“বোর্ড অব ট্রাস্টিজ কাউকে প্রশাসনিক দায়িত্ব দিলে সমাধান আসবে বলে আশা করছি।”
Published : 28 Apr 2025, 12:55 AM
‘অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি’ বিবেচনায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে উপাচার্য ও ১১ বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগের ঘটনার মধ্যে এ সিদ্ধান্তের কথা জানাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুক পেইজের এক পোস্টে রেজিস্টারের বরাতে বলা হয়, “অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি বিবেচনায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।”
এদিকে উপাচার্য আবুল কাসেম মিয়া ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান নুরুল হুদা ছাড়া ১০ বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগ প্রত্যাহারের দাবিতে রোববার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আন্দোলন করেন একদল শিক্ষার্থী।
মিডটার্মের সময় আগের মত ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট নির্ধারণ ও ‘ইমপ্রুভমেন্ট ফি’ কমানোসহ একগুচ্ছ দাবিও জানান তারা।
এর আগে এক শিক্ষার্থীর মিডটার্ম দিতে না পারা, মিডটার্ম পরীক্ষার সময় কমানো এবং ইমপ্রুভমেন্ট ফি না কমানোর ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ আন্দোলন শুরু করেন।
এছাড়া সিএসসি বিভাগের চেয়ারম্যানের পদত্যাগে দুপুর ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়ার পরও প্রশাসনের সাড়া না পাওয়ায় তারা ভিসির পদত্যাগের দাবি জানান।
তখন ভিসিসহ অন্যান্য শিক্ষকরা ভিসির কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে রাতে ভিসি এবং ১১ বিভাগীয় প্রধান একযোগে পদত্যাগ করেন।
এরপর ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে জিম্মি করতেই সব বিভাগীয় প্রধান পদত্যাগ করেছেন’ অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা ভিসিসহ অন্যান্য শিক্ষকদের ফের অবরুদ্ধ করেন। তারা ভিসির পদত্যাগপত্রের ভাষা সংশোধনের দাবিও তোলেন। দফায় দফায় আলোচনার পর রাত সাড়ে ৪টায় ভিসি ও অন্যান্য শিক্ষকদের ক্যাম্পাস থেকে যেতে দেওয়া হয়।
আন্দোলন শিক্ষার্থীদের একজন মোহাইমিনুল ইসলাম রোববার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববার দুপুর থেকে আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করতে থাকি। আমরা ভিসি ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ছাড়া অন্যান্য বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগ প্রত্যাহার চেয়েছি।
“তারা মৌখিকভাবে আমাদের বলেছেন, পদত্যাগ প্রত্যাহার করবেন। তবে তারা তা প্রত্যাহার করেছেন কিনা, তা নিশ্চিত নই। বিকালে আমরা ক্যাম্পাস থেকে চলে এসেছি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দাবি দাওয়া সংগ্রহ করেছি।”
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী সায়েম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার মিডটার্মের সময় পৌনে দুই ঘণ্টা পুনর্নিধারণ, ক্রেডিট প্রতি ১৫০০টাকা ইমপ্রুভমেন্ট ফি কমিয়ে মিডটার্মের জন্য বিষয়প্রতি ২০০০টাকা ও ফাইনালের জন্য ৩০০০টাকা নির্ধারণসহ বেশ কয়েক দফা দাবি জানাচ্ছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার পরিচালক আবু সা-দাত মো. মুনতাসির বিল্লা সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল রাত সাড়ে ৪টার পর ভিসি ও অন্যান্য শিক্ষকরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারেন।
“রোববার শিক্ষার্থীরা ১০ জন বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগ প্রত্যাহার দাবি করেছেন। পদত্যাগের বিষয়টি শিক্ষকদের ব্যক্তিগত। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি বলেন, “রোববার ক্যাম্পাসে ক্লাস হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ থেকে প্রশাসনিক পদের দায়িত্ব কাউকে হস্তান্তর করা হলে অন্যান্য বিষয়ে সমাধান আসবে বলে আশা করছি।”
আরও পড়ুন