“আমরা কেবল বর্তমানের বিভিন্ন প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করব ও তা যাদুকরীভাবে মানুষের পর্যায়ের বুদ্ধিমত্তায় পৌঁছে যাবে– এমন ধারণাটি ভুল।”
Published : 25 Mar 2025, 03:28 PM
বিশ্বে প্রথমবারের মতো ‘ডিজিটাল স্নায়ুতন্ত্র’ তৈরির দাবি করেছেন এআই প্রকৌশলীরা। তারা বলছেন, রোবটকে বাস্তব দুনিয়ায় শারীরিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে মানুষের মতোই শিখতে সাহায্য করবে এই প্রযুক্তি।
এর মাধ্যমে তৈরি ‘লুনা’ নামের এক রোবট কুকুর উন্মোচন করেছে সুইডিশ স্টার্টআপ ‘ইন্টুইসেল’। মানুষের জৈবিক আচরণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি এক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এটি বানিয়েছেন গবেষকরা।
প্রযুক্তিটি রোবটটিকে দক্ষতা শিখতে, পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটিকে উন্নত করতে সাহায্য করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
ভিডিওতে দেখা গেছে, আগে থেকে কোনও প্রশিক্ষণ ছাড়াই রোবটটি দাঁড়াতে শিখছে, ঠিক যেমন কোনো নবজাতক জিরাফ জন্মের পর হাঁটার চেষ্টা করে তার মতোই।
ইনটুইসেল-এর প্রধান নির্বাহী ভিক্টর লুথম্যান বলেছেন, “আমরা প্রথমবারের মতো এমন এক সফটওয়্যার তৈরি করেছি যা যে কোনও মেশিনকে মানুষ বা প্রাণীর মতো শিখতে সাহায্য করবে। একইসঙ্গে নতুন বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা সমাধান ও বাস্তব সময়ে অপ্রত্যাশিত নানা পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতেও সহায়তা করবে এটি।”
“এজন্য আগে থেকে এর কোনও প্রশিক্ষণ, সিমুলেশন ও লেবেলওয়ালা ডেটা দেওয়ার প্রয়োজন নেই... বুদ্ধিমত্তা এমন কিছু নয়, যেখানে আমরা পর্যাপ্ত ডেটা যোগ করলে বা হিসাব করলে যাদুকরীভাবে বেরিয়ে আসবে। এটি শুরু থেকেই থাকা দরকার।
“আমরা আজকের এআই বনাম আগামীকালের এআই নিয়ে কথা বলছি না। আমরা মেশিন লার্নিং বনাম জৈবিক বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কথা বলছি, যা এখন প্রথমবারের মতো সফটওয়্যারে রূপান্তরিত হয়েছে। এসব মেশিন কেবল দ্রুত ধরনই প্রক্রিয়া করে না, বরং সত্যিকার অর্থেই শেখে ও মানিয়ে নেয়।”
ইন্টুইসেল-এর দাবি, ডিজিটাল স্নায়ুতন্ত্র শারীরিক ও ডিজিটাল উভয় মেশিনকেই বর্তমান রোবট ও এআই সিস্টেমের নানা সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে, যা বানানো হয়েছে বড় আকারের বিভিন্ন ডেটাসেটের ওপর তৈরি আগে থেকে প্রশিক্ষিত মডেল ব্যবহার করে।
এ নতুন পদ্ধতিটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের পর্যায়ের বুদ্ধিমত্তায় রূপান্তরিত হতে পারে, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য “নতুন এক পরিবর্তন আনবে”, বলেছেন লুথম্যান।
“আমরা কেবল বর্তমানের বিভিন্ন প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করব ও তা যাদুকরীভাবে মানুষের পর্যায়ের বুদ্ধিমত্তায় পৌঁছে যাবে– এমন ধারণাটি ভুল।”
“এখনকার এআই যেভাবে শিখছে সেখানে কোনো পরিবর্তন হবে না। বরং এটি কেবল কতটা ভালো ভবিষ্যদ্বাণী করে তার উন্নয়ন করবে। এতে করে কর্মক্ষমতা বাড়লেও এটি বাস্তব দুনিয়ায় বুদ্ধিমত্তারর সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আমরা সেখানেই সফল হয়েছি।
এ প্রযুক্তিটি বাস্তব দুনিয়ায় কোথায় ব্যবহৃত হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত নন লুথম্যান। তবে তিনি দাবি করেছেন, এ বিষয়টি ঠিক ১৯৯০ সালের বাস্তবতায় ভবিষ্যত বিশ্বে ইন্টারনেট কীভাবে ব্যবহার করা হবে তা ভবিষ্যদ্বাণী করার মতোই।
গবেষকরা বলছেন, এ প্রযুক্তির প্রয়োগের মধ্যে রয়েছে হিউম্যানয়েড রোবট, যা কোনও ঘরবাড়ি পরিষ্কার করতে, হাসপাতালে সহায়তা করতে বা গাড়ি চালানো শিখতে পারে।