‘আমরা বন্ধুর মতো’, রোনালদোকে নিয়ে কোচ সান্তোস

শুরুর একাদশে জায়গা হারিয়ে কোনো সমস্যা করেনি রোনালদো, বললেন পর্তুগাল কোচ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2022, 10:16 AM
Updated : 7 Dec 2022, 10:16 AM

পর্তুগাল কোচের সঙ্গে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর সম্পর্কে ‘ফাটল ধরা’ নিয়ে চলছে আলোচনা। সুইজারল্যান্ড ম্যাচে শুরুর একাদশে এই তারকাকে না রেখে সেখানে বাড়তি মাত্রা যোগ করেন কোচ ফের্নান্দো সান্তোস। তবে ম্যাচের পর তিনি বললেন, তার ও রোনালদোর মধ্যে সম্পর্কটা বন্ধুর মতো আর সেখানে কোনো সমস্যা নেই।

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মঙ্গলবার মুখোমুখি হয় পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ড। রোনালদোকে ছাড়া খেলতে নেমে দুর্দান্ত ফুটবল খেলে পর্তুগিজরা। ৬-১ গোলে উড়িয়ে দেয় সুইসদের।

চলতি মৌসুমে শুরু থেকেই সময়টা ভালো যাচ্ছে না রোনালদোর। যেন বয়সের ভার জেঁকে বসেছে। সাবেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেও মৌসুমের প্রথম থেকে শুরুর একাদশে জায়গা হারান ৩৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।

বিশ্বকাপের শুরুতে যদিও অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ডের ওপর ভরসা রাখেন সান্তোস। আসর শুরুর ম্যাচে ঘানার বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে জালের দেখাও পান রোনালদো। গড়েন প্রথম ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপের পাঁচ আসরে গোল করার রেকর্ড। কিন্তু তার পারফরম্যান্স ছিল না সন্তোষজনক।

এর মধ্যেই তার সঙ্গে কোচের মনোমালিন্যের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে হারের ম্যাচে ৬৫তম মিনিটে তাকে তুলে নেওয়ায় ভীষণ হতাশ দেখাচ্ছিল রোনালদোকে। বিড়বিড় করে কিছু একটা বলছিলেন তিনি। ক্যামেরোয় যতটুকু ধরা পড়ে, তাতে মনে হয় রোনালদো বলছিলেন, “আমাকে তুলে নেওয়ার জন্য যেন অস্থির হয়ে গেছে।” 

সবকিছু মিলেই তার আচরণ ছিল আপত্তিকর। সুইজারল্যান্ড ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে রোনালদোর ওই প্রতিক্রিয়া ভালো না লাগার কথা সরাসরিই বলেন সান্তোস। পরে তাকে সুইসদের বিপক্ষে শুরুর একাদশে না রাখার সিদ্ধান্তে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, কোচ ও রোনালদোর সম্পর্কেও তাহলে কি ফাটল ধরল?

তবে ২০১৪ সালে পর্তুগালের দায়িত্ব নেওয়া সান্তোস ম্যাচ শেষে বললেন, কোনো সমস্যা নেই। আর বেঞ্চে থাকা নিয়ে রোনালদোও কোনো প্রশ্ন করেনি।

“আমাদের অধিনায়ককে নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। আমার অনেক বছর ধরেই বন্ধুর মতো। ম্যাচের আগে আমরা কথা বলেছি এবং তার আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না। সে সবার জন্য উদাহরণ।”

তাকে ৭৩ মিনিটে মাঠে নামান সান্তোস। একবার জালের দেখাও পান রোনালদো, তবে গোলটি হয়নি অফসাইডের কারণে।

রোনালদোর জায়গায় শুরুর একাদশে সুযোগ পেয়ে রেকর্ড গড়েন তরুণ গনসালো রামোস। ২০০২ সালে জার্মানির মিরোস্লাভ ক্লোসার পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে প্রথমবার শুরুর একাদশে নেমে হ্যাটট্রিক করেন বেনফিকার এই ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয় পর্তুগিজ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে হ্যাটট্রিক করে বসেন ইউজেবিওর পাশে।

শুরু থেকে খেললে তিনটি গোল করতেন রোনালদোও, ম্যাচ শেষে বলেন তার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক সতীর্থ ব্রুনো ফের্নান্দেস। সঙ্গে রোনালদোকে নিয়ে মানুষের নানা কথা নিয়ে হতাশাও প্রকাশ করেন পর্তুগাল মিডফিল্ডার।  

“রোনালদোকে নিয়েই আমরা প্রথম দুই ম্যাচ জিতেছি। এই ম্যাচে (শুরু থেকে) খেললে সেও তিনটি গোল করতে পারত। ক্রিস্তিয়ানো বেঞ্চে থাকার পরও সবাই তাকে নিয়ে কথা বলেছে।”

“ক্রিস্তিয়ানো যখন খেলে এবং দল জেতে, সেটা নিয়ে কেউ কথা বলে না। তবে ক্রিস্তিয়ানো খেললে এবং দল হারলে…”

আগামী শনিবার মরক্কোর বিপক্ষে কোয়ার্টার-ফাইনালে মুখোমুখি হবে পর্তুগাল।