পৃথিবী থেকে ১১০ আলোকবর্ষের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার তারা আছে, তাই এর থেকে বাছাই করার মতো অনেক বিকল্পই আছে বিজ্ঞানীদের হাতে।
Published : 21 Apr 2024, 06:44 PM
১৯০৩ সালে প্রথমবারের মতো সফলভাবে স্ব-চালিত বিমান তৈরির কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘রাইট ব্রাদার্স’।
এর মাধ্যমে ট্রান্সআটলান্টিক ফ্লাইট, সুপারসনিক ফ্লাইট এমনকি সৌরজগতের সম্ভাব্য তত্ত্বানুসন্ধানের পথ দেখিয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন তারা।
অজানার পানে অভিযানের সেই ধারাবাহিকতা এখন গিয়ে ঠেকেছে মঙ্গলে মানুষ পাঠানো আর মহাকাশের তারা খোঁজায়।
এই সময়ে বড় প্রশ্ন হলো, পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশী তারাগুলো খোঁজার নির্ভরযোগ্য ও সবচেয়ে কার্যকর উপায় কী?
পৃথিবী থেকে ১১০ আলোকবর্ষের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার তারা আছে, তাই এর থেকে বাছাই করার মতো অনেক বিকল্পই আছে বিজ্ঞানীদের হাতে।
শুধু তারাই নয়, আমাদের সৌরজগতের বাইরে এমন অনেক গ্রহ আছে, যা নিয়ে গবেষণার সম্ভাবনা অপার। ১৯৯২ সালে প্রথম এক্সোপ্ল্যানেট (সৌরজগতের বাইরের গ্রহ) সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার পর থেকেই পৃথিবীর দূরবর্তী বিভিন্ন তারার আশপাশে পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য বিভিন্ন গ্রহ নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে আসছেন বিজ্ঞানীরা।
এখন পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি এক্সোপ্ল্যানেটের অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর মানুষ তারাগুলোতে পৌঁছানোর সক্ষমতা অর্জনের আগে এদের ওপর মনোযোগ দেওয়া জরুরী বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
বিগত কয়েক বছরে এ বিষয়ে বেশ কিছু ধারণা ও প্রযুক্তির প্রস্তাবনা এলেও পৃথিবীর নিকটতম তারার সিস্টেম ‘প্রক্সিমা সেন্টোরি’ এখনও নাগালের বাইরে।
সম্প্রতি ‘টেকনিশে ইউনিভার্সিটি মুনচেন (টিইউএম)’-এর অধ্যাপক জোহানেস লেবার্ট একটি থিসিস প্রকাশ করেছেন, যেখানে আন্তঃনাক্ষত্রিক অনুসন্ধান ও প্রক্সিমা সেন্টোরি সম্পর্কে প্রচলিত ধারণার ভিত্তিতে একটি কৌশল তৈরির চেষ্টা করেছেন তিনি।
এক্ষেত্রে লেবার্ট অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বিভিন্ন এমন এক্সোপ্ল্যানেট অনুসন্ধান থেকে, যেখানে বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত উভয়ক্ষেত্রেই আন্তঃনাক্ষত্রিক গবেষণা চালানোর সম্ভাবনা আছে।
লেবার্ট শুধু বিভিন্ন প্রযুক্তিই নয়, বরং এর ফলাফলগুলোও পরীক্ষা করে দেখেছেন।
এ থিসিসে দুটি মূল লক্ষ্যমাত্রায় মনোযোগ দেওয়া হয়েছে, যার একটি হল মিশনের সময়কাল। আর অন্যটি এর থেকে প্রাপ্ত ফলাফল।
এক্ষেত্রে একাধিক পদ্ধতি অবলম্বনের বিষয়টি বিবেচনা করছেন লেবার্ট, যেখানে ব্যবহার করা যেতে পারে বেশ কয়েকটি এমন নভোযান, যেগুলো আর পৃথিবীতে ফিরে ফিরে না এসে বিভিন্ন তারার খোঁজ চালিয়ে যায়। এতে করে কোনও মিশন পরিচালনা করলে তার সাফল্যের সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে নোরিজ।
অবশেষে, এ ধরনের বেশিরভাগ মিশনই যেন সফল হয়, তা নিশ্চিত করার উপায় খুঁজে দেখছেন লেবার্ট, যেটিকে তিনি সংক্ষেপে আখ্যা দিয়েছেন ‘বাই-অবজেকটিভ মাল্টি-ভেহিকল ওপেন রাউটিং প্রবলেম উইথ প্রফিট’ বলে।
থিসিসটি শেষ হয়েছে বেশ কয়েকটি পরামর্শ দিয়ে। এর প্রথমটি হল, তারাগুলোর আশপাশে নির্ভরযোগ্য যাত্রাপথ ব্যবহার ও এমন মিশন পরিচালনার সংখ্যা সীমিত রাখা যাতে জ্বালানির খরচ কমিয়ে আনা যায়।