এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকসের হাই জাম্পে ব্রোঞ্জ জয়ী এই অ্যাথলেট হতে চান দক্ষিণ এশিয়ার সেরা।
Published : 21 Feb 2024, 05:03 PM
একটি সাফল্য আরেকটি অর্জনের পথ দেখায়, আরও বড় স্বপ্ন দেখার সাহস দেয়। মাহফুজুর রহমানের কথাগুলোও তেমন-ই। এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে হাই জাম্পে ব্রোঞ্জ জয়ী এই অ্যাথলেটের এবারের লক্ষ্য এই ইভেন্টে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হওয়ার।
দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর এসএ গেমসে রুপা জয়ের অভিজ্ঞতা আছে মাহফুজুরের। ২০১৯ সালে নেপালের কাঠমান্ডু-পোখারায় ২ দশমিক ১৬ মিটার লাফিয়ে রুপা পেয়েছিলেন তিনি। আর সম্প্রতি ইরানের তেহরানে ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি ব্রোঞ্জ জিতেন ২ দশমিক ১৫ মিটার উচুঁতে লাফিয়ে।
নেপালের ওই আসরেই ২ দশমিক ২১ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছিলেন ভারতের অনিল কুশারে। ইরান থেকে দেশে ফিরে বুধবার অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনে এসে অনিলের রেকর্ড ভাঙার লক্ষ্য জানালেন মাহফুজুর।
“এসএ গেমসে রুপার পর এটি আমার দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক পদক। এশিয়ার মঞ্চে প্রথমবারের মতো আমি পদক অর্জন করতে পেরে খুশি। এখন কিন্তু থ্রো-ইভেন্ট, জাম্প ইভেন্টেও ফোকাস করা হচ্ছে। এসএ গেমসে সম্ভবনার ভিত্তিতে বিভিন্ন আসরে দল পাঠানো হচ্ছে। আমার চাওয়া উন্নত প্রশিক্ষণ। সেটা পেলে হয়তো আরও ভালো করতে পারব। দক্ষিণ এশিয়ার রেকর্ড ২ দশমিক ২১ মিটার; সেটা অতিক্রম করার টার্গেট আছে আমার।”
এদিন মাহফুজুর ও ৪০০ মিটারে রুপা জেতা জহির রায়হানকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ফেডারেশনের কর্মকর্তারা। পথচলায় পাশে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বিকেএসপি, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনসহ সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জহির জানালেন মাত্র দশমিক ১৫ সেকেন্ডের ব্যবধান ঘোচাতে না পারার কারণ।
“ইনডোর টার্ফে এই প্রথম অনুশীলন করলাম। আমার বাম দিক দিয়ে ইরানি স্প্রিন্টার বেরিয়ে গিয়ে সোনা জিতেছেন। এখানে আমার অভিজ্ঞতার ঘাটতিও ছিল। তাছাড়া শেষ দিকে এসে এনার্জি লেভেল অনেক নেমে গিয়েছিল।”
“৪০০ মিটার ট্র্যাকে দৌড়ানো অনেক সহজ। ২০০ মিটার ট্র্যাকে দুই ল্যাপ দিতে হয়েছে। এটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। এটা আমি ঘাসে ও টার্ফে নিজের মতো করে চেষ্টা করেছি। সেটা কাজে এসেছে।”
গতবার ৬০ মিটারে সোনা জিতেছিলেন ইমরানুর রহমান। লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি এই অ্যাথলেট এবার পেরে ওঠেননি। ফাইনালে হন চতুর্থ। তবে ইনডোর অ্যাথলেটিকসে ইমরানুরই পথ দেখিয়েছেন বলে তার প্রশংসা করলেন জহির।
“ইমরান ভাইকে অনেক ধন্যবাদ, তিনি প্রথম দেশকে স্বর্ণ এনে দিয়েছিলেন। তিনি আমাদের উৎসাহিত করেছেন। তাকে দেখে আমরাও নিজেদের প্রস্তুতে করেছি। সঠিক অনুশীলন ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হলে আমরা আরও বড় মঞ্চে ভালো করতে পারব।”
“প্রতিবেশী দেশ ভারত কিন্তু ১০০ মিটার ইভেন্টে সীমাবদ্ধ নয়। যে ইভেন্টে ভালো করার সুযোগ থাকছে, সেখানেই তারা ফোকাস করছে। বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনও এখন অন্যান্য ইভেন্টে দৃষ্টি দিয়েছে। থ্রো-ইভেন্টেও দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের জন্য ভালো দিক।”
অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রকিব মন্টুও মানছেন জহির-মাহফুজুরদের জন্য অনেক কিছু করণীয় আছে তাদের। সবার সহযোগিতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টিও আশা করছেন তিনি।
“আমাদের অ্যাথলেটদের এ সাফল্যর পর মন্ত্রণালয় থেকে কেউ যোগাযোগ করেছেন? আমরা একটা চ্যালেঞ্জ জয় করে এসেছি। সকল জায়গা থেকেই উৎসাহ থাকা উচিত। দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ কিন্তু হাতি পোষার মতো অবস্থা। এটা মাদার গেম, এখানে ক্রীড়াবিদ তুলে আনলে তার ইতিবাচক প্রভাব সকল খেলায় থাকবে।”
“আমরা দেশের বাইরে অ্যাথলেটদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার চেষ্টায় আছি। সাফল্যর পর অ্যাথলেটরা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাচ্ছেন। আমি মনে করি, এটা খুবই ছোট একটা চাওয়া। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক ব্যস্ত। তারপরও বিষয়টি তিনি যদি জানেন, অবশ্যই সাক্ষাতের ব্যবস্থা করবেন বলে আশা করছি।”