ইউক্রেইনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের কারণে আর্থিকভাবে এমনকি জনবল নিয়েও চাপে আছে রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘রসকসমস’।
Published : 26 Nov 2024, 02:11 PM
সম্প্রতি মহাকাশ স্টেশনে ভেড়া এক রুশ নভোযান থেকে ‘বাজে গন্ধ বের পাওয়ার’ অভিযোগ এনেছেন নভোযারীরা।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে খাবার, জ্বালানী ও অন্যান্যসহ মোট তিন টন সামগ্রী সরবরাহের এক নিয়মিত মিশন হওয়ার কথা ছিল এটা। কিন্তু গেল শনিবান রুশ কসমোনটরা যখন কার্গো যানটিতে প্রবেশ করেন, তখনই ‘খুবই বাজে গন্ধ’ পেয়ে তারা একেবারে চমকে যান।
“প্রগ্রেস’ নামের মহাকাশযানের ঢাকনা খোলার পর রসকসমস’র কসমোনটরা এর থেকে খুবই বাজে গন্ধ পেয়েছেন এমনকি এতে ছোট ছোট ফোঁটাও লক্ষ্য করেছেন, যার ফলে মহাকাশযানটির বাকি অংশে আইএসএস-এর ‘পয়েস্ক’ মডিউলের ব্যবহার বন্ধ করতে বাধ্য হন নভোচারীরা,” রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে নাসা।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটির তথ্যানুসারে, মহাকাশযানের ‘এয়ার স্ক্রাবার’ এবং দূষিত বিভিন্ন সেন্সরে বিকৃত গন্ধের ঘটনাটি পর্যবেক্ষণের পর থেকে মহাকাশ স্টেশনের গবেষণাগার থেকে ওই অংশের বাতাসের মান মনিটর করার কাজ শুরু হয়েছে।
তবে, রোববার নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে অবস্থিত ‘মিশন কন্ট্রোল’ বিভাগ নিশ্চিত করেছে, মহাকাশ স্টেশনের ভেতরে বাতাসের গুণগত মান স্বাভাবিক পর্যায়ে আছে।
এদিকে, প্রযুক্তি সাইট আর্স টেকনিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন এ মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি এ ঘটনার ভয়াবহতার বিষয়টি কিছুটা কমিয়ে বলছে। রাশিয়ান স্পেস ওয়েব-এর সংবাদকর্মী আনাতোলি জ্যাকের মতে, এর গন্ধ ‘এতই বিষাক্ত’ যে, রাশিয়ার কসমোনটরা তাৎক্ষণিকভাবেই মহাকাশযানের ঢাকনা বন্ধ করতে বাধ্য হন। বৃহস্পতিবার কাজাখস্তানের ‘বাইকনুর কসমোড্রোম’ থেকে যাত্রা শুরু করেছিল মহাকাশযানটি।
চ্যালেঞ্জের মুখে রাশিয়ার স্পেস প্রোগ্রাম
জ্যাক বলছেন, এ ঘটনার পর স্টেশনের রাশিয়া অংশে থাকা নভোচারীরা বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি একটি অতিরিক্ত ‘এয়ার-স্ক্রাবিং সিস্টেম’ও সক্রিয় করেছে। অন্যদিকে, স্টেশনের যুক্তরাষ্ট্র অংশে থাকা নাসার নভোচারী ডন পেটিট বলেছেন, তিনি এর থেকে যে গন্ধ পেয়েছেন, তা ‘স্প্রে পেইন্ট’-এর মতো কিছু একটা।
রোববার বিকালে নাসা বলেছে, এতে নভোচারীদের জন্য উদ্বেগজনক কিছু ঘটেনি। আর পয়েস্ক মডিউল ব্যবহার করে প্রগ্রেস মহাকাশযানের ঢাকনা খোলার পেছনে নভোচারীরা কাজ করছেন। পয়েস্ক একটি আকারে ছোট যন্ত্র, যা ২০০৯ সাল থেকে মহাকাশ স্টেশনের রাশিয়া অংশে থাকা চারটি ডকিং পোর্টের একটির সঙ্গে যুক্ত।
প্রগ্রেস মহাকাশযান থেকে এমন বাজে গন্ধের উদ্রেক কীভাবে ঘটল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে, মহাকাশে থাকাকালীন অবস্থায় রাশিয়ার বিভিন্ন নভোযানে এর আগে ফাটল সৃষ্টির নজির দেখা গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনা ঘটেছিল ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, যখন স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত একটি প্রগ্রেস নভোযানের কুলিং সিস্টেম নিজস্ব চাপ হারিয়ে ফেলে।
ইউক্রেইনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের কারণে আর্থিকভাবে এমনকি জনবল নিয়েও চাপে আছে রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘রসকসমস’। এ ছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মহাকাশ স্টেশনে নভোচারী ও বিভিন্ন সরঞ্জাম পাঠাতে গিয়েও বেশ কিছু কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েছে সংস্থাটি।