স্পাইওয়্যার কোম্পানির বিস্তার নিয়ে সতর্কবার্তা গুগলের

“বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যার নির্মাতারা যে পরিমাণে হ্যাকিং ও স্পাইওয়্যার সক্ষমতা বাড়িয়েছে তা সার্বিকভাবে ইন্টারনেট নিরাপত্তাকে দুর্বল করে তুলেছে।”

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2024, 11:17 AM
Updated : 7 Feb 2024, 11:17 AM

বিপজ্জনক হ্যাকিং টুলের ব্যবহার আরও সহজ করছে বলে বেশ কিছু সফটওয়্যার কোম্পানির সমালোচনা করেছে সার্চ জায়ান্ট গুগল।

পাশাপাশি, স্পাইওয়্যার খাতে লাগাম টানতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রকে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতেও আহ্ববান জানিয়েছে কোম্পানিটি।

স্পাইওয়্যার কোম্পানিগুলো প্রায়ই বলে তাদের বিভিন্ন পণ্য জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন দেশের সরকার ব্যবহার করে থাকে। তবে, গত এক দশকে সাধারণ মানুষ, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সাংবাদিকদের ফোন হ্যারাজনৈতিক হ্যাকিংয়ে বারবার এ প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।

এ ছাড়া, ইসরায়েলি কোম্পানি ‘এনএসও’-এর ‘পেগাসাস’ স্পাইওয়্যার মানবাধিকার কর্মীসহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মানুষের ফোনে পাওয়ার পর থেকেই এ ধরনের সফটওয়্যারের বিরুদ্ধে তদন্ত বেড়েই চলেছে।

‘এনএসও’ কোম্পানিটি এ ক্ষেত্রে বিশেষ পরিচিত হলেও সফটওয়্যারভিত্তিক গুপ্তচর প্রযুক্তির বিস্তারে কয়েক ডজন ছোট কোম্পানিও সক্রিয় রয়েছে বলে গেল মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে বলেছেন গুগলের গবেষকরা।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, অ্যালফাবেট মালিকানাধীন গুগলের অনুসন্ধানগুলো গুরুত্বপূর্ণ কারণ কোম্পানিটির অনলাইন বিস্তৃতির ফলে বিশব্যাপী হ্যাকিং কার্যক্রমের ওপরে বিশেষ নজর রয়েছে তাদের।

“সরকারি গ্রাহকদের চাপ অনেক বেড়েছে। আর আমাদের অনুসন্ধান বলছে, বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যার নির্মাতারা যে পরিমাণে হ্যাকিং ও স্পাইওয়্যার সক্ষমতা বাড়িয়েছে তা সার্বিকভাবে ইন্টারনেট নিরাপত্তাকে দুর্বল করে তুলেছে।", – প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছেন গুগলের ট্যাগ থ্রেট-হান্টিং টিমের গবেষকরা। 

“এখন বেসরকারি খাত আমাদের শনাক্ত করা সবচেয়ে উন্নত মানের টুলগুলোর বড় অংশের জন্য দায়ী।”

গুগল গবেষকরা এমন বেশ কয়েকটি কোম্পানির নাম বলেছেন যেগুলো ফোন হ্যাকিংয়ের সেবা দেয়। অ্যাপল ও গুগলের অপারেটিং সিস্টেম ‘আইওএস’ ও ‘অ্যান্ড্রয়েডে’র সর্বশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা এড়াতে এ সেবাগুলো ক্রমাগত উন্নত করা হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স৷

এসব স্পাইওয়্যার কোম্পানির মধ্যে রয়েছে, ইতালীয় কোম্পানি ‘সাই৪গেইট’ ও ‘আরসিএস ল্যাবস’, গ্রিক কোম্পানি ‘ইন্টেলেক্সা’ ও স্বল্প পরিচিত ইতালীয় কোম্পানি ‘নেগ গ্রুপ’, আর স্পেনের ‘ভ্যারিসটন’।

‘নেগ গ্রুপের ওয়েবসাইট বলে কোম্পানিটি সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে। তবে, গুগল বলেছে, তাদের সফটওয়্যার ইতালি, মালয়েশিয়া ও কাজাখস্তানের নাগরিকদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তির জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।

ভ্যারিসটন এমন সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা ‘গুগল ক্রোম’, ‘মজিলা ফায়ারফক্স’ বা ‘আইওএস’ অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ফোনে অনুপ্রবেশ করে। ‘প্রোটেক্টেড এই’ বা ‘প্রোটেক্টেড ইলেক্ট্রনিক সিস্টেম’ নামে পরচিত আরেকটি কোম্পানির কথা উল্লেখ করে গুগল বলেছে, তারাও একই ধরনের কৌশল ব্যবহার করে।

এ পাঁচটি কোম্পানি হয় মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি, বা তাদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে লিখেছে রটার্স।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন ভিসা নীতি প্রকাশের পরদিনই গুগলের এ প্রতিবেদন এল। ওই নীতিতে বাণিজ্যিক স্পাইওয়্যার অপব্যবহার বা অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত বা এ থেকে লাভবান হয় এমন ব্যক্তিদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের নীতি রয়েছে।