কোম্পানির কর্মীদের গ্রাহক ডেটায় অবাধ প্রবেশাধিকার দেওয়ার অভিযোগে অ্যামাজনের ডোরবেল ক্যামেরা বিভাগ রিংও জরিমানার আওতায় পড়েছে।
Published : 02 Jun 2023, 06:24 PM
কণ্ঠস্বর সহায়ক সফটওয়্যার অ্যালেক্সার মাধ্যমে শিশুদের প্রাইভেসির অধিকার লঙ্ঘন সংশ্লিষ্ট এক অভিযোগ নিষ্পত্তিতে আড়াই কোটি ডলার জরিমানা দেবে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যামাজন।
মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি)’কে এই জরিমানা দিতে রাজি হয়েছে কোম্পানিটি। এর আগে মা-বাবার অনুরোধে অ্যালেক্সার বিভিন্ন রেকর্ডিং মুছতে না পারার অভিযোগ ওঠে এই টেক জায়ান্টের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে খুঁজে পাওয়া যায়, কোম্পানি এই ধরনের স্পর্শকাতর ডেটা বেশ কয়েক বছর ধরেই সংরক্ষণ করে রেখেছে।
কোম্পানির কর্মীদের গ্রাহক ডেটায় অবাধ প্রবেশাধিকার দেওয়ার অভিযোগে অ্যামাজনের ‘ডোরবেল ক্যামেরা’ বিভাগ রিংও জরিমানার আওতায় পড়েছে।
‘ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়া’র ফেডারেল আদালতে জমা দেওয়া নথি বলছে, মার্কিন কর্তৃপক্ষকে ৫৮ লাখ ডলার জরিমানা দেবে রিং।
আলেক্সার বিষয়ে এফটিসির অভিযোগপত্র অনুসারে, অ্যামাজন ‘বিশেষভাবে ও ক্রমাগত বিভিন্ন অভিভাবক’সহ ব্যবহারকারীদের আশ্বস্ত করেছে, তারা নিজস্ব সিস্টেমের সংগৃহিত ভয়েস রেকর্ডিং মুছে ফেলা সম্ভব’।
তবে কোম্পানি আসলে এমন করেনি। অভিযোগপত্র অনুসারে, অ্যালেক্সার অ্যালগরিদম উন্নত করার লক্ষ্যে কোম্পানিটি বেশ কয়েক বছর এই ডেটা সংরক্ষিত রাখার পাশাপাশি সেগুলো বেআইনি উপায়ে ব্যবহার করেছে।
এক বিবৃতিতে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে ‘অভিভাবকদের ঠকানোর, অনির্দিষ্টকালের জন্য শিশুদের রেকর্ডিং সংরক্ষিত রাখার ও মা-বাবার মুছে ফেলার অনুরোধ এড়ানোর’ অভিযোগ তোলেন এফটিসি’র ‘বুরো অফ কনজিউমার প্রোটেকশন’ বিভাগের পরিচালক স্যামুয়েল লিভাইন।
তিনি আরও যোগ করেন, কোম্পানিটি ‘আর্থিক লাভের আশায় প্রাইভেসিকে বলি দিয়েছে’।
একইভাবে এফটিসি বলেছে, ২০১৮ সালে অ্যামাজনের কেনা রিং কোম্পানির ‘হাজার হাজার কর্মী ও ঠিকাদারকে’ গ্রাহকের ব্যক্তিগত ডেটা দেখার সুযোগ দিয়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলেছে, তারা গ্রাহকের দেখা ও ডাউনলোড করা স্পর্শকাতর ভিডিও ডেটা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে।
“এফটিসি’র তদন্ত শুরুর বেশ কয়েক বছর আগেই রিং নিজেদের সমস্যার বিস্তারিত তুলে ধরেছে।” --বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে অ্যামাজন।
তবে অভিযোগ অনুসারে, রিং ক্যামেরার নারী ব্যবহারকারীদের এমন হাজার হাজার ভিডিও রেকর্ডিং দেখেছেন কোম্পানির এক কর্মী, যেখানে তাদের বাথরুম বা বেডরুমের মতো বাসার ব্যক্তিগত জায়গাগুলোর ওপর নজরদারি করা হয়।
সংস্থাটি বলেছে, এক সহকর্মী এই কার্যক্রম লক্ষ্য করার পর কেবল একবারই ওই কর্মীকে থামানো হয়।
“প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা নিয়ে রিংয়ের এমন খামখেয়ালীতে গ্রাহকরা নজরদারি ও হয়রানির মুখে পড়েছেন।” --বলেন লিভাইন।
“এফটিসি’র এই আদেশে এটি পরিষ্কার যে, কোম্পানির আর্থিক লাভকে প্রাইভেসির চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিলে তা ধোপে টিকবে না।”
“অ্যালেক্সা ও রিং দুটো ক্ষেত্রেই আইন লঙ্ঘন নিয়ে আমরা এফটিসি’র সঙ্গে একমত না হলেও এই নিষ্পত্তির মাধ্যমে আমরা বিষয়টি ভুলে যেতে চাই।” --বলেছে অ্যামাজন।
কোম্পানি আরও যোগ করে, তারা গ্রাহকদের জন্য আরও প্রাইভেসি ফিচার উদ্ভাবন করবে।