যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই তিন দেশের ‘বিশেষ ভৌগলিক অবস্থানের’ সুযোগ নিয়ে ‘ডিপ স্পেস অ্যাডভান্স রেডার কেপাবিলিটি (ডার্ক)’ নামের প্রকল্পটি গোটা বিশ্বে কভারেজ দিতে পারবে।
Published : 03 Dec 2023, 04:24 PM
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রেডারের সহায়তায় মহাকাশের উড়ন্ত বস্তু শনাক্ত করার লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া।
নতুন এ চুক্তি তিন দেশের মধ্যে চলমান ‘আউকুস’ নামের নিরাপত্তা প্রকল্পের অংশ। আর এ চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় তিন রেডারের নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে।
স্কাই নিউজ বলছে, তিন দেশের স্যাটেলাইটের সুরক্ষার পাশাপাশি মহাকাশে উড়ন্তু বিভিন্ন উপগ্রহ ও মহাকাশযানের বিষয়ে তথ্য পাওয়া এ চুক্তির লক্ষ্য।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, রেডারগুলো পুরোপুরি চালু হবে ২০৩০ সাল নাগাদ। এতে ব্যবহৃত প্রযুক্তির সহায়তায় পৃথিবী থেকে প্রায় সাড়ে ৩৫ হাজার কিলোমিটার দূরের বস্তুও শনাক্ত করা যাবে।
এ দূরত্ব পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বের ১০ শতাংশ হলেও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের দূরত্বের তুলনায় (৪০২ কিলোমিটার) অনেক বেশি।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই তিন দেশের ‘বিশেষ ভৌগলিক অবস্থানের’ সুবিধা নিয়ে ‘ডিপ স্পেস অ্যাডভান্স রেডার কেপাবিলিটি (ডার্ক)’ নামের প্রকল্পটি গোটা বিশ্বে কভারেজ দিতে পারবে। সামরিক ও বেসামরিক মহাকাশ যোগাযোগের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ঝুঁকি শনাক্ত করার বিষয়টিও এর মধ্যে রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের রেডারটি ওয়েলসের দক্ষিণ পশ্চিমাংশে পেমব্রোকশায়ার কাউন্টির কাউডার ব্যারাকে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ দশক শেষ হওয়ার আগেই রেডারটি চালু হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া অংশে রেডারের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।
‘ব্রিটিশ আর্মি সিগন্যাল রেজিমেন্ট’-এর একটি আবাসস্থল হল কাউডার ব্যারাক। স্কাই নিউজ বলছে, ২০২৮ সাল নাগাদ ওই ব্যারাক সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং এলাকার পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়াদি পর্যালোচনা করার পর।
মন্ত্রণালয়ের দাবি, ডার্ক প্রকল্পের জন্য এ সামরিক ঘাঁটি চালু রাখলে তাতে স্থানীয় অর্থনীতিও লাভবান হবে। নির্মাণাধীন পর্যায়ে স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি শখানেক লোকের দীর্ঘমেয়াদী চাকরির সুযোগ মিলবে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে ‘প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মহাকাশ যুদ্ধের ঝুঁকিও বাড়ছে’। তাই যুক্তরাজ্য ও মিত্র দেশগুলোকে এর ‘উন্নত সক্ষমতা’ নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে হবে।
“বৈশ্বিক রেডার নেটওয়ার্ক নিয়ে আজকের এ ত্রিপক্ষীয় ঘোষণা সে কাজই করবে। আর এতে যুক্তরাজ্যও মহাকাশের বিভিন্ন বস্তু শনাক্ত ও ট্র্যাক করার ক্ষমতা পাবে।”
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, মহাকাশ কক্ষপথে বস্তু শনাক্ত করার ক্ষেত্রে প্রচলিত রেডারগুলোর চেয়ে নতুন রেডারের নির্ভুলতা ও ট্র্যাকিংয়ের সক্ষমতা অনেক বেশি থাকবে।
এছাড়া ২৪ ঘণ্টা আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা রাখবে এটি। আর তাতে স্থল, আকাশ ও নৌ– তিন বাহিনীই লাভবান হবে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে স্কাই নিউজ।