লিসা পিসানোর হার্ট ও কিডনি ফেইলরের কারণে তিনি প্রচলিত ট্রান্সপ্ল্যান্ট চিকিৎসা সেবা নিতে ব্যর্থ হন।
Published : 26 Apr 2024, 10:34 AM
প্রথমবারের মতো একজন নারীর দেহে সফলভাবে শূকরের কিডনি বসিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা।
লিসা পিসানো নামে মার্কিন নাগরিক ওই নারীর দেহে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি যান্ত্রিক হার্ট পাম্পও বসানো হয়েছে।
এর আগে হার্ট ও কিডনি ফেইলরের কারণে প্রচলিত ট্রান্সপ্ল্যান্ট চিকিৎসা সেবা নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন ৫৪ বছর বয়সী পিসানো।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বের প্রথম নারী ও কেবল দ্বিতীয় রোগী হিসেবে নিজ দেহে শুকরের ‘জেনেটিকালি-মডিফাইড’ কিডনি বসানোর ‘সুযোগ নিয়েছেন’ নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত এই নারী।
এর আগে নিজের হৃদস্পন্দনকে চলমান রাখতে নিউ ইয়র্কের ‘এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউট’-এর চিকিৎসকদের যান্ত্রিক পাম্প বসানোর অনুমতি দিয়েছিলেন পিসানো, যা বিশ্বে প্রথম এমন নজির। এর কিছুদিন পর নিজ দেহে শুকরের কিডনিও বসানোর অনুমতি দেন তিনি।
পিসানো বলেছেন, “নিজের জীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে ছিলাম। আমি শুধু একটি সুযোগ নিয়েছি।”
“সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হতো, যদি এটা আমার ওপর কাজ না করতো। তবে সে অভিজ্ঞতাও অন্য কারও কাজে লাগতে পারত ও পরবর্তীতে অন্যদের জন্য সহায়ক হতে পারত।”
পিসানোর স্বামী টড বলেন, “এ অস্ত্রোপচারের পর আমি আমার স্ত্রীকে আবারও হাসতে দেখলাম।”
এদিকে, অন্যান্য ট্রান্সপ্লান্ট বিশেষজ্ঞও পিসানোর শরীরের অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন, এমন তথ্য মিলেছে। আর চিকিৎসকদের দাবি, পিসানো খুব ভালোভাবেই সুস্থ হয়ে উঠছেন।
এ বিষয়ে ‘এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউট’-এর পরিচালক ড. রবার্ট মন্টেগোমারি বলেন, পিসানোর প্রস্রাব শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অপারেশন রুম উল্লাসে মেতে উঠেছিল।
অস্ত্রোপচারের প্রাথমিক ফলাফল নিয়ে মন্টেগোমারি বলেছেন, “এ অর্জন যুগান্তকারী”।
তবে পিসানোর হার্ট পাম্প ইমপ্লান্ট করেছেন ‘এনওয়াইইউ’র কার্ডিয়াক সার্জন ড. নাদের মোয়াজামি। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “আমরা এখনও ঝুঁকি থেকে বের হতে পারিনি।”
পিসানোর এই দুটি অস্ত্রোপচার ঘটেছে আট দিনের মধ্যে, যেখানে জরুরিভাবে অনুমতি নিতে হয়েছে মার্কিন সংস্থা ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রান্সপ্ল্যান্টের চাহিদা আছে এক লাখের বেশি রোগীর, যেখানে বেশিরভাগেরই কিডনি প্রয়োজন। তবে, হাজার হাজার রোগী কেবল অপেক্ষাতেই মারা যাচ্ছেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে স্কাই।
এ খাতে দান করে দেওয়া অঙ্গের ঘাটতি পূরণে বেশ কিছু বায়োটেক কোম্পানি জেনেটিক উপায়ে শূকর মডিফাই করছে যাতে শূকরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মানুষের মতো হওয়ার পাশাপাশি মানুষের ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে সেগুলো মানিয়ে যেতে পারে।
প্রাণীর অঙ্গ মানুষের ওপর প্রতিস্থাপনের বিষয়টি বাস্তবে পরিণত করার প্রচেষ্টা পিসানোর এ ঘটনাটি।