এই ‘সিলিকন ভ্যালি সুপারস্টার’, যিনি এর আগেও একাধিক সফল স্টার্টআপ দাঁড় করিয়েছেন, তিনি চলে যাওয়াতে সম্ভবত কোম্পানিটির তহবিল সংগ্রহের ক্ষেত্রে দেখা দেবে বিশাল এক শূন্যতা।
Published : 18 Nov 2023, 04:45 PM
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক বিছুই করতে পারে। এর মাধ্যমে স্রেফ লিখিত নির্দেশনা থেকে প্রায় হুবহু মানুষের মত ছবি তৈরিও এরইমধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তবে এই প্রযুক্তির যদি কোনো আইকনিক চেহারা থেকে থাকে তবে তার নাম স্যাম অল্টম্যান।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই আইকন বরখাস্ত হয়েছেন এ সেক্টরের শীর্ষ কোম্পানি থেকে। আর সেটা এরইমধ্যে পুরোনো খবর।
অল্টম্যান এখন ‘প্রাক্তন’।
প্রায় আট হাজার কোটি ডলার মূল্যের এই কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ বলছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পারেননি অল্টম্যান। তবে, তাকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দিষ্ট কারণ এখনো পরিষ্কার নয় বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
কোম্পানিটি কর্মীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে, অল্টম্যানকে ছাড়াও সবকিছু ‘স্বাভাবিক থাকবে’।
তবে, এই ‘সিলিকন ভ্যালি সুপারস্টার’, যিনি এর আগেও একাধিক সফল স্টার্টআপ দাঁড় করিয়েছেন, তিনি চলে যাওয়াতে সম্ভবত কোম্পানিটির তহবিল সংগ্রহের ক্ষেত্রে দেখা দেবে বিশাল এক শূন্যতা।
সফটওয়্যার কোম্পানির শুরু, সচল ও সামলে রাখতে লাগে বেশ বড় অংকের অর্থ। এরসঙ্গে প্রয়োজন হয় প্রতিভাবান প্রকৌশলী, যাদের আকর্ষণ করার জন্য লাগে জাদুকরি এক দলনেতা।
সেই জাদু ছিল অল্টম্যানের।
৩৮ বছর বয়সী অল্টম্যান ওপেনএআই-এ তার কাজের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন দুর্দান্ত। যখন পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানিতে তার ভবিষ্যতের কফিনে পেরেক ঠুকছে, তখনও, বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে’র স্যান ফ্রান্সিস্কোতে অনুষ্ঠিত এআই সন্মেলনে তাকে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মিশতে দেখা গেছে। তার পরের দিন স্যান ফ্রান্সিসকোতে চলমান এপিইসি শীর্ষ সম্মেলনে একজন শীর্ষ মেটা নির্বাহীর সঙ্গে একই প্যানেলে তাকে কথা বলতে দেখা গেছে।
শুক্রবারে এ নিয়ে ‘এক্স’-এ দেয়া এক পোস্টে অল্টম্যান বলেন, “আমি এমন প্রতিভাবানদের সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করি, সামনে কি আছে সে ব্যাপারে পরবর্তীতে আরও কিছু বলব।”
অল্টম্যান একার চেষ্টায় মাইক্রোসফট প্রধান সাত্যিয়া নাদেলাকে রাজী করাতে পেরেছিলেন হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করাতে। এর পরপরই এক লাফে কোম্পানির মূল্য দুই হাজার নয়শ কোটি ডলার থেকে প্রায় তিন গুণ বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় আট হাজার কোটি ডলারে।
অল্টম্যানের তৈরি তার নিজের ইমেজ আইটির অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অনেক প্রতিভাবান এআই প্রকৌশলীকে আকৃষ্ট করছে ওপেনএআই-তে। নিশ্চিৎ বেতন ও দুনিয়া পাল্টে দেওয়া এই প্রযুক্তির সঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি সফলভাবে গুগল, মাইক্রোসফটের মত জায়ান্ট কোম্পানি থেকে কর্মী তুলে নিয়ে এসেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির সেন্ট লুইসে বেড়ে ওঠা অল্টম্যান পরবর্তীতে স্ট্যানফোর্ডে পড়তে যান। তবে অন্যান্য ‘প্রযুক্তি প্রতিভার’ মতোই স্রেফ এক বছর পরই বেরিয়ে আসেন তিনি। ওপেনএআই-এর সঙ্গে তার কাজের পাশাপাশি তিনি এ বছরই একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে ব্যক্তি যাচাইয়ে চোখের মনি স্ক্যান করার প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে।
আইটি কােম্পানিগুলোতে অক্লান্ত পরিশ্রম করা কর্মীদের প্রভাবিত করতে অল্টম্যানের এই ‘মুনশট’ সংস্কৃতি দারুন কাজ করেছে।
“আপনি যতক্ষণ ঠিক, বেশিরভাগ মানুষ ভুল বুঝলেও সেটা দুর্বলতা নয়, শক্তি” – দুই বছর আগে এক ব্লগ পোস্টে লিখেছিলেন অল্টম্যন। “আপনি এবং ছোট সংখ্যার কিছু স্বপ্নবান মানুষ কেবল সুযোগ পায় একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ পেরোনোর।”
“নইলে এইসব বিষয় হয়তো কখনোই সমাধান হবে না।”