কারখানা বিভিন্ন এমন এলাকায়, যেখানে এর আগে চার থেকে পাঁচ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। ফলে, এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই কারখানা তৈরি করেছে কোম্পানিগুলো। যে কারণে ভূমিকম্পের মুখে পড়লেও সম্ভাব্য ক্ষতির ঝুঁকি কম।
এদিকে, ২০২৪ সালের পিসি বিক্রি শুরুর পরপরই বিভিন্ন সরবরাহক কোম্পানি নিজেদের কারখানায় থাকা অতিরিক্ত পণ্যগুলো সরিয়ে ফেলতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে নিওউইন। আশা করা হচ্ছে, গ্রাহকদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার আগেই কোম্পানিগুলো এ সমস্যা সমাধান করে ফেলবে।