আর্টিমিসের জন্য ‘মুন ল্যান্ডার’ বানাবেন বেজোস: নাসা

স্পেসএক্স-এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে কোম্পানিটির পেছনে শত কোটি ডলারের বেশি আর্থিক বিনিয়োগ করেছেন অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা বেজস।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2023, 12:04 PM
Updated : 21 May 2023, 12:04 PM

আর্টেমিস প্রকল্পের অধীনে চন্দ্রযান তৈরি করতে যাওয়া দ্বিতীয় কোম্পানি হিসেবে মার্কিন ধনকুবের জেফ বেজোসের ‘ব্লু অরিজিনের’ নাম ঘোষণা করেছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

নাসার এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো ৫০ বছরের বেশি সময় আগের সফল  মহাকাশ অভিযানের পুনরাবৃত্তি করা। ১৯৭২ সালে সর্বশেষ মানুষ চাঁদে নেমেছিল।

এ লক্ষ্যে ২০২১ সালে নাসা প্রথমে ইলন মাস্কের বাণিজ্যিক রকেট কোম্পানি স্পেসএক্সের সঙ্গে তিনশ কোটি ডলারের বিনিময়ে এই চুক্তি করলেও সে সময় এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত প্রকাশ করেন বেজোস।

“আমরা আরও বেশি প্রতিযোগী দেখতে চাই। আমরা এমনকি চাঁদে দুটো ল্যান্ডার নামতে দেখতে চাই।” – শুক্রবার ওয়াশিংটনে এক আয়োজনে বলেন নাসার পরিচালক বিল নেলসন।

“এর মানে, আপনার কাছে প্রয়োজনীয় নির্ভরযোগ্যতা ও সমর্থন থাকলে, তা নাসা ও মার্কিন জনগণেরও কাজে দেবে।”

নাসার এই ঘোষণা ‘অ্যামাজন ডটকমের’ প্রতিষ্ঠাতা বেজোস ও অ্যারোস্পেস কোম্পানি ‘নরথ্রপ গ্রামেন’-এর শীর্ষ অংশীদার ‘ডাইনাটিক্স’-এর কাছে ‘ডেজা ভু’র (এরইমধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা পুনরায় দেখার অনুভূতি) মতো পরিস্থিতি হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ‘ইন্ডিপেন্ডেট’।

প্রাথমিকভাবে ‘মুন ল্যান্ডার’ কেনার প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২০২১ সালে স্পেসএক্সের কাছে চুক্তি হারিয়েছিল এইসব কোম্পানি। নাসা এই প্রকল্পের অধীনে দুটি কোম্পানি নেওয়ার কথা বললেও, বাজেটের ঘাটতিকে কারণ দেখিয়ে সে সময় কেবল স্পেসএক্স-এর সঙ্গে চুক্তি করে সংস্থাটি।

নতুন চুক্তিটি ব্লু অরিজিনের এযাবতকালের সবচেয়ে বড় চুক্তি হতে যাচ্ছে। ২০০০ সালে এই কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন বড় বাণিজ্যিক ও সরকারী চুক্তি পাওয়ার উদ্দেশ্যে স্পেসএক্স-এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে কোম্পানিটির পেছনে শত কোটি ডলারের বেশি আর্থিক বিনিয়োগ করেছেন অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা বেজস।

২০২১ সালে চুক্তি হারানোর পর প্রথমে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও পরবর্তীতে আদালতে গেলেও নাসার ‘ব্লু মুন ল্যান্ডার তৈরির পরিকল্পনা এড়ানোর’ সিদ্ধান্ত পাল্টাতে পারেনি ব্লু অরিজিন।

মহাকাশে বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতার প্রচারণা ও চাঁদে যাত্রার জন্য ‘বদলী’ যান নিশ্চিত করতে নাসার কাছ থেকে দ্বিতীয় ‘মুন ল্যান্ডার’ চুক্তি পেতে মহাকাশ সংস্থাটিকে ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছিল ব্লু অরিজিন ও আইন প্রণেতারা। এর ফলে, ২০২২ সালের শুরুতে প্রকল্পের জন্য দ্বিতীয় ল্যান্ডার চুক্তির ঘোষণা দেয় নাসা।

“আমি প্রতিযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আর এখন তা সত্যি হতে যাচ্ছে।” --সে সময় বলেন নাসা প্রধান বিল নেলসন।

এরইমধ্যে চন্দ্রযানটির বাণিজ্যিক অংশীদার কোম্পানিগুলোর ঘোষণা দিয়েছে ব্লু অরিজিন। এর মধ্যে রয়েছে ‘লকহিড মার্টিন’, ‘বোয়িং’, মহাকাশযান ভিত্তিক সফটওয়্যার কোম্পানি ‘ড্রেপার’ ও রোবটিক কোম্পানি ‘অ্যাস্ট্রোরোবটিক’।

২০২১ সালে নর্থথ্রপ গ্রামেন ব্লু অরিজিনের এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে থাকলেও পরবর্তীতে দল পাল্টে প্রতিদ্বন্দ্বী ডাইয়েন্টিক্সের সঙ্গে যোগ দেয় কোম্পানিটি।

আর্টেমিসের জন্য নাসার একাধিক নভোযান পাঠানোর পরিকল্পনায় রয়েছে, ‘স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (এসএলএস)’ রকেট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে লকহিড মার্টিনের তৈরি ‘ওরিয়ন’ ক্যাপসুলে চড়ে চাঁদের উদ্দেশ্যে নভোচারী পাঠানো। আর একটি মুন ল্যান্ডারের মাধ্যমে নভোচারীরা চন্দ্রপৃষ্ঠে পাড়ি জমাতে পারবেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট।