দিনের পর দিন জুড বেলিংহ্যাম যা করে চলেছেন, রেয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তির কাছে তা অবিশ্বাস্য।
Published : 30 Nov 2023, 05:45 PM
নামের পাশ থেকে এখন টিনএজ তকমা সরেনি। চোখে-মুখে তারুণ্যের ছাপ স্পষ্ট। বয়স যে কেবলই ২০। তবে বল পায়ে জুড বেলিংহ্যাম দিনের পর দিন যা করে চলেছেন, মাঠে নিয়মিত যে পেশাদারিত্বের ছাপ রাখছেন, সত্যিই তা অবিশ্বাস্য। রেয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি তো প্রতি ম্যাচ শেষেই এই ইংলিশ মিডফিল্ডারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন।
তারপরও, এই অল্প বয়সে তার সামর্থ্য বোঝাতে কিংবদন্তি জিনেদিন জিদানের সঙ্গে তুলনা টানা হয়তো অনেকের কাছেই বেশি কিছু। আনচেলত্তিও সেই তুলনায় যেতে চাইলেন না। তবে, কথার ফাঁকে একটা জায়গায় সাবেক ফরাসি তারকার চেয়ে বেলিংহ্যামকেই এগিয়ে রাখলেন অভিজ্ঞ ইতালিয়ান কোচ।
ক্যারিয়ারে শুরু থেকেই আলো ছড়াচ্ছেন বেলিংহ্যাম। রেয়াল মাদ্রিদে নাম লেখানোর পর থেকে তার দ্যুতি যেন আরও বেড়েছে। সবশেষ সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে একটি গোল করার পাশাপাশি সতীর্থের গোলেও রাখেন অবদান।
জিওভানি সিমেওনের গোলে নাপোলি এগিয়ে যাওয়ার পরপরই দুর্দান্ত গোলে সমতা টানেন রদ্রিগো। এর একটু পরই দারুণ হেডে দলকে এগিয়ে নেন বেলিংহ্যাম। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নাপোলি আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক জাম্বো আনগিসার গোলে সমতা টানলেও রেয়ালকে আটকাতে পারেনি।
শেষ দিকে নিকো পাস ও হোসেলুর গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা। বেলিংহ্যামের পাস থেকেই শেষ গোলটি করেন হোসেলু।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে জিদানের সঙ্গে বেলিংহ্যামের তুলনা প্রসঙ্গে আনচেলত্তি বলেন, দুই প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মধ্যে তুলনা করা কঠিন।
“বেলিংহ্যামের বক্সে পজিশন নেওয়ার সামর্থ্যটা আমার নজর কাড়ে। জিদানের তা ছিল না। আর জিদানের যে ব্যক্তিগত দক্ষতা ছিল, বেলিংহ্যামের তা নেই।”
“তবে এখন আধুনিক ফুটবল। আধুনিক ফুটবলে বেলিংহ্যামের মতো শারীরিক শক্তিনির্ভর খেলোয়াড় দরকার, যে খুব দ্রুততায় মাঠের অনেকটা জায়গা কাভার করতে পারে।”
রেয়ালের জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এখন পর্যন্ত চার ম্যচ খেলে প্রতিটিতেই জালের দেখা পেয়েছেন বেলিংহ্যাম। গ্রুপ পর্বে প্রথম তিন ম্যাচে একটি করে গোল করার পর চোটের কারণে চতুর্থ রাউন্ডে খেলতে পারেননি তিনি। ফিরেই আবার পেলেন গোলের স্বাদ। বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে গত জুনে বের্নাবেউয়ে পাড়ি জমানোর পর রেয়ালের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তার মোট গোল হলো ১৬ ম্যাচে ১৫টি।
সম্প্রতি চোট কাটিয়ে ওঠা বেলিংহ্যাম যে এখনও পুরোপুরি ফিটনেস ফিরে পাননি, তার আভাস মিলল আনচেলত্তির কথায়। তবে মাঠে সেই ঘাটতি যেভাবে এই তরুণ কাটিয়ে ওঠেন, তাতেও মুগ্ধ কোচ।
“মনে হচ্ছিল, দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময়ে সে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। কাটিয়ে উঠতে সে ১০ মিনিট সময় নেয় এবং এরপর শেষের ১৫ মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেয়। এটা বিস্ময়কর। এই ক্লাবে, এই ধরনের ফুটবলে সে যে এভাবে মানিয়ে নিতে পারবে, তা হয়তো কেউ কল্পনাও করেনি।”
“সে প্রতি ম্যাচেই আমাদের অবাক করে দিচ্ছে। কেবল আমাদের নয়, সবাইকে। বেলিংহ্যাম ফুটবলের জন্য একটা উপহার। তাকে পেয়ে তার কোচ ও সতীর্থরা উচ্ছ্বসিত এবং ভক্ত-সমর্থকরাও তাকে পেয়ে খুব খুশি।”
দারুণ ছন্দে আছেন আরেক তরুণ ফরোয়ার্ড রদ্রিগোও। এই ব্রাজিলিয়ানও বেলিংহ্যামের প্রশংসায় প্রঞ্চমুখ হলেন।
“(বেলিংহ্যামের প্রশংসার জন্য) এমনকি আমি ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তার সঙ্গে খেলতে পারা আনন্দের।”