মার্কিন চিপ জায়ান্ট ‘মাইক্রন টেকনোলজি’র তৈরি পণ্যকে নিজ দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন।
রোববার দেশটির সাইবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ঘোষণা দেয়, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় চিপ নির্মাতা কোম্পানিটি চীনের ‘নেটওয়ার্ক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ বহন করে।
এর মানে দাঁড়ায়, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলোয় মাইক্রনের বিভিন্ন পণ্য ব্যবহার নিষিদ্ধ হবে।
বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন চিপ নির্মাতা কোনো কোম্পানির বিরুদ্ধে এই প্রথম কোনো পদক্ষেপ নিল চীন।
“পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাইক্রনের পণ্যগুলোর মধ্যে গুরুতর নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে, যা চীনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাপক নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে ও দেশের জাতীয় নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলে।” --এক বিবৃতিতে বলেছে ‘সাইবারস্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ চায়না (সিএসি)’।
তবে, মাইক্রনের বিভিন্ন পণ্যে বা নিজেদের খুঁজে পাওয়া ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি সিএসি।
এদিকে, চীনে বিক্রি হওয়া মাইক্রন পণ্য পর্যালোচনার পর সিএসি’র নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন মাইক্রনের এক মুখপাত্র।
“আমরা এই সিদ্ধান্ত ও নিজেদের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো মূল্যায়ন করে দেখছি। পাশাপাশি, আমরা চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যেতে আগ্রহী।” --যোগ করে কোম্পানিটি।
এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন সরকার বলেছে, ‘চীনের কর্মকাণ্ডে মেমরি চিপ বাজারের বাজে অবস্থা’ তুলে ধরতে তারা মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করবে।
“আমরা দৃঢ়ভাবে এই ধরনের ভিত্তিহীন বিধিনিষেধের বিরোধিতা করি।” --বলেন মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের এক মুখপাত্র।
“এই পদক্ষেপের পাশাপাশি সাম্প্রতিক বিভিন্ন অভিযান ও অন্যান্য মার্কিন কোম্পানিকে শিকার বানানোর প্রচেষ্টা চীনের ‘নতুন বাজার খোলা ও স্বচ্ছ নিয়ন্ত্রক কাঠামোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া’ দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন।”
সিএসি’র এই ঘোষণাকে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে চলমান বিরোধের সর্বশেষ পরিস্থিতি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে বিবিসি। অন্যদিকে, চীনের চিপ নির্মাণ শিল্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকেও বেশ কিছু ব্যবস্থা আরোপ করতে দেখা গেছে।
জি৭ নেতাদের বৈঠকের একদিন পরই সিএসি’র ঘোষণা এলো। আর ওই বৈঠকে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে চীন ও দেশটির ‘অর্থনৈতিক বাধ্যবাধকতার’ ব্যবহার নিয়ে সমালোচনা করে জাপান।
রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, জি৭ সদস্যভুক্ত দেশগুলো ‘চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে ঝুঁকিমুক্ত ও বৈচিত্র্যময়’ করতে চায়।
“এর মানে নিজস্ব সরবরাহ চেইনে বৈচিত্র্য আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে আমাদের।” --যোগ করেন তিনি।
হিরোশিমায় আয়োজিত ওই সম্মেলনে ব্যবসায়ী নেতাদের দলের অংশ হিসেবে যোগ দেন মাইক্রনের প্রধান নির্বাহী সানজে মেহরোত্রা।
গত সপ্তাহে কোম্পানিটি বলেছে, জাপানে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বিকাশের জন্য তারা প্রায় তিনশ ৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।