একটা সময় ছিল যখন বিভিন্ন কোম্পানির সিইও’রা জনসাধারণের পাশাপাশি নিজস্ব শেয়ারহোল্ডারদের কাছে ৫জি তুলে ধরতেন সম্ভাবনাময় বিষয় হিসেবে।
Published : 08 Jan 2023, 06:26 PM
কোভিড নিয়ে যখন কঠিন অবস্থা তখনও আয়োজন চালিয়ে যাওয়া ‘সিইএস’ প্রযুক্তি মেলা এতোদিন বিবেচিত হয়েছে ‘৫জি কেন্দ্রীক এক বড় মিলনমেলা’ হিসেবে। তবে, এবারের আয়োজনে নানা পদের স্ক্রিন, গাড়ি ও স্মার্ট হোম-ভিত্তিক পণ্যের আধিক্যে ৫জি হয়ে গিয়েছে পেছনের বেঞ্চের বিষয়।
প্রতিবেদন বলছে, এটি নিয়ে তেমন কথাও হয়নি আয়োজনে।
২০১৯ ও ২০২১ সালের ‘কি নোটে’ ৫জি সম্পর্কে প্রায় একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছিলেন ভেরাইজন সিইও হ্যান্স ভেস্টবার্গ। সে সময় তিনি বলেন, ৫জি সম্ভবত বিভিন্ন জটিল সার্জারি, স্ব-চালিত গাড়ি, অগমেন্টেড রিয়ালিটি’সহ বেশ কিছু সংখ্যক প্রযুক্তির সম্ভাবনা সক্রিয় করে তুলতে পারে।
২০২২ সালের কি নোটে টি-মোবাইল সিইও মাইক সাইভার্টের বক্তব্য দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ায় সেটি আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে, ২০২৩ সালের বক্তব্যগুলোয় খুব কমই উঠে এসেছে ৫জি’র কথা।
এর কারণ কী? ৫জি-তে গ্রাহককে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সকল সুবিধাই বাস্তবায়িত হয়েছে, বিষয়টি এমন নয়। আর এমন পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি, যেখানে কেউ একটি পুরোপুরি স্বয়ং গাড়িতে চড়ে রোবটের মাধ্যমে সার্জারি করাতে যাবেন। সর্ব সাকুল্যে, এটি ৪জি নেটওয়ার্কের তুলনায় দ্রুতগতিতে কাজ করে।
তবে, এই আলোড়ন বন্ধ হওয়ার কারণ কী?
শুরুতেই বলে রাখা ভালো, এর বিভিন্ন সুবিধার কথা শুনতে শুনতে অনেকেই বিরক্ত হয়ে পড়েছেন। আর এই ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলার বছরখানেক পর, সেটি নিয়ে কথা না বলার নজির আগেও মিলেছে সিইএস আয়োজনে। এর উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, ৩ডি হোম থিয়েটার।
আর ৫জি’র সংবাদযোগ্যতারও একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। এটি যখন থেকে একটি প্রচলিত তারবিহীন প্রযুক্তি হয়ে উঠবে, এর পর থেকেই ‘৫জি নতুন কিছু’ এমন ধারণারও সমাপ্তি ঘটবে। তখন এটি কেবল ‘ওয়াইফাই না থাকলে গ্রাহকের ব্যবহৃত ইন্টারনেট’ হিসেবেই বিবেচিত হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ।
এটি এখন নতুন কোনো ‘বিশেষ সেবা’ নয়; বরং ডিফল্ট অপশন
একটা সময় ছিল যখন বিভিন্ন কোম্পানির সিইও’রা জনসাধারণের পাশাপাশি নিজস্ব শেয়ারহোল্ডারদের কাছে ৫জি তুলে ধরতেন সম্ভাবনাময় বিষয় হিসেবে। ৫জি ছিল প্রেজেন্টেশনে বিক্রয়যোগ্য পণ্য। এটি এখন আর ‘বিশেষ সেবা’ নয়; বরং একে ডিফল্ট অপশন হিসেবেই (অন্তত যুক্তরাষ্ট্রে) ভেবে বসে আছেন অনেকে। এখন এই মেলার আয়োজক দেশটির সকল ফোনেই ৫জি সুবিধা থাকে। আর মধ্যমানের ৫জি অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অংশেই ছড়িয়ে পড়েছে।
ভার্জ বলছে, দেশটির কোনো ওয়্যারলেস স্টোরে নতুন ফোন কিনতে বা নতুন কোনো সেবায় সাইন আপ করতে গেলে ৫জি ডিভাইস বা পরিকল্পনা না কিনে ওই স্টোর থেকে বের হওয়া গ্রাহকের জন্য জটিলই হবে।
আর এখন বিভিন্ন ৫জি ফোন ও নেটওয়ার্ক হাতের নাগালে চলে আসার পরও তেমন কিছুই বদলায়নি। সম্ভবত, বিভিন্ন ওয়েব পেইজ তুলনামূলক দ্রুত লোড হয়। তবে, রোবট সার্জারির মতো বিষয়গুলোর ‘ছিটেফোঁটাও’ এখনও আসেনি।
তবে, মূল বিষয় হলো, ৫জি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। এই প্রযুক্তি নিয়ে এতো আগ্রহ চাউর হলেও এটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হতে অনেক বছর লাগতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ভার্জ।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের যুগে ৫জি কেবলই প্রবেশ করেছে। আর এর ওয়্যারলেস ডেটা সম্পর্কিত বিভিন্ন কথাবার্তাও অনেকের কাছে বিরক্তিকর মনে হয়। সে কারণেই, এবারের আয়োজনে তুলনামূলক বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়েছে স্ব-চালিত গাড়ি, অগমেন্টেড রিয়ালিটি এবং বিভিন্ন স্মার্ট শহর ও শিল্পে ‘আইওটি’ বাড়ানোর দিকে।
২০২২ সালের শেষ নাগাদ দুইজন নেটওয়ার্ক নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলেছেন ভার্জের প্রতিবেদক। তারা বলেন, ব্যবহারকারীর কাছাকাছি চলমান বিভিন্ন নেটওয়ার্কের কার্যকারিতা নতুন সক্ষমতা তৈরিতে বড় ভূমিকা পালন করবে।