একটা সময় জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়া বলতে ছিল কেবল ফেইসবুক। তবে, এখন ফেইসবুক থেকে ইনস্টাগ্রাম, এক্স (পূর্বে টুইটার) থেকে থ্রেডস-এর মতো সোশাল মিডিয়া অ্যাপের লম্বা তালিকা রয়েছে।
Published : 03 Jul 2024, 03:27 PM
স্মার্টফোন বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। এরই ধারাবাহিকতায়, সোশাল প্ল্যাটফর্মে আসক্তি বর্তমানে প্রকট সমস্যায় রূপ নিয়েছে।
অনেকে চাইলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে লাগাম টানতে পারছেন না। তারা চাইলে জেনে নিতে পারেন সোশাল প্ল্যাটফর্ম এড়ানোর কিছু টিপস।
হোম স্ক্রিন থেকে অ্যাপ সরিয়ে রাখা
প্রথমেই ফোনের হোম স্ক্রিন থেকে সোশাল মিডিয়া অ্যাপগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। এর পেছনে কারণও রয়েছে।
অনেক সময়ই দরকারি কাজের জন্য ফোন হাতে নিলেও কোনো সোশাল মিডিয়া অ্যাপ চালু করে ফেলার ঘটনা ঘটে। এতে কাজের কাজ তো হয়ই না, উল্টো খরচ হয়ে যায় বেশ কিছু সময়।
সম্ভবত এসব অ্যাপ আইকনের নির্দিষ্ট একটি আবেদন রয়েছে, যা মানুষকে আকর্ষণ করে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তিসাইট হাও-টু গিক।
এ সোশাল মিডিয়া অ্যাপগুলো হোম স্ক্রিনে না থাকলে, সেগুলো চালু করার সম্ভাবনা কমে যাবে। ফলে, কাজের উদ্দেশ্যে ফোন হাতে নিয়েছিলেন সেটির ওপরেই বাড়তি নজর দিতে পারবেন।
নির্দিষ্ট সোশাল মিডিয়া অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ করুন
বার বার সোশাল মিডিয়া খুলে দেখার অন্যতম বড় কারণ হল নোটিফিকেশন। কোনো বন্ধু নতুন ছবি পোস্ট করেছে কিংবা প্রিয় পেইজ নতুন একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, এমন বিভিন্ন নোটিফিকেশন মানুষকে আকর্ষণ করে।
কেবল একটি নোটিফিকেশন দেখার নামে কয়েক ঘণ্টাও সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে ফেলেন কেউ কেউ।
এটি এড়ানোর জন্য সোশাল মিডিয়া অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখুন। এতে অ্যাপ থেকে কোনো নোটিফিকেশন আসবে না, এবং সোশাল মিডিয়া ব্যবহারও কিছুটা কমে আসবে।
অপ্রয়োজনীয় সোশাল মিডিয়া অ্যাপ মুছে ফেলুন
একটা সময় জনপ্রিয় সোশাল মিডিয়া বলতে ছিল কেবল ফেইসবুক। তবে, এখন ফেইসবুক থেকে ইনস্টাগ্রাম, এক্স (পূর্বে টুইটার) থেকে থ্রেডস-এর মতো সোশাল মিডিয়া অ্যাপের লম্বা তালিকা রয়েছে।
আর কারো ফোনে যত বেশি সোশাল মিডিয়া অ্যাপ থাকবে, তার কাজে ব্যাঘাত ঘটার তত বেশি সম্ভাবনাও থাকবে।
উদাহরণ হিসেবে, কেউ ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতে করতে, ফেইসবুকে চলে যেতে পারেন, সেখান থেকে বন্ধুর মেসেজের উত্তর দিতে স্ন্যাপচ্যাট চালু করতে পারেন। এভাবে অনেক দরকারি সময় কেটে যেতে পারে সোশাল মিডিয়াতেই।
এমন পরিস্থিতি এড়াতে, যেসব অ্যাপ একেবারেই কম ব্যবহার করেন সেগুলো মুছে ফেলুন। উদাহরণ হিসেবে, কারো বেশিরভাগ বন্ধু যদি ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে, তবে শুধু ইনস্টাগ্রাম রেখে বাকি অ্যাপগুলো ডিলিট করে দিতে পারেন।
‘স্ক্রিন টাইম’ ফিচার ব্যবহার করুন
অ্যান্ড্রয়েড ও আইওয়এস, উভয় ক্ষেত্রেই স্ক্রিন টাইম ফিচার রয়েছে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাপগুলোতে ব্যয় করা সময় কমাতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
আইফোনে স্ক্রিন টাইম ফিচার চালু করার জন্য সেটিংস-এ যান, ‘স্ক্রিন টাইম’ অপশনে চাপ দিন ও ‘অ্যাপ লিমিটস’ অপশনটি বেছে নিন।
এরপরে ‘অ্যাড লিমিট’ অপশনটি বেছে নিন ও ‘সোশাল’ ক্যাটেগরিতে চাপ দিন। যে যে সোশাল মিডিয়া অ্যাপে সময়সীমা যোগ করতে চান সেটি বেছে নিন, ও ‘নেক্সট’ অপশনে চাপ দিন। এবারে নিজের পছন্দ অনুসারে একটি সময়সীমা বেছে নিন ও ‘ব্লক অ্যাট এন্ড অফ লিমিট’ অপশনে চাপ দিন। এরপরে ‘অ্যাড’ অপশন বেছে নিলেই স্ক্রিন টাইম লিমিট ফিচার চালু হয়ে যাবে।
অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে টাইম লিমিট অ্যাপ ব্যবহারের জন্য ‘ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং’ অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। এ অ্যাপটি বেশিরভাগ অ্যান্ড্রয়েড ফোনেই আগে থেকে ইনস্টল করা থাকে। আর এটি খুঁজে না পেলে প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে নিন।
প্রথমে অ্যান্ড্রয়েড এর সেটিংস মেনুতে যান ও ‘ডিজিটাল ওয়েলবিয়িং অ্যান্ড প্যারেন্টাল কন্ট্রোলস’ অপশনটি বেছে নিন। এরপরে ‘ডেইলি টাইমার’ অপশনে চাপ দিন। এবারে প্রতিদিন নির্দিষ্ট অ্যাপে কতটা সময় দিতে চান সেটি বেছে নিন।
পরিবর্তনটি নিশ্চিত করতে ‘ওকে’ অপশনে ক্লিক করুন। সময়সীমা শেষ হলেই অ্যাপটি আর ব্যবহার করতে পারবেন না।
অফলাইনে বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান
হঠাৎ করেই সোশাল মিডিয়া অ্যাপ ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হল, মানুষ নিজেদের অনলাইন জগতে আটকে রাখছে। বেশিরভাগ মানুষ এখন অনলাইনে বন্ধু তৈরি করছে। আর ভিডিও বা টেক্সট-এর মতো অনলাইন মাধ্যমেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বিষয়টি কেবল সামাজিক দক্ষতাই না, অনেক সময় স্বাস্থেরও ক্ষতি করতে পারে বলে লিখেছে হাও-টু গিক।
স্মার্টফোনে ঘন ঘন সোশাল মিডিয়া ব্যবহার, দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা চোখের ক্ষতি করতে পারে। এ ছাড়া, অনেক গবেষণায় দেখা গেছে স্মার্টফোন ও সোশাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষের মনোযোগ কমাতে পারে।
এ ধরনের সমস্যা এড়াতে, বন্ধুদের সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ না করে, সামনাসামনি দেখা করুন ও সময় কাটান। এ ছাড়া, বন্ধুদের রিলস ও মিমস পাঠানোতে আটকে না থেকে এমন কাজ করা উচিত যা শরীর ও মন ভালো রাখবে।