প্রাইভেসি সেটিংস পরিবর্তনের পর সব ধরনের অ্যাকাউন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘টিন’ অ্যাকাউন্টে পরিণত হবে, ফলে এসব অ্যাউন্ট আপনাআপনি প্রাইভেট হয়ে যাবে।
Published : 19 Sep 2024, 02:50 PM
টিনএজ ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন প্রাইভেসি সেটিংস আসছে ইনস্টাগ্রামে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি প্লাটফর্মটিতে বড় পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছে এর মালিক কোম্পানি মেটা।
এই পদক্ষেপ তরুণদের অনলাইনে দেখা ক্ষতিকর কনটেন্টের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেইসবুকের মালিক কোম্পানি মেটার একটি প্রচেষ্টা বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।
১৩ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সীদের অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতি দেয় ইনস্টাগ্রাম। তবে প্রাইভেসি সেটিংস পরিবর্তনের পর সব ধরনের অ্যাকাউন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ‘টিন’ অ্যাকাউন্টে পরিণত হবে, ফলে এসব অ্যাকাউন্ট আপনাআপনি প্রাইভেট হয়ে যাবে।
ব্যবহারকারীরা অনুসরণ করেন বা এরইমধ্যে তাদের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কেবল এমন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই বার্তা পাঠানো ও ট্যাগ করা যাবে এসব টিন অ্যাকাউন্টে। একইসঙ্গে বিভিন্ন সংবেদনশীল কনটেন্ট সবচেয়ে বেশি সীমিতও করা হবে এসব অ্যাকাউন্টে।
নতুন প্রাইভেসি সেটিংসের আওতায় কমেন্ট ও সরাসরি বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে আপত্তিকর শব্দ ও বিভিন্ন বাক্যকে ফিল্টার করবে ইনস্টাগ্রাম। এমনকি প্রতিদিন ৬০ মিনিটের পর অ্যাপটি ছেড়ে যেতে হবে বলেও নোটিফিকেশন পাবে টিন ব্যবহারকারীরা।
রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে ‘স্লিপ মোড’ও চালু হয়ে যাবে প্লাটফর্মটিতে, যা রাতারাতি নোটিফিকেশন মিউট করে ডিফল্ট মেসেজ বা ইনবক্সে অটো রিপ্লাই পাঠাবে।
১৬ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীরা ডিফল্ট সেটিংস পরিবর্তন করতে চাইলে তাদের অভিভাবকের অনুমতি লাগবে। তবে ১৬ ও ১৭ বছর বয়সীরা অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবেন।
সন্তানরা কাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে তা পর্যবেক্ষণ করতে ও ইনস্টাগ্রামের ব্যবহার সীমিত করার ক্ষেত্রে সেটিংসের একটি স্যুটও অভিভাবকদের জন্য রেখেছে মেটা।
মেটা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার শনাক্ত হওয়া ব্যবহারকারীদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ৬০ দিনের মধ্যে টিন অ্যাকাউন্টে পরিবর্তিত হবে এবং এই বছরের শেষ দিকে এই পরিবর্তন আসবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে।
বাকি বিশ্ব এই পরিবর্তিত অ্যাকাউন্ট চালু হতে দেখবে জানুয়ারি থেকে।
ইনস্টাগ্রামের এই পরিবর্তনকে ‘সঠিক দিকে একটি পদক্ষেপ’ বলে বর্ণনা করেছে যুক্তরাজ্যের কমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অফকম’।
তবে সংস্থাটি এ-ও বলেছে, আগামী বছরের শুরুতে অনলাইন নিরাপত্তা আইন কার্যকর শুরু হওয়ার পর থেকে এসব প্ল্যাটফর্মকে ‘নিজেদের ব্যবহারকারীদের বিশেষ করে শিশুদের সুরক্ষার জন্য আরও অনেক কিছু করতে হবে’।
“আমাদের এনফোর্সমেন্ট ক্ষমতার সম্পূর্ণ পরিধি ব্যবহার করে যে কোনও কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা দ্বিধা করব না,” বলেছেন অফকম-এর অনলাইন নিরাপত্তা তদারকী পরিচালক রিচার্ড রনকা।
এরইমধ্যে নিজেদের বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে তরুণদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হচ্ছে তা নিয়ে একাধিক মামলার মুখোমুখি হয়েছে মেটা। কেউ কেউ এমনও দাবি করেছেন, এই প্রযুক্তিটি আসক্তিমূলক ও ক্ষতিকারক জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে এমন অবস্থায় রেখেছে এই সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট।
অ্যাকাউন্টের ওপর মেটার এই নতুন বিধিনিষেধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষা শুরু হবে আগামী বছরের শুরুর দিকে।