‘অভিমানে’ জাতীয় দলকে বিদায় বললেন সাফ জয়ী আনুচিং

ক্ষোভ আর হতাশায় বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন ২০ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2023, 10:43 AM
Updated : 23 Jan 2023, 10:43 AM

ঘটনা গত পরশুর। সকালেও অনুশীলন করেছেন। বিকালের টিম মিটিংয়ে ডেকে বলা হলো ব্যাগ-পত্র গুছিয়ে নাও। ক্যাম্প ছাড়তে হবে। শনিবার রাতেই উঠে পড়েন খাগড়াছড়ির বাসে। পরে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছোট্ট বার্তায় ফুটবলকে বিদায় বলে দেন আনুচিং মোগিনি। পোস্টে লেখেন-আজকের পর থেকে ফুটবলকে বিদায়। 

প্যারিস অলিম্পিকসের বাছাইয়ের বাংলাদেশ দলে জায়গা হয়নি আনুচিং ও সাজেদা খাতুনের। দুজনের বাদ পড়ার প্রসঙ্গে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের খেলায় উন্নতির ছাপ নেই আগের মতো। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপচারিতায় আনুচিং অভিমানী কণ্ঠে জানালেন, কোচের কাছ থেকে ওই মিটিংয়ে এ কথাগুলোই শুনতে চেয়েছিলেন। 

“পারফরম্যান্স ভালো না হলে বাদ পড়ব, এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। ফুটবলে এটা হয়ই। কিন্তু অনুশীলনে রানিংয়েও আমি ভালো করেছি। সকালেও অনুশীলন করলাম আর সন্ধ্যায় ডেকে নিয়ে শুধু বলা হলো ব্যাগ গুছিয়ে নাও; ক্যাম্প ছাড়তে হবে।” 

“কেন ক্যাম্প ছাড়ব, কেন বাদ দেওয়া হলো, তা নিয়ে কেউ কিছু বলল না। বাদ পড়ার কারণগুলো তারা বলতে পারত। তাহলে কোথায় উন্নতি করতে হবে, কোন দিক নিয়ে কাজ করতে হবে, সেগুলো বুঝতে পারতাম। কিন্তু তারা কোনো ব্যাখ্যা দিল না, শুধু বলে দিল চলে যাও।”

অতীত অভিজ্ঞতা থেকে এই চলে যাওয়াকে প্রস্থান বলে মেনে নিচ্ছেন ২০১৬ সাল থেকে জাতীয় দলের আক্রমণভাগে খেলা আনুচিং।

“এর আগেও এগুলোই হয়েছে। আমি কারো নাম বলতে চাই না, কিন্তু সত্যি হচ্ছে, যাদেরকে ক্যাম্প ছাড়তে বলা হয়েছে, তাদেরকে আর কখনও ফিরিয়ে আনা হয়নি। তাদের বেলায় যেটা হয়েছে, আমার বেলায়ও সেটাই হলো। তাই অবসর নিয়েছি।” 

“জীবনে স্বপ্ন ছিল ফুটবল খেলে পরিচিতি পাওয়ার, মাথা তুলে দাঁড়ানোর, পরিবারকে দেখভাল করার। সেটা কিছুটা করতে পেরেছি। কিন্তু সেই ফুটবলই আমাকে কষ্ট দিল এভাবে। অনেকে বলছেন, আমি বিয়ে, সংসার করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওগুলো নিয়ে আমার তো কোনো ভাবনাই নেই। আমার স্বপ্ন ছিল শুধু ফুটবলকে নিয়ে।” 

২০১৬ সালে প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলেন আনুচিং। ২০১৯ সালে নেপালের বিরাটনগরের আসরে খেলা হয়নি তার। সবশেষ গত সেপ্টেম্বরে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে প্রথম মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশের দলের সদস্য ছিলেন আনুচিং। 

জাতীয় দল থেকে বিদায় নিলেও ক্লাব ফুটবল চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা যেমন আছে, দোটানাও কম নয় আনুচিংয়ের। 

“শীর্ষ স্থানীয় একটি ক্লাব থেকে ফোন করেছে তাদের হয়ে খেলার জন্য। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়। বুঝতে পারছি না কি হবে? কেননা, এখন জাতীয় দলে নেই এবং আপনারা জানেন জাতীয় দলে না থাকলে কোথাও দাম থাকে না।”